Ajker Patrika

কেউ বিক্রি করেছেন কেউ দিয়েছেন ভাড়া

সহিবুর রহমান, হবিগঞ্জ
কেউ বিক্রি করেছেন কেউ দিয়েছেন ভাড়া

নানা সমস্যায় জর্জর হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার খেতামারা আশ্রয়ণ প্রকল্প। দুই বছরেও প্রকল্পের ঘরগুলোতে দেওয়া হয়নি বিদ্যুৎ-সংযোগ। রাস্তা না থাকায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় বাসিন্দাদের। এ ছাড়া প্রভাব বিস্তারসহ বহিরাগতের উৎপাত লেগেই আছে।

এসব কারণে বরাদ্দপ্রাপ্তদের অধিকাংশই ছেড়ে গেছেন আবাসন। এ ছাড়া আছে অন্যের কাছে ঘর ভাড়া দেওয়া এবং বিক্রির অভিযোগও।সরেজমিনে দেখা গেছে, খেতামারা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১২০টি ঘরের মধ্যে ৫০টির দরজায় তালা লাগানো। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘর বরাদ্দ পাওয়ার পর কেউ কেউ এক দিনের জন্যও আসেননি। আর বাকিরা অল্প কিছুদিন থাকলেও বিদ্যুৎ না থাকা, চলাচলের অসুবিধা ও মামলা-হামলার ভয়ে চলে গেছেন। যাঁরা আছেন, তাঁদের কেউ কেউ দখলে নিয়েছেন একাধিক ঘর। কেউ আবার নিজের বরাদ্দের ঘর ছেড়ে দখলে নিয়েছেন অন্যের ঘর।

আশ্রয়ণের ৬ নম্বর ঘরের বাসিন্দা জাহিদুল হক জানান, এখানে রাস্তার অসুবিধা, তা ছাড়া দুটি নালাও (খাল) আছে। বর্ষাকালে এখান দিয়ে আসা-যাওয়া করা যায় না। এ ছাড়া বিদ্যুৎ না থাকায় গরমকালে খুব কষ্ট হয়।

২৪ নম্বর ঘরের বাসিন্দা রফিকুন্নেছা বলেন, ২০ নম্বর ঘরের বাসিন্দা আব্দুল খালেক দুটি ঘর দখলে নিয়েছেন। তাঁর অত্যাচারে অতিষ্ঠ তাঁরা।

ফয়সল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, খালেক মিয়া অকারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হেনস্তা করছেন।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০ নম্বর ঘরের বাসিন্দা আব্দুল খালেকের চুনারুঘাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৭ শতাংশ জমিও রয়েছে।

মামলার বিষয়ে আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমি কাউকে হয়রানি করার জন্য মামলা করিনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আমি মামলা করেছি।’

জমি থাকার বিষয়টি স্বীকার করে আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমার ও স্ত্রীর পেনশনের টাকা দিয়ে ৭ শতাংশ জমি ক্রয় করেছিলাম।’
এ ছাড়া রমিজ মিয়া, আহাদ মিয়া ও মদরিছ মিয়া নামের তিন ভাইয়ের আশ্রয়ণে কোনো ঘর বরাদ্দ না থাকলেও তাঁরা তিনটি ঘর দখলে নিয়ে বসবাস করছেন। আশ্রয়ণের অল্প দূরেই রয়েছে তাঁদের আধা পাকা বাড়ি।

এ বিষয়ে রমিজ মিয়া বলেন, ‘বাবার সম্পত্তি থেকে আমরা তিন ভাই ১ শতাংশ করে মোট ৩ শতাংশ জমি পেয়েছি, যা আমাদের তিনজনের জন্য পর্যাপ্ত না। তাই আমার মায়ের নামে একটি ঘর বরাদ্দ নিয়ে আশ্রয়ণে থাকছি।’

গাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তারেকুর রহমান তুষার বলেন, কিছু ব্যক্তির অত্যাচারে আশ্রয়ণ ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। এ ছাড়া কালভার্ট ও বিদ্যুৎ না থাকায় আশ্রয়ণ ছেড়ে গেছেন অনেকে।

জানতে চাইলে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ ভৌমিক কথা বলতে রাজি হননি।বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, ‘আমি আজকেই জিএমের সঙ্গে কথা বলব, যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেখানে (আশ্রয়ণ প্রকল্প) বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত