Ajker Patrika

গর্তে ভরা বাঁধ যেন মরণফাঁদ

শিপুল ইসলাম, তারাগঞ্জ (রংপুর)
আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১৫: ০৬
গর্তে ভরা বাঁধ যেন মরণফাঁদ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাস থেকে বাঁচাতে ৪৫ বছর আগে একটি বাঁধ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এরপর ২০১৪ সালে ওই বাঁধের ওপর দিয়ে চলাচলের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) একটি সড়ক নির্মাণ করে। সেই বাঁধ ও সড়কের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে বড় বড় ভাঙন। দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় এবারের বর্ষায় ভাঙা বাঁধ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন ৬০টি গ্রামের বাসিন্দারা।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ডানতীর কাপাসিয়া ইউনিয়নের কামারজানি থেকে বামতীর বেলকা হয়ে তারাপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার লম্বা বাঁধটি নির্মাণ করে পাউবো। ওই বাঁধের ওপর এলজিইডি চলাচলের জন্য পাকা সড়ক নির্মাণ করে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও সংস্কার না করায় বাঁধটি ভেঙে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সংকুচিত হওয়ায় যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে। উৎপাদিত ফসল ও মালামাল নিয়ে অতিরিক্ত ২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে সুন্দরগঞ্জ সদরে যাতায়াত করতে হচ্ছে ওই ৮টি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের।

সড়কটির ৫০টি স্থানের বড় বড় গর্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঁধটির ১৫-২০ গজ পরপর গর্ত হয়েছে। জায়গায় জায়গায় ভাঙা সড়ক। বাঁধটিও সংকুচিত হয়ে পড়েছে। কাদা পানি মাড়িয়ে লোকজন চলাচল করছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ মেরামত না করায় এলজিইডি সড়ক সংস্কারকাজ করতে পারছে না। ফলে ওই বাঁধের ওপর দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে লাখো মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বাঁধের বেলকা সৈনিকপাড়া এলাকায় কথা হয় গোলাম আজমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাঁধ দিয়া চলা যায় না। দুই দিকে ভেঙে চিকন হয়ে গেছে। বাঁধ মেরামতের কোনো খবর নাই। বাঁধ ঠিক না করলে এবার পানিত ডুবি থাকতে হবে।’

ওই বাঁধের বেলকা মজিদপাড়া গ্রামের কাছে দেখা যায়, দুজন পথচারী বাঁধের ভাঙা জায়গায় পড়ে যাওয়া মোটরসাইকেল তুলছেন। এগিয়ে গেলে আব্দুর রাজ্জাক নামের পথচারী বলেন, ‘ভাই এইটা বাঁধ নয়, যেন মরণফাঁদ। অল্পের জন্য বেঁচে গেলাম। ২০ গজ পরপর ভাঙা। না জেনে এই বাঁধ দিয়া এসেছি।’

বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ বলেন, ‘বাঁধটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। বাঁধ ও সড়ক সংস্কারের জন্য একাধিকবার উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটিতে আলোচনা করেছি। বাঁধ ও সড়ক ইউএনও স্যার পরিদর্শনও করেছেন। বর্ষায় বাঁধটি ভেঙে গেলে ৮টি ইউনিয়ন পানির নিচে প্লাবিত হবে।’ 
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, ‘বাঁধটি পরিদর্শন করে ৫০টি গর্ত চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি ও জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছি। তাঁরাই ঠিক করার জন্য ব্যবস্থা নেবেন।’

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু রায়হান মিয়া বলেন, ‘বাঁধটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন করে গেছে। এমপি মহোদয় বাঁধের বিষয়টি মন্ত্রী মহোদয়কে অবগত করেন। বিষয়টি ওপরে জানানো হয়েছে। আশা করি, খুব দ্রুত ব্যবস্থা হয়ে যাবে।’

স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটওয়ারী বলেন, ‘বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি এটি আমি পরিদর্শন করে মন্ত্রীকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে আমি তৎপর রয়েছি। আশা করি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।’ 

(রিপোর্ট তৈরিতে সহায়তা করেছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ) 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ভিসা নীতি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে: বলছেন কূটনীতিকেরা

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল ও এনসিপি

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

ফেরত পাঠাতে ৫০০ বাংলাদেশিকে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র

নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল, পুলিশের টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত