তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের নয়াবারাসাত শান্তিপুর-কাটাখাল গ্রামে আধিপত্য বিস্তার ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যকার দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে গত শনিবার পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, ভাঙচুর করা হয় বাড়িঘর। পুলিশের হাতে আটকের ভয়ে ইতিমধ্যে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে দুই পক্ষের বসতবাড়ি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার, নির্বাচন ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা নিয়ে বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ মো. মহসীন ও স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী কাজী কামালের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। সেই দ্বন্দ্ব থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে একের পর এক হামলা-পাল্টা হামলা, মামলা চলে আসছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শান্তিপুরের আকরাম ফকির ও তাঁর ছেলে ইছা ফকিরের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মধুপুর। আগের দিনের হামলার জেরে শুক্রবার ও শনিবার দুই গ্রামবাসীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে কমপক্ষে সাত-আটজন আহত হন। দুই পক্ষের কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুরসহ লুটপাটের ঘটনা ঘটে। আহতদের খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আরও জানা গেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। এখনো পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় পুলিশ সাবেক ইউপি সদস্য আফজাল, শফিকসহ সাত-আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মো. মহসীন বলেন, ‘কাজী কামাল ও তাঁর সমর্থকেরা ইচ্ছা করে এলাকাবাসীর মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করেন। পরে এসব বিরোধ সমাধানের জন্য উভয় পক্ষের কাছ থেকে ঘুষ নেন। তারঁ আয়ের উৎসই এটা।’

এদিকে কাজী কামাল বলেন, ‘নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই মহসীন তাঁর লোকজন দিয়ে তাঁর বিপক্ষে নির্বাচন করা প্রার্থী ও কর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন।’

তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহুরুল আলম বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হয়েছে। আপাতত পরিবেশ শান্ত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে কয়েক জনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষ এড়াতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রথম দিনের ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।’