হাঁড়ির ছয় ভরি সোনা-রুপা উধাও, রইল শুধু সাপ

মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২২, ০৬: ৩৫
আপডেট : ১৪ জুন ২০২২, ১৫: ০৩

ফরিদপুরের মধুখালীতে মেয়ে উদ্ধারের তদবিরের নামে এক ব্যক্তির ছয় ভরি স্বর্ণ ও রূপা নিয়ে পালিয়েছেন এক প্রতারক। গত শনিবার বিকেলে উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের মধ্য আড়পাড়া গ্রামের মোস্তফা কামাল উজির মৃধার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত রোববার দুপুরে মধুখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।

জিডি ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে মধ্য আড়পাড়া গ্রামের মোস্তফা কামাল উজির মৃধার মেয়ে অর্জিনা বেগমের (২৫) বিয়ে হয়। প্রথম স্বামী রেখে সম্প্রতি আরেকজনকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন মর্জিনা। মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নিতে পারেননি মা-বাবা। তাঁরা বিভিন্নভাবে মেয়েকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন।

একপর্যায়ে গত শুক্রবার সকালে স্থানীয় কামারখালী বাজারের একটি খাবার হোটেলে এক সাপুড়ের সঙ্গে পরিচয় হয় মোস্তফা কামালের। এ সময় তদবির করে মেয়েকে উদ্ধারের বিষয়ে আশ্বস্ত করেন ওই সাপুড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যান মোস্তফা কামাল। ওই সাপুড়ে মেয়ে উদ্ধারের তদবির শুরু করেন।

সাপুড়ের কথা অনুযায়ী একটি পাতিলে তিন ভরি সোনার ও তিন ভরি রূপার গয়না রাখা হয়। একপর্যায়ে গয়না রাখার পাতিলে একটি সাপ ও অন্যান্য গাছ-গাছড়া রেখে কৌশলে গয়না হাতিয়ে নেন ওই সাপুড়ে। তিনি যাওয়ার সময় কাউকে কিছু নিষেধ করেন। রাতে এসে পাতিল খুলবেন এবং মেয়েও উদ্ধার হয়ে যাবে বলেন।

শনিবার বিকেলেও ওই সাপুড়ের খোঁজ না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে পরিবার। মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে সন্দেহ হলে বাড়ির লোকজন আশপাশের লোক ডেকে এনে পাতিল খুলে দেখেন সাপসহ অন্যান্য জিনিসপত্র আছে, কিন্তু গয়না নেই। পরে বাড়ির লোকজন সাপটি মেরে ফেলেন।

মোস্তফা কামাল বলেন, কামারখালী বাজারে একটি হোটেলে ওই সাপুড়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। তদবিরের মাধ্যমে তাঁর মেয়েকে উদ্ধার করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। তাঁর কথামতো একটি পাতিলে তিন ভরি স্বর্ণ ও তিন ভরি রুপার গয়না রাখা হয়। যাওয়ার সময় বলেন, তিনি এসে পাতিলের মুখ খুলে দেবেন এবং মেয়েকে উদ্ধার করবেন। ওই সাপুড়ে আর আসেননি। গয়না নিয়ে পালিয়েছেন।

আড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শেখ আবু বাহার বলেন, ‘ঘটনা সঠিক। প্রথমে আমাদের কাউকে না জানিয়ে মোস্তফা কামাল এ কাজ করেছেন। তিনি আমার কাছে এলে তাঁকে থানায় গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।’

আড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন বলেন, অচেনা এক সাপুড়ের প্রতারণার শিকার হয়ে মোস্তফা কামাল তিন ভরি সোনা ও তিন ভরি রূপার গয়না খুইয়েছেন। অচেনা সাপুড়েকে বিশ্বাস করাটা ভুল ছিল।

মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত