বিলের মুখে বাঁধ, বোরো চাষাবাদ নিয়ে শঙ্কা

রানা আহমেদ, নলডাঙ্গা (নাটোর)
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯: ০৯

নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার হালতি বিলের পানি নিষ্কাশনের পথে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে জাল বসিয়ে মাছ শিকার করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এতে করে বিলের জমি অগ্রহায়ণ মাসেও তলিয়ে রয়েছে। সেখানকার প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে সময়মতো রবিশস্য ও বোরো ধান চাষ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন হাজারো কৃষক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বছরের অন্যান্য সময় বিল শুকিয়ে গেলেও এবার বন্যায় সময় জমা হওয়া পানি এখনো থই থই করছে। চলছে ইঞ্জিনচালিত নৌকা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিলের পাশের সিংড়া উপজেলার ত্রিমোহিনীর সোনাইডাঙ্গা খালের অন্তত ছয়টি স্থানে বাঁশের বেড়ার বাঁধ দিয়ে সুতি জাল বসিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এ কারণে বিলের পানি নামছে ধীরগতিতে। এভাবে পানি নামলে তিন মাসেও বিল শুকাবে না।

স্থানীয় কৃষকেরা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। তাঁরা বাঁশের বেড়ার বাঁধ দিয়ে বসানো সুতি জাল স্থায়ীভাবে অপসারণ ও স্লুইসগেটের সবগুলো মুখ খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

চরহাঁফানিয়া গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন ও সাইফুল ইসলাম জানান, স্থানীয় মৎস্য বিভাগ মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে এসব জাল অপসারণ করে; কিন্তু কর্মকর্তারা চলে যাওয়ার পর আবার বাঁশের বাঁধ দিয়ে জাল পাতা হয়।

মাধনগর গ্রামের চাষি এবাদুল প্রামাণিক বলেন, ‘আমি বিলের ৩০ বিঘা জমিতে বছরের একমাত্র ফসল বোরো ধান চাষ করি। গত বছর এ সময় বিলের সব পানি নেমে গিয়েছিল। এবার পানি এখনো নামেনি। জমি প্রস্তুত করে রোপণের কাজ শুরু করতে পারিনি।’

দুর্লভপুর গ্রামের কৃষক সেলিম উদ্দিন জানান, বিলের পানি নেমে না যাওয়ায় সরিষা, পেঁয়াজ, ভুট্টাসহ বিভিন্ন রবিশস্য চাষ শুরু করা সম্ভব হয়নি।

এ নিয়ে কথা হলে সিংড়া উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন বলেন, ‘আমরা অবৈধ বাঁশের বেড়ার সুতি জাল ছয়বার উচ্ছেদ করেছি। পরে আবার জাল বসিয়ে মাছ শিকার করছেন প্রভাবশালীরা। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার জাল কেটে দেওয়া হয়। এর বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফৌজিয়া ফেরদৌস জানান, হালতি বিলের প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসল উৎপাদিত হয়। প্রতিবছর এ সময় বন্যার পানি নেমে গেলেও এবার ধীরগতিতে নামছে।

যোগাযোগ করা হলে নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সিংড়া উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ অবৈধ সুতি জাল অপসারণে কাজ শুরু করেছে। অচিরেই এ সমস্যার সমাধান মিলবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত