বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করেছেন পাটকল শ্রমিকেরা। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল খুলনার খালিশপুর ও দৌলতপুর, চট্টগ্রামের কেএফডি, আর আর এবং সিরাজগঞ্জের জাতীয় জুটমিল চালুর দাবি করা হয় এ সমাবেশ থেকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরীর নতুন রাস্তার মোড়ে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। খালিশপুর-দৌলতপুর জুটমিল কারখানা কমিটি এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কারখানা কমিটির সভাপতি ও সিবিএ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মনির হোসেন মনি। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির।

বক্তব্য দেন পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের সদস্যসচিব এস এ রশীদ, গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা শাখার সমন্বয়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ খুলনা জেলার সমন্বয়ক জনার্দন দত্ত নান্টু, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট খুলনা জেলা সভাপতি আবদুল করিম, ছাত্র ফেডারেশন খুলনা মহানগরের আহ্বায়ক আল আমিন শেখ।

বক্তারা বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে করোনা মহামারি সময়ে ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে দিয়েছে। এতে হাজার-হাজার শ্রমিকসহ পাট সংশ্লিষ্ট ৩ কোটিরও বেশি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। কর্মহীন শ্রমিকেরা অর্ধাহারে-অনাহারে থেকে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

তাঁরা বলেন, দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে বেশির ভাগ শ্রমিক পূর্ণ মজুরি না পেয়ে স্ত্রী-সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছেন না। তাঁদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। পরিবারের অসুস্থ সদস্যদের তাঁরা চিকিৎসা করাতে পারছে না। এ অবস্থায় ধারাবাহিকভাবে চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে শ্রমিক-কৃষকসহ সাধারণ মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না বর্তমান সরকার।

বক্তারা আরও বলেন, পাটকলসহ জনগণের সব রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট হচ্ছে। দেশে চুরি-দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম হয়েছে। মন্ত্রী, সচিব, রাজনীতিবিদ ও বিজেএমসির কর্মকর্তা এই দুর্নীতির তালিকার বাইরে নয়। হাজার-হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। সরকার এদের ধরতে করতে পারছে না। অথচ পাটকল শ্রমিকেরা তাদের ন্যায্য পাওনার জন্য রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করলে প্রশাসনকে ব্যবহার করে তাঁদের ওপর হামলা করা হচ্ছে, মামলা হচ্ছে।

বক্তারা বন্ধ ঘোষণা করা পাটকলের ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা মজুরি কমিশন-২০১৫ অনুযায়ী প্রাপ্য বেতন, বকেয়া ৬টি বিলসহ অন্যান্য পাওনা পরিশোধের দাবি জানান।