বাক্সবন্দী পোস্ট ই-সেন্টারের যন্ত্র

সেলিম সুলতান সাগর, চিতলমারী (বাগেরহাট)
প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭: ৩৫
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ০৩

বাগেরহাটের চিতলমারীতে ডাক বিভাগের অধিকাংশ পোস্ট ই-সেন্টারের সেবা থেকে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানা গেছে। তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের দুয়ারে ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এ উপজেলায় ১৫টি পোস্ট ই-সেন্টার গড়ে তোলা হয়।

ডাক বিভাগের পক্ষ থেকে এসব পোস্ট ই-সেন্টারে কয়েক লাখ টাকার কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিক সরঞ্জামাদি দেওয়া হয়। স্থানীয় সেবাপ্রত্যাশীদের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় ধরে ওই সব সরঞ্জাম ব্যবহার না করায় পোস্ট ই-সেন্টারের ই-সেবা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। অপরদিকে পোস্ট ই-সেন্টার সংশ্লিষ্টরা কোনো কোনো সেন্টারের সেবার মান সন্তোষজনক দাবি করে কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিক সরঞ্জামাদি মেরামতের জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ১৫টি শাখা পোস্ট অফিস ও পোস্ট ই-সেন্টারে একজন করে পোস্টমাস্টার, পিয়ন, রানার ও উদ্যোক্তা রয়েছেন। এসব পোস্ট ই-সেন্টারে ডিজিটাল সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ডাক বিভাগ থেকে ৩টি ল্যাপটপ, একটি লেজার প্রিন্টার, একটি রঙিন প্রিন্টার, একটি স্ক্যানার, একটি মডেম, একটি কি-বোর্ড, মাউসসহ কয়েক লাখ টাকার সরঞ্জাম দেওয়া হয়। এ সেন্টারে সংশ্লিষ্ট এলাকার একজন শিক্ষিত বেকার যুবককে উদ্যোক্তা হিসেবে নিয়োগ পাবেন। তিনি এ সব সরঞ্জাম ব্যবহার করে নিজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ মানুষের দুয়ারে সরকারের ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দেবেন।

উপজেলার খাসেরহাট, উমাজুড়ি, টেকেরবাজার, বাবুগঞ্জবাজার, পাটরপাড়াসহ বেশ কয়েকটি পোস্ট ই-সেন্টার থেকে জানা গেছে, বেশির ভাগ সেন্টারেরই প্রকৃতপক্ষে কোনো কার্যক্রম নেই। কোনো কোনো সেন্টারে নামসর্বস্ব একটি সাইনবোর্ড দেখা গেছে। এসব পোস্ট ই-সেন্টারে ডাক বিভাগ থেকে দেওয়া সরঞ্জামগুলো ব্যবহার না করে বাক্সবন্দী করে রেখেছেন সংশ্লিষ্ট পোস্টমাস্টার ও উদ্যোক্তারা।

এ বিষয়ে স্কুলশিক্ষক মো. সাফায়েত হোসেন, সুরশাইলের মিঠু বিশ্বাস, বোয়ালিয়ার টিটব বিশ্বাস ও কুরমনির দেবাশীষ বিশ্বাসসহ অনেকেই জানান, অধিকাংশ পোস্ট ই-সেন্টার থেকে কোনো সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। পোস্ট ই-সেন্টারগুলোর অধিকাংশ সরঞ্জামাদি অকেজো অবস্থায় বাক্সবন্দী হয়ে পড়ে আছে। ফলে জনসাধারণ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

খাসেরহাট বাজারের পোস্ট ই-সেন্টারের পোস্টমাস্টার গিরিশ চন্দ্র অধিকারী ও বাবুগঞ্জ বাজারের ঝণ্টু অধিকারীসহ বেশ কয়েক জন বলেন, ‘অধিকাংশ পোস্ট ই-সেন্টার প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় উদ্যোক্তারা ডাক বিভাগ থেকে পাওয়া সরঞ্জামগুলো ব্যবহার করে তেমন কোনো আয়-উপার্জন করতে পারছেন না। তা ছাড়া অধিকাংশ প্রযুক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা মেরামতের কোনো বরাদ্দ না থাকায় বাধ্য হয়ে বাক্সবন্দী করে রাখতে হচ্ছে। এসব উদ্যোক্তাকে প্রতি মাসে উপার্জনের কিছু টাকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হয়। মূল্যবান এসব সরঞ্জাম রাখার মতো নির্দিষ্ট কোনো স্থান না থাকায় উদ্যোক্তাদের চরম বিপাকে পড়তে হয়। ফলে বাধ্য হয়ে সরঞ্জামগুলো বাক্সবন্দী করে রেখেছি। নষ্ট কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিক সরঞ্জামাদি মেরামতের জন্য আমরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।’

চিতলমারী উপজেলা পোস্টমাস্টার বিপ্লব কান্তি হাওলাদার বলেন, ‘এসবের তদারকির দায়িত্ব আমার নয়। তদারক করেন আইপিও স্যার।’

গতকাল বুধবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা পোস্ট অফিস পরিদর্শক (আইপিও) মো. রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘বাগেরহাট জেলায় ৬৮টি শাখা পোস্ট অফিসের পোস্ট ই-সেন্টার রয়েছে। এ সব সেন্টারের বেশির ভাগের সরঞ্জামাদি নষ্ট ও অকেজো হওয়ায় সাধারণ মানুষেরা সেবা দিতে পারছেন না। তবে অনেক পোস্ট ই-সেন্টারের সেবার মান সন্তোষজনক। উদ্যোক্তারা যাতে সঠিকভাবে তাঁদের নির্ধারিত সেবা দিতে পারেন সে জন্য নষ্ট সরঞ্জামগুলো মেরামতের প্রয়োজন। সরঞ্জামগুলো মেরামতের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

মেট্রোরেল থেকে আমলাদের বিদায়, অগ্রাধিকার প্রকৌশলীদের

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ৩৫ কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত