Ajker Patrika

ঢলের পানিতে ফুঁসছে ব্রহ্মপুত্র রৌমারিতে পানিবন্দী মানুষ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ জুন ২০২২, ১২: ৪৭
ঢলের পানিতে ফুঁসছে ব্রহ্মপুত্র রৌমারিতে পানিবন্দী মানুষ

ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও ধরলার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে কিছুটা কমেছে তিস্তার পানি। আগামী ৪৮ ঘণ্টা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ব্রহ্মপুত্র বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবে এসব নদ-নদীর অববাহিকায় বন্যার আশঙ্কা নেই।

এ দিকে পাহাড়ি ঢলে রৌমারী উপজেলায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে দুর্গতদের মধ্যে গত চার দিনেও কোনো ধরনের ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা।

পাউবোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬ট পর্যন্ত গত ১২ ঘণ্টায় ধরলা ও তিস্তার পানি কিছুটা কমলেও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। একই সময়ে সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি ১৮ সেন্টিমিটার বেড়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা ব্রহ্মপুত্রের পানি আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে পাউবো। তবে তিস্তা ও ধরলার পানি প্রবাহ হ্রাস বৃদ্ধি হতে পারে।

জেলার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের দ্বীপচর মশালের চরের বাসিন্দা হামিদুল বলেন, ‘পানি বাড়তাছে ভাই। চরে পানি উঠতে শুরু করছে। এমনে আর দুই দিন পানি বাড়লে ঘরে ঢুইকা পড়ব।’

ঢলের পানিতে ফুঁসতে থাকায় সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নসহ ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার চরাঞ্চলগুলোতে এখন বন্যার আশঙ্কা বাড়ছে।

এ দিকে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যার কবলে পড়া জেলার রৌমারী উপজেলায় প্রায় অর্ধ লাখ মানুষ চার দিন ধরে পানিবন্দী জীবন যাপন করলেও তাঁদের কাছে এখনো কোনো ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা। জনপ্রতিনিধিদের দাবি, তাঁরা তালিকা অনুযায়ী চাহিদা দিলেও মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কোনো বরাদ্দ পাননি।

উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের পুরোনো যাদুরচর গ্রামের আব্দুর রহিম, মালেক ও নুরজামাল এবং সদর ইউনিয়নের মফিজল নামে কয়েকজন দিনমজুর জানান, কয়েক দিন ধরে এলাকা পানিবন্দী থাকায় তাঁদের হাতে কোনো কাজ নেই। ফলে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। কিন্তু গত চার দিনেও তাঁদের কাছে কোনো সহায়তা পৌঁছায়নি।

যাদুরচর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকায় পানিবন্দী মানুষের জন্য শুকনো খাবার দেওয়া জরুরি। কিন্তু এখনো সরকারিভাবে কোনো সাহায্য দেওয়া হয়নি।’

দুর্গতদের দাবির সত্যতা স্বীকার করে রৌমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আজিজুর রহমান বলেন, ‘উপজেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে দুর্গতদের জন্য ১ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার কেনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার কিংবা কাল বৃহস্পতিবার থেকে তা বিতরণ করা হবে।’

রৌমারী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশারাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘দুর্গতদের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণের জন্য তিন লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। শিগগিরই এসব খাবার বিতরণ শুরু হবে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে বৃষ্টিপাত এবং উজানে সীমান্তবর্তী ভারতীয় অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জেলায় নদনদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা পানি বৃদ্ধির পূর্বাভাস থাকলেও এসব নদনদী অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির পূর্বাভাস নেই।’

‘অতিবৃষ্টির কারণে ধরলা নদীর ডান তীরের বাঁধের কিছু কিছু স্থানে রেইন কাট (বৃষ্টির কারণে মাটি খসে পড়া) হয়েছে। আমাদের লোকজন সেগুলো মেরামতে কাজ করছে।’ বাঁধ নিয়ে স্থানীয়দের শঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে যোগ করেন পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বনশ্রীতে স্বর্ণ ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার আমিনুল ছাত্রলীগের, সুমন শ্রমিক দলের নেতা

সামরিক বাহিনীর ৮ সংস্থা ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন

থানায় থানায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের তালিকা হচ্ছে

ককটেল ফুটতেই সেলুনে লুকায় পুলিশ, রণক্ষেত্র হয় এলাকা

মসজিদে লুকিয়েও রক্ষা পেলেন না স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও তাঁর ভাই, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিল প্রতিপক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত