রামেক দিনে শত শিশু ভর্তি, স্যালাইনের সংকট

রিমন রহমান, রাজশাহী
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৯: ৫৭

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে গত সাড়ে তিন মাসে ২ হাজার ১০৯টি শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। চলতি মাসে প্রতিদিন গড়ে ১০০ শিশু ভর্তি হচ্ছে। ফলে নিউমোনিয়ার এপিএন স্যালাইনের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ৬৫ টাকা দামের স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকায়।

এদিকে চাপ বেড়ে যাওয়ায় শিশু ওয়ার্ডগুলোর বারান্দায়ও ঠাঁই হচ্ছে না রোগীদের। অতিরিক্ত রোগীর চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সরা। আবার রোগীর স্বজনেরা পড়ছেন নানা বিড়ম্বনায়।

নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকাটি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারপাড়া বলে পরিচিত। এগুলো ঘিরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ওষুধের দোকান। সেখানকার ওষুধ ব্যবসায়ীরা বলছেন, এপিএন স্যালাইনের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে দাবি তাঁদের।

রামেক হাসপাতালের ৯, ১০ ও ২৪ নম্বর শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুদের প্রচুর ভিড়। ভর্তি হওয়া শিশুদের অভিভাবকদের কারণে ওয়ার্ডের ভেতরে পা ফেলা কঠিন। একই অবস্থা বারান্দায়ও। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা দুর্গাপুরের পালি এলাকার শিশু আকবর আলীর বাবা দেলশাদ হোসেন বলেন, ‘আমার শিশুকে ১৪ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এখন একটু ভালো আছে। প্রথম দিকে খুব খারাপ অবস্থা ছিল। চিকিৎসার জন্য স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছিল না। বাইরে থেকে কিনতে গিয়েও পাওয়া যাচ্ছিল না। ৬৫ টাকার স্যালাইন কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক জানান, কলেরা ও নিউমোনিয়ার স্যালাইনের সংকট আছে। এ কারণে বেশির ভাগ সময় বাইরে থেকে আনতে হচ্ছে রোগীর স্বজনদের। তাঁরা কেউ কেউ বাড়তি দাম দিয়ে কিনে আনছেন।

এ নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কেমিস্টস্‌ অ্যান্ড ড্রাগিস্টস্‌ সমিতির রাজশাহী শাখার সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম শামীম বলেন, স্যালাইনের চাহিদা বেড়েছে; কিন্তু কোম্পানিগুলো সরবরাহ বাড়াচ্ছে না। এ কারণে সংকট সৃষ্টি হয়েছে; কিন্তু ৬৫ টাকার স্যালাইন ১২০০ টাকায় বিক্রি হওয়া কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।

রামেক হাসপাতালের শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শাহিদা ইয়াসমিন জানান, কয়েক দিন ধরে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৩০ শিশু নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি হচ্ছে। গত অক্টোবর মাসে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৮৭৫ জন। শিশু বিভাগের চারটি ওয়ার্ডের মধ্যে এ সময়ে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচ শিশু মারা গেছে। আর গত আগস্ট থেকে চলতি নভেম্বর পর্যন্ত নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মোট রোগী ভর্তি হয়েছে ২ হাজার ১০৯ জন।

এদিকে রামেক হাসপাতালে স্যালাইনের সংকট নেই দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘শিশু রোগীর চাপ আছে ঠিক, তবে চিকিৎসা কার্যক্রম ঠিকঠাক মতো চলছে। চিকিৎসায় কোনো সমস্যা হচ্ছে বলে আমার জানা নেই।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত