এন আই মিলন, বীরগঞ্জ প্রতিনিধি
চাপাতি হাতে একজন নারী বসে আছেন মাংসের দোকানে। এ দৃশ্য দেশের অন্য কোথাও আগে কেউ দেখেছে বলে মনে হয় না। তবে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের ঝাড়বাড়ী বাজারে গেলে পাওয়া যাবে জমিলা বেগমকে (৪৯)। বড় একটি মাংসের দোকান সামলাচ্ছেন তিনি। প্রয়োজনে মাংসখণ্ডে চালাচ্ছেন চাপাতি। এলাকায় পরিচিত তিনি জমিলা কসাই নামেই।
নারীদের এ পেশায় দেখা না গেলেও জীবনসংগ্রামই এখানে টেনে এনেছে জমিলাকে। তবে তিনি এখন ভালো আছেন। শুধু নিজে নন, ১০-১২টি সংসার চলছে তাঁর ব্যবসার ওপর ভর করে। নিজের বাড়িতে গড়ে তুলেছেন ১০-১২টি গরুর একটি খামারও। নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পেয়েছেন ‘জয়িতা পদক’। সব সম্ভব হয়েছে জমিলার চাপাতির জোরে।
সরেজমিনে জানা যায়, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার আজিজনগর এলাকার জাকির হোসেন বীরগঞ্জের ঝাড়বাড়ী এলাকায় এসে পানের ব্যবসা শুরু করেন। তাঁর চার মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে জমিলা তৃতীয়। স্কুলে যাওয়া হয়নি তাঁর। ১৪ বছর বয়সে বিয়ে হয় বগুড়ার মহাস্থানগড় এলাকার রফিকুল ইসলাম ভান্ডারীর সঙ্গে। রফিকুল কসাই ছিলেন। আগের স্ত্রী বর্তমান থাকা অবস্থায় জমিলাকে বিয়ে করেন তিনি। প্রথম সন্তান জহুরুলের জন্মের কিছুদিন পর কসাই রফিকুল মাদকাসক্ত হয়ে ব্যবসা নষ্ট করে ফেলেন। ১৯৯৭ সালের দিকে রফিকুল ও জমিলা বগুড়া থেকে ঝাড়বাড়ী এলাকায় চলে এসে বাজারে আবার একটি মাংসের দোকান শুরু করেন। সে সময় দোকানে স্বামীকে সময় দিতেন জমিলা। পরিবারে ফিরে আসে শান্তি। কিন্তু বিভিন্নজনের কাছ থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা ধারদেনা করে হঠাৎ নিখোঁজ হলেন কসাই রফিকুল।
অকূলে ভাসতে থাকলেন জমিলা। নিরুপায় হয়ে ২০০০ সালে ছেলে জহুরুলকে সঙ্গে নিয়ে বাজারে মাংসের দোকান দিলেন, নাম ‘মায়ের দোয়া মাংস ভান্ডার’। নিজে হাটে গিয়ে দেখেশুনে গরু কেনেন। বাজারে এনে কেটে বিক্রি করেন। আস্তে আস্তে জমে গেল মায়ের দোয়া। ব্যবসা বাড়তে থাকে। মা-ছেলে আস্তে আস্তে শোধ দিলেন কসাই রফিকুলের ধারদেনা। বাড়ির পাশে ১১ শতক জমি কিনে বাড়ি বানালেন। ছোট পরিসরে একটি গরুর খামারও করলেন। বাড়ির সামনে একটি মুদিখানার দোকান দিলেন। মাংস বিক্রি শেষে সেখানে বসেন। সব মিলিয়ে ছেলে জহুরুল আর তাঁর স্ত্রী ও দুই নাতি এবং সোহাগীকে নিয়ে সুখেই আছেন জমিলা।
গল্পটা যেমন সহজে সাফল্যে রূপ নিল, বাস্তবতা ততটা সহজ ছিল না। জমিলা বলেন, ‘বাজারে আরও চার-পাঁচজন মাংস ব্যবসায়ী রয়েছেন। স্বামী চলে যাওয়ার পর যখন দোকান শুরু করি তখন অনেকেই বিরোধিতা করেন। থানায় ও ইউনিয়ন পরিষদে আমার নামে অভিযোগও দিয়েছিলেন। কিন্তু এলাকার কিছু লোক আমার পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। জোগান উৎসাহ ও সাহস।’
জমিলার মেয়ে সোহাগী ঝাড়বাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। সে বলে, ‘মা কসাই বলে স্কুলে যাওয়ার প্রথম দিকে মানুষের কত কথা শুনতে হয়েছে। বলত তোর মা কসাই, তোর সাথে মিশব না। তবে ভালো ছাত্রী হয়ে সে সমস্যার সমাধান করেছি। আমি ডাক্তার হতে চাই।’
এখন জমিলার দোকানের মাংসের ক্রেতা দিনাজপুর জেলাসহ পাশের নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় জেলার মানুষও। বিয়েবাড়ি, আকিকা, খতনাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জমিলার দোকানের মাংস আশপাশের গ্রাম-শহরের যায়। জমিলা প্রতিদিন তিন-চারটি এবং শুক্রবারে আট-দশটি গরুর নিজ হাতে কেটে মাংস বিক্রি করেন। বর্তমানে তাঁর দোকানে ১০-১২ জন লোক কাজ করেন।
মাংস ক্রেতা ঠাকুরগাঁও জেলার গড়েয়া এলাকায় আবু জাহেদ টিটুল বলেন, ‘জমিলার দোকানের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হাড়ছাড়া মাংস। আমরা দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর কাছেই গরুর মাংস নিতে আসি।’
শতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, ‘জমিলা কসাইয়ের সুনাম পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক দূর-দূরান্তের মানুষ তাঁর দোকান থেকে মাংস নিয়ে যায়। ওজন, দাম ও গুণগত মান বজায় রেখেই তিনি মাংস বিক্রি করেন এটাই জনপ্রিয়তা।’
চাপাতি চালিয়ে অনেক পেয়েছেন জমিলা। এখন তিনি গরুর একটি বড় খামার করতে চান। এর মাধ্যমে সমাজের অবহেলিত ও অসচ্ছল নারীদের প্রতিষ্ঠিত করার ইচ্ছা আছে তাঁর। সরকারি কিছু সহযোগিতা পেলে কাজটা সহজ হতো বলে মনে করেন তিনি।
চাপাতি হাতে একজন নারী বসে আছেন মাংসের দোকানে। এ দৃশ্য দেশের অন্য কোথাও আগে কেউ দেখেছে বলে মনে হয় না। তবে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের ঝাড়বাড়ী বাজারে গেলে পাওয়া যাবে জমিলা বেগমকে (৪৯)। বড় একটি মাংসের দোকান সামলাচ্ছেন তিনি। প্রয়োজনে মাংসখণ্ডে চালাচ্ছেন চাপাতি। এলাকায় পরিচিত তিনি জমিলা কসাই নামেই।
নারীদের এ পেশায় দেখা না গেলেও জীবনসংগ্রামই এখানে টেনে এনেছে জমিলাকে। তবে তিনি এখন ভালো আছেন। শুধু নিজে নন, ১০-১২টি সংসার চলছে তাঁর ব্যবসার ওপর ভর করে। নিজের বাড়িতে গড়ে তুলেছেন ১০-১২টি গরুর একটি খামারও। নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পেয়েছেন ‘জয়িতা পদক’। সব সম্ভব হয়েছে জমিলার চাপাতির জোরে।
সরেজমিনে জানা যায়, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার আজিজনগর এলাকার জাকির হোসেন বীরগঞ্জের ঝাড়বাড়ী এলাকায় এসে পানের ব্যবসা শুরু করেন। তাঁর চার মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে জমিলা তৃতীয়। স্কুলে যাওয়া হয়নি তাঁর। ১৪ বছর বয়সে বিয়ে হয় বগুড়ার মহাস্থানগড় এলাকার রফিকুল ইসলাম ভান্ডারীর সঙ্গে। রফিকুল কসাই ছিলেন। আগের স্ত্রী বর্তমান থাকা অবস্থায় জমিলাকে বিয়ে করেন তিনি। প্রথম সন্তান জহুরুলের জন্মের কিছুদিন পর কসাই রফিকুল মাদকাসক্ত হয়ে ব্যবসা নষ্ট করে ফেলেন। ১৯৯৭ সালের দিকে রফিকুল ও জমিলা বগুড়া থেকে ঝাড়বাড়ী এলাকায় চলে এসে বাজারে আবার একটি মাংসের দোকান শুরু করেন। সে সময় দোকানে স্বামীকে সময় দিতেন জমিলা। পরিবারে ফিরে আসে শান্তি। কিন্তু বিভিন্নজনের কাছ থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা ধারদেনা করে হঠাৎ নিখোঁজ হলেন কসাই রফিকুল।
অকূলে ভাসতে থাকলেন জমিলা। নিরুপায় হয়ে ২০০০ সালে ছেলে জহুরুলকে সঙ্গে নিয়ে বাজারে মাংসের দোকান দিলেন, নাম ‘মায়ের দোয়া মাংস ভান্ডার’। নিজে হাটে গিয়ে দেখেশুনে গরু কেনেন। বাজারে এনে কেটে বিক্রি করেন। আস্তে আস্তে জমে গেল মায়ের দোয়া। ব্যবসা বাড়তে থাকে। মা-ছেলে আস্তে আস্তে শোধ দিলেন কসাই রফিকুলের ধারদেনা। বাড়ির পাশে ১১ শতক জমি কিনে বাড়ি বানালেন। ছোট পরিসরে একটি গরুর খামারও করলেন। বাড়ির সামনে একটি মুদিখানার দোকান দিলেন। মাংস বিক্রি শেষে সেখানে বসেন। সব মিলিয়ে ছেলে জহুরুল আর তাঁর স্ত্রী ও দুই নাতি এবং সোহাগীকে নিয়ে সুখেই আছেন জমিলা।
গল্পটা যেমন সহজে সাফল্যে রূপ নিল, বাস্তবতা ততটা সহজ ছিল না। জমিলা বলেন, ‘বাজারে আরও চার-পাঁচজন মাংস ব্যবসায়ী রয়েছেন। স্বামী চলে যাওয়ার পর যখন দোকান শুরু করি তখন অনেকেই বিরোধিতা করেন। থানায় ও ইউনিয়ন পরিষদে আমার নামে অভিযোগও দিয়েছিলেন। কিন্তু এলাকার কিছু লোক আমার পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। জোগান উৎসাহ ও সাহস।’
জমিলার মেয়ে সোহাগী ঝাড়বাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। সে বলে, ‘মা কসাই বলে স্কুলে যাওয়ার প্রথম দিকে মানুষের কত কথা শুনতে হয়েছে। বলত তোর মা কসাই, তোর সাথে মিশব না। তবে ভালো ছাত্রী হয়ে সে সমস্যার সমাধান করেছি। আমি ডাক্তার হতে চাই।’
এখন জমিলার দোকানের মাংসের ক্রেতা দিনাজপুর জেলাসহ পাশের নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় জেলার মানুষও। বিয়েবাড়ি, আকিকা, খতনাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জমিলার দোকানের মাংস আশপাশের গ্রাম-শহরের যায়। জমিলা প্রতিদিন তিন-চারটি এবং শুক্রবারে আট-দশটি গরুর নিজ হাতে কেটে মাংস বিক্রি করেন। বর্তমানে তাঁর দোকানে ১০-১২ জন লোক কাজ করেন।
মাংস ক্রেতা ঠাকুরগাঁও জেলার গড়েয়া এলাকায় আবু জাহেদ টিটুল বলেন, ‘জমিলার দোকানের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হাড়ছাড়া মাংস। আমরা দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর কাছেই গরুর মাংস নিতে আসি।’
শতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, ‘জমিলা কসাইয়ের সুনাম পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক দূর-দূরান্তের মানুষ তাঁর দোকান থেকে মাংস নিয়ে যায়। ওজন, দাম ও গুণগত মান বজায় রেখেই তিনি মাংস বিক্রি করেন এটাই জনপ্রিয়তা।’
চাপাতি চালিয়ে অনেক পেয়েছেন জমিলা। এখন তিনি গরুর একটি বড় খামার করতে চান। এর মাধ্যমে সমাজের অবহেলিত ও অসচ্ছল নারীদের প্রতিষ্ঠিত করার ইচ্ছা আছে তাঁর। সরকারি কিছু সহযোগিতা পেলে কাজটা সহজ হতো বলে মনে করেন তিনি।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে