চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ৮ নম্বর সরফভাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পরিষদের দাপ্তরিক কার্যক্রম। ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব ও সদস্যরা। অন্যদিকে ঝুঁকি মাথায় নিয়ে প্রতিদিন সেখানে সেবা নিতে আসছে শতশত মানুষ। যেকোনো সময় ভবন ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইউপি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৮ নম্বর সরফভাটা ইউপির জন্মলগ্নে ক্ষেত্র বাজারের একটি বেড়ার ঘরে পরিচালিত হয়ে আসছিল পরিষদের কার্যক্রম। ১৯৬৪ সালে তা বর্তমান ভবনে স্থানান্তর করা হয়। ভবনটি কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে ১৯৬১ সালে ১৬ শতক ভূমির ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল। ভবনটির নিচতলায় গ্রাম আদালত, চেয়ারম্যানের কক্ষ, সচিবের কক্ষ ছিল এবং নিচতলাতেই পরিষদের কার্যক্রম চলে আসছিল।

ভবনটির নিচতলার অবস্থা নাজুক হলে ১৯৮৫ সালে ওপরের তলা টিনশেড দিয়ে নির্মাণ করা হয়। ওই সময় দ্বিতীয় তলা পুলিশ ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছিল। ২০০৫ সালের দিকে পুলিশ ক্যাম্প সরে যাওয়ার পর নিচতলায় কার্যক্রম চালানো সম্ভব না হওয়ায় পরিষদের কার্যক্রম দ্বিতীয় তলায় স্থানান্তর করা হয়।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে ভবনটির কোনো সংস্কার বা মেরামত না হওয়ায় দ্বিতীয় তলায়ও ফাটল দেখা দিয়েছে। বর্তমানে জরাজীর্ণ পুরো ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবনের ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। নষ্ট হয়ে গেছে দরজা-জানালা। জানালার গ্রিলে ধরেছে মরিচা। ভবনের দেয়াল বেয়ে উঠেছে গাছ। শিকড় ছড়িয়েছে ভবনের চারদিকে।

কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা মীরেরখীল গ্রামের আবুল বশর (৬২) বলেন, ‘ইউপি কার্যালয়ে এলে উঁচু খাড়া সিঁড়ি বেয়ে দ্বিতীয় তলায় উঠতে হয়। ভবনের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। যতক্ষণ ভবনে থাকি, ভয় লাগে।’

জানতে চাইলে সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউপি ভবনে সেবা দিতে হচ্ছে। প্রতিদিন ভবনের ছাদ এবং দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি ভবনের ভেতর ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যায়। জনস্বার্থে নতুন ভবন নির্মাণ করা দরকার।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার ইউনুস আজকের পত্রিকাকে বলেন, নতুন ভবন না হওয়া পর্যন্ত অস্থায়ী একটি ঘরে পরিষদের কার্যক্রম স্থানান্তর করার বিষয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়ে পদক্ষেপ চলমান রয়েছে।