Ajker Patrika

শিবচরে দাফন ২১ জন শনাক্ত হয়নি এখনো

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২২, ১১: ৪৫
শিবচরে দাফন ২১ জন শনাক্ত হয়নি এখনো

পিনাক-৬ লঞ্চডুবির আট বছর আজ। ৪ আগস্ট আজকের এই দিনে পদ্মা নদীতে প্রায় আড়াই শ যাত্রী নিয়ে ডুবে যায় লঞ্চটি। সরকারি হিসাবে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। আজও নিখোঁজ রয়েছে ৬৪ জন যাত্রী। তবে এরই মধ্যে পদ্মার বুকে চালু হয়েছে স্বপ্নের ‘পদ্মা সেতু’। এ আনন্দে ভাসলেও অন্তরে রক্তক্ষরণ বইছে স্বজনহারা পরিবারে। ভবিষ্যতে অন্য কোনো নৌপথে অনিয়মের কারণে যেন সলিলসমাধি না হতে হয়, সেদিকে কঠোর পদক্ষেপের দাবি পরিবারগুলোর।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৪ আগস্ট মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে পিনাক-৬ লঞ্চ মাওয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ১০০ যাত্রী ধারণক্ষমতার লঞ্চ হলেও প্রায় আড়াই শ যাত্রী নিয়ে উত্তাল পদ্মা পাড়ি দেওয়ার সময় লৌহজং চ্যানেল থেকে কিছুটা দূরে ডুবে যায় লঞ্চটি। এতে সরকারি হিসাবে ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার হলেও নিখোঁজ থাকে ৬৪ জন। উদ্ধার হওয়া লাশের মধ্যে ২১ জনকে শিবচরের পৌর কবরস্থানে অজ্ঞাতনামা হিসেবে দাফন করা হয়। তবে এত দিনেও ওই মরদেহগুলোর কেউ খোঁজ নেয়নি। এ দুর্ঘটনায় পিনাক-৬ লঞ্চের মালিকসহ চারজনের বিরুদ্ধে লৌহজং থানায় মামলা হলে সব আসামি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। দীর্ঘদিনেও মামলার বিচার হয়নি।

ওই দিন কালকিনি উপজেলার পশ্চিম কমলাপুর গ্রামের সবুজ কাজীর পরিবারের ছয়জন ঢাকায় যাচ্ছিলেন। এতে তাঁর মা, স্ত্রী, এক ছেলে ও শ্যালকের পদ্মায় সলিলসমাধি হয়। এর মধ্যে তাঁর মা ও শ্যালকের লাশ উদ্ধার হলেও আজও তার স্ত্রী-সন্তানকে খুঁজে পাননি। কাজী সবুজ বলেন, ‘পদ্মায় আমার পরিবারের চারজনকে সমাধি দিয়েছি। এখন আর সেই ভয় নেই। পদ্মা নদীতে সেতু হয়েছে। তবে দেশের অন্যান্য নদীতে এখনো নৌযান চলে। সেখানে এখনো অনিয়মের মধ্য দিয়ে নৌযান চলাচল করছে। আমার একটাই দাবি, আর যেন কাউকে স্বজনহারা হতে না হয়।’

শিবচর উপজেলার গুয়াকান্দি এলাকার নুর ইসলাম তাঁর দুই মেয়ে আর এক ভাগনিকে নিয়ে সেদিন যাচ্ছিলেন ঢাকায়। তাঁরাও দুর্ঘটনার শিকার হন। একমাত্র নুর ইসলাম বাঁচলেও তাঁর তিন মেয়ের নদীতে সলিলসমাধি হয়। নুর ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে পার হলে বুকটা হাহাকার করে। আমাদের মেয়েদের তো আর দেখতে পারব না। পুরো পদ্মা নদীই যেন আমার মেয়েদের কবরস্থান। তাই সরকারের কাছে দাবি, আর যেন নৌ-দুর্ঘটনা না ঘটে।’

শিবচর পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন খান বলেন, ‘তৎকালীন সময়ে ২১ জনের ডিএনএ টেস্টের নমুনা রাখা হয়। পরে তাঁদের পৌর কবরস্থানে দাফনও করা হয়। কিন্তু এখনো লাশ শনাক্ত করতে কেউ আসেনি। ফলে অজ্ঞাতনামা মৃতদেহ হিসেবে পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। যদি কেউ ডিএনএ টেস্টের সঙ্গে মিল করে মৃতদেহ নিতে চায়, তাহলে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘পদ্মা সেতু হওয়ায় আর কোনো নৌ-দুর্ঘটনার সম্ভাবনা নেই। যাঁরা এ ঘটনায় স্বজনহারা হয়েছেন, পরিবারের একমাত্র সক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়েছেন, তাঁদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত