এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে প্রাক্‌ বাজেট সভা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২২, ০৭: ৫০
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২২, ১৩: ৫৯

আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেট খাতে রাজস্ব আদায় ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর উপায় হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ও অন্য কর্মকর্তাদের কাছে দুইটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন দেশি সিগারেট উৎপাদনকারীরা। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুমিনের সঙ্গে প্রাক বাজেট মতবিনিময় সভায় এ প্রস্তাব দেন স্থানীয় সিগারেট প্রস্তুতকারক সমিতির পক্ষে আবদুল আউয়াল মোহন। গতকাল রোববার আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (সিসিসিআই) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এই সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম। এ সময় এনবিআর সদস্য (কাস্টমস নীতি) মো. মাসুদ সাদিক, সদস্য (আয়কর নীতি) সামস উদ্দিন আহমদ, সদস্য (মূসক নীতি) জাকিয়া সুলতানা এবং চেম্বারের অন্য পরিচালকরাও উপস্থিত ছিলেন।

বিকল্প প্রস্তাব দুইটির মূল্য একটি হচ্ছে বিভাজন সংক্রান্ত পদক্ষেপ অনুসরণ করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সিগারেটের ক্ষেত্র শলাকা প্রতি দামের পার্থক্য ন্যূনতম এক টাকা রাখা। অর্থাৎ দেশি সিগারেটে প্রতি ১০ শলাকার দাম ৩৯ টাকা রাখা হলে আন্তর্জাতিক সিগারেটের সমান সংখ্যার জন্য দাম ৪৯ টাকা করা যায়। এতে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের নিম্নস্তরে মূল্য বিভাজন সংক্রান্ত পদক্ষেপ অনুসরণ করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।

অন্য প্রস্তাবটি হচ্ছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের অনুমোদিত বাজেট কাঠামো অনুযায়ী সিগারেটের বাজারে নিম্নস্তর শুধু দেশি কোম্পানির জন্য সংরক্ষণ করা। এ ক্ষেত্রে বিদেশি কোম্পানির আন্তর্জাতিক সিগারেটের যেসব ব্যান্ড বর্তমান বাজারে নিম্নস্তরে আছে সেগুলোকে মধ্যস্তরে তুলে আনা যায়। এই দুই প্রস্তাবের যেকোনো একটি বাস্তবায়ন করা হলে সিগারেট থেকে সরকারের রাজস্ব আয় বর্তমান সময়ের তুলনায় ২২ থেকে ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে বলে সভায় সুনির্দিষ্ট তথ্য উপাত্ত তুলে ধরা হয়।

আবদুল আউয়াল মোহন বলেন, এক সময় সিগারেট খাতে অরাজক ও বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজমান ছিল। শৃঙ্খলা আনতে ২০০৩ সালে স্ল্যাব প্রথা প্রবর্তন করা হয়, যাতে নিম্নস্তর শুধু দেশি কোম্পানির জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়। সেই সময়ে নিম্নস্তরে দেশি কোম্পানির বাজার হিস্যা ছিল ১০০ ভাগ। সেই সময়ে মধ্যম থেকে উচ্চস্তরে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাত করত বিদেশি কোম্পানি।

কিন্তু ২০০৮-০৯ সাল থেকে বিদেশি কোম্পানি নিম্নস্তরের বাজারে আন্তর্জাতিক নামীদামি ব্র্যান্ডগুলো এনে উৎপাদন ও বাজারজাত শুরু করলে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। অসম প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে দেশি কোম্পানিগুলোর বাজার হিস্যা কমে ১০ শতাংশের নিচে এসে দাঁড়ায়। ৯০ শতাংশ বাজারই চলে যায় বহুজাতিক বা বিদেশি বিদেশি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে। সরকার বিষয়টি বুঝে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে নিম্নস্তরে মূল্য বিভাজন করে দেশি ও আন্তর্জাতিক সিগারেটের প্রতি শলাকার দামের মধ্যে ন্যূনতম ১ টাকা পার্থক্য করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সংক্রান্ত বিশেষ আদেশও (এসআরও) জারি করে। এর পরের বছরের (২০১৮-১৯ অর্থবছরে) বাজেটে নিম্নস্তরে বাজারজাতকৃত বিদেশি কোম্পানির আন্তর্জাতিক সিগারেটের ব্র্যান্ড মধ্যম স্তরে উন্নীত এবং নিম্নস্তর শুধু দেশি কোম্পানির সিগারেটের জন্য সংরক্ষণের কথা বলা হয়। কিন্তু এসব সিদ্ধান্তের কোনোটিই বাস্তবায়িত হয়নি। যার ফলে দেশি সিগারেট কোম্পানিগুলো ক্রমাগত বাজার হারাচ্ছে, বহু দেশি কোম্পানির ব্যবসা সম্পূর্ণ হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত