Ajker Patrika

রসের অভাবে উৎসব নেই

দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ২৬
রসের অভাবে উৎসব নেই

শীতের সকালে আবছা আলোয় প্রকৃতি থাকে ভেজা, এক চুমুক খেজুরের রস প্রাণকে করে তাজা। ঋতুবৈচিত্র্যের পালাক্রমে চলছে শীত। নানা রকম খাবার, ফুল-ফল, সবজি ও পিঠাপুলির আমেজ নিয়ে হাজির হয় শীতকাল। শীতকালীন খাদ্যতালিকায় প্রথমেই আসে খেজুরের রস। কিন্তু দোহার উপজেলায় গাছের অভাবে সেই মুখরোচক খেজুর রস এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। রস না পাওয়ার জন্য গাছ কেটে ফেলাকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী জানান, একসময় কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকাল যেন খেজুরের রস ছাড়া জমত না। শীত ও খেজুরের রস যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকত।

আশ্বিন মাস থেকে সাধারণত রস সংগ্রহ শুরু হয়। তবে পৌষ ও মাঘ মাসে সবচেয়ে বেশি রস পাওয়া যায়। কারণ, এই দুই মাসে শীতের প্রকোপ থাকে সবচেয়ে বেশি। আবহাওয়া যত ঠান্ডা থাকে রসও তত বেশি পাওয়া যায়। ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে আর রসও কমতে থাকে।

রস কিনতে আসা আনোয়ারা বেগম জানান, একসময় শীতের ভোরেই গাছিরা গাছ থেকে রসের হাঁড়ি নামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। রস নিয়ে পাড়ি জমাতেন দূর-দূরান্তের হাটবাজারে। আগের দিনে রস কিনতে অনেক লোকের দেখা মিলত বাজারে। সেসব দৃশ্য এখন আর দেখা যায় না।

স্থানীয় গৃহবধূ ফাতিমা বেগম বলেন, শীতের সকালে গাছ থেকে নামানো কাঁচা রসের স্বাদ যেমন বর্ণনা করা সম্ভব নয়, তেমনি জ্বাল করা রসের তৈরি বিভিন্ন খাবারের স্বাদ ও চাহিদাও অনেক। কুয়াশামাখা সকালবেলায় রসের তৈরি পায়েসের গন্ধে মৌ মৌ করত চারিদিক।

উপজেলার গাছিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গাছ কাটার ফলে গত কয়েক বছরে গ্রাম থেকে অনেক খেজুরগাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

গাছিরা আরও জানান, একটি খেজুরগাছের রস দেওয়ার মতো উপযুক্ত হতে ১০-১৫ বছর সময় লাগে এবং গাছটি ২৫ বছর পর্যন্ত রস দিয়ে থাকে। একটি পূর্ণবয়স্ক গাছ থেকে দিনে এক-দুই কেজি রস পাওয়া যায়। তবে খেজুর রসের পরিমাণ গাছ কাটার কৌশল ও যত্নের ওপর নির্ভর করে।

উপজেলার জয়পাড়া বাজারে দেখা হলে স্থানীয় ফরহাদ গাছি (৪৫) জানান, এবার তিনি ২০-২৫টি খেজুরগাছ কেটেছেন। তাঁর কাছে প্রায় ২০-২২ জন রস চাইলেও তাঁদের চাহিদা তিনি পূরণ করতে পারেননি। প্রতিদিন গাছ থেকে যে পরিমাণ রস হয়, তাঁর থেকে বিক্রির চাহিদা বেশি। গাছ কেটে ফেলার কারণে আগের মতো রস পাওয়া যাচ্ছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত