ওঁরা ১১ জন ফেরেননি

মো. নাজিম উদ্দিন, কেরানীগঞ্জ (ঢাকা)
প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ১৮
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ১১

১৯৭১ সাল, দেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণ দেখে ঘরে বসে থাকতে পারেননি দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র নাজিম উদ্দিন। দেশে মুক্তিযুদ্ধ লেগে গেলে নাজিম উদ্দিনসহ ১১ জন বন্ধু মিলে আব্দুল হাই নামের একজন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে নেমে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। তাঁরা ১১ জনই উপজেলার কলাতিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। যুদ্ধ চলাকালীন সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে তাঁরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকায় হানাদার বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। পাকিস্তানি হানাদাররা তাঁদের এক লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ারে হত্যা করে।

কেরানীগঞ্জের কলাতিয়া ইউনিয়নের আলীনগরে অবস্থিত কলাতিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের মূল ফটকে শহীদদের স্মরণে নির্মাণ করা হয়েছে একটি নামফলক। এ নামফলকে শ্বেতপাথরে খোদাই করে কালো রঙে লেখা রয়েছে, ‘উনিশ শ একাত্তর এর স্বাধীনতা সংগ্রামে এতদঞ্চলের এগারোটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও আরও নাম না জানা শহীদদের স্মরণে।’ যার নিচেই লেখা রয়েছে ১১ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম। তাঁরা হলেন ‘আ ফ ম শাহাবুদ্দিন (বাবুল), মুহম্মদ আবদুস সালাম, মুহম্মদ শাহ্জাহান, মুহম্মদ নজরুল ইসলাম, মুহম্মদ শাহাদাৎ হোসেন, মুহম্মদ আবুল হোসেন বাদল, মুহম্মদ নাসির উদ্দিন, আব্দুল কাদের, কাজি মুহম্মদ নাজিম উদ্দিন, মুহম্মদ হারুন-আর-রশীদ (মিন্টু) ও মুহম্মদ আহসান।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া ওই ১১ জনের একজন কাজীকান্দি এলাকার কাজী মুহম্মদ নাজিম উদ্দিন। তাঁর ছোট ভাই কাজী শাহজ উদ্দিন মিন্টু বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে আমার ভাই ১১ বন্ধু মিলে আব্দুল হাই নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সবার অগোচরে পালিয়ে যান। আমার কাছে একটি চিঠি লিখে যান। ‘‘দেশের এ অবস্থায় দেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে আমি ভারত যেতে বাধ্য হলাম। মাকে দেখে রাখিস। দেশে আসলে দেখা হবে।’’ কিন্তু আর ফিরে আসেননি ওঁরা ১১ জন!’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত