শরীফ নাসরুল্লাহ, ঢাকা
মুক্ত দেয়াল। মোল্লার দোকান আর গাছের ছায়া। ইচ্ছেমতো যে কেউ শিল্পকর্ম ঝুলিয়ে দিতে পারতেন। সকাল কিংবা সন্ধ্যা—শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীদের আড্ডা জমত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের বিপরীতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একটি ফটক ঘিরে ছিল এই ছোট্ট শিল্প আঙিনা, নাম—ছবির হাট।
বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে বন্ধ করে দেওয়ার পাঁয়তারা চলে। গুঁড়িয়েও দেওয়া হয় শিল্পীদের এই আস্তানা। প্রতিবাদ হয়। আবার গুছিয়ে নতুন করে সম্মিলিত হন শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীরা। তারপর নানা কারণে কয়েক বছর আগের মতো খুব একটা জমে উঠতে দেখা যায়নি। গত ১০ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাস্তবতায় হঠাৎ ভিড় জমে ছবির হাটে। শাহবাগ থানার হেফাজতে থাকা পরিত্যক্ত গাড়িগুলো হয়ে যায় ব্যাকড্রপ। তাতে আঁকা গ্রাফিতি। লম্বা সাদা কাপড়ে লেখা হয়, ‘আওয়াজ উডা, কথা ক—ছবির হাট’। প্রাণখোলা আড্ডায় ছবির হাট প্রাণ ফিরে পায়।
নব্বই দশকের শেষ। চারুকলা অনুষদে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের আড্ডা চলে। নানা কারণে সেখানে আড্ডা আর প্রাণবন্ত হচ্ছিল না! একদল শিক্ষার্থী ভাবলেন, আড্ডাটা চারুকলার বাইরে করলে কেমন হয়? মোল্লার দোকানের পাশে গাছের ছায়ায় শুরু। তাতে যোগ দেন চারুকলার বর্তমান-প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। ধীরে ধীরে নাটকের, গানের কিংবা পথচলতি মানুষ, চাকরিজীবী—সবারই আড্ডার জায়গা হয়ে ওঠে। যে শিল্পীদের হাতে শুরুটা হয়েছিল, তাঁরা নিজেদের মজা করে ডাকতেন ‘হাতুড়ে’। এই সময়ে কথা বলতে গিয়ে অনুরোধ জানান, যেন নামের পরিবর্তে এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়। তেমনই একজন হাতুড়ে জানালেন শুরুর দিনের কথা।
‘চারুকলার উল্টো দিকে মোল্লার চায়ের দোকানে প্রতিদিন বিকেলে আড্ডা দিতাম। সেখানে মাথায় এল, আমরা যে ধরনের চিন্তাভাবনা করছি, এই চিন্তার একটা প্ল্যাটফর্ম থাকতে পারে। আমরা কোনো সংগঠন করব না কিন্তু সংগঠিত একটা প্ল্যাটফর্ম হলো। ছবির হাট কিন্তু প্রথাগত কোনো সংগঠন নয়। যে আসত সে-ই ছবির হাটের হয়ে যেত।’
শিল্পীদের হাত ধরে ছবির হাটের উত্থান হলেও এখানকার আড্ডায় মিলিত হতো নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের মধ্যে কেউ নাটকের, কেউ সংগীতের আবার কেউ সাংবাদিক। এর মধ্যে সপ্তাহের শুক্রবার এখানে ভিড় হতো সবচেয়ে বেশি।
ছবির হাটের এই পথচলা শুরু হয় ২০০০ সালের দিকে। তারপর থেকেই নানা শিল্পী-সংস্কৃতিসেবীর আড্ডার কেন্দ্রে পরিণত হয়। ছবির হাটের পথচলা শুরুর দিকের আরেক শিল্পী আশরাফুল কবির কনক। তিনি বলেন, ‘আমাদের সাপ্তাহিক একটা আড্ডা, রিক্রিয়েশনের জায়গা ছিল এটি। যেহেতু হাটের আদলে করেছিলাম। তাই এখানে যে কেউ ছবি ঝুলিয়ে দিতে পারত। তার একটা দামও আপনি বলতে পারবেন। বার্গেনিং করতে পারবেন। এভাবে আড্ডার মধ্যেই শুরু ছবির হাট।’
আশরাফুল কবির জানান, বিভিন্ন উপলক্ষে এখানে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে রাজনৈতিক কোনো কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণ করতেন না তাঁরা। তাঁদের লক্ষ্য ছিল, এখানে সবার অংশগ্রহণ থাকবে। তবে বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে তাঁরা সজাগ ছিলেন। কনক জানান, ধীরে ধীরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদকের আড্ডা বসে। ধর্ষণেরও খবর পাওয়া যায়। একপর্যায়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। আড্ডাও বন্ধ হয়ে যায়।
কনক বলেন, ‘আমরাও চাইনি কোনো কনস্ট্রাকশন এখানে হোক। দেয়াল যখন ছিল না, তখন আমরা গাছেও ছবি ঝুলিয়েছি। শুধু একটি স্টোররুমের দরকার ছিল, যাতে বৃষ্টি এলে ছবি না ভিজে। এখানে গ্যালারি, স্টোররুম তৈরি হচ্ছে। আপাতত কাজ বন্ধ। যে কোম্পানি কাজ করত, তারা পলাতক। কাজ শুরু হতে পারে। তাহলে আমরা আগের মতো আড্ডা শুরু করব।’
ঢাকার বাইরের অনেক শিল্পী আছেন, যাঁরা ঢাকায় এলে ছবির হাটে চলে আসেন। কারণ, এখানে কাউকে না কাউকে পাওয়া যাবে। দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে আসা নাজির হোসেন বলেন, ‘আমি দেখলাম ছবির হাট নামের একটি প্ল্যাটফর্ম আছে। এখানে দেশের যে কেউ ছবি প্রদর্শনী করতে পারে। সেই ভাবনা নিয়ে বড় ভাইদের সঙ্গে দেখা করে এক বস্তা শিল্পকর্ম নিয়ে ঢাকায় আসি। তারপরে এখানে এসে অন্য শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলি। শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, পরিচালকদের মিলনমেলায় পরিণত হতো ছবির হাট।’ আবারও জমে উঠবে ছবির হাট—এই স্বপ্ন নাজিরের।
মুক্ত দেয়াল। মোল্লার দোকান আর গাছের ছায়া। ইচ্ছেমতো যে কেউ শিল্পকর্ম ঝুলিয়ে দিতে পারতেন। সকাল কিংবা সন্ধ্যা—শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীদের আড্ডা জমত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের বিপরীতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একটি ফটক ঘিরে ছিল এই ছোট্ট শিল্প আঙিনা, নাম—ছবির হাট।
বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে বন্ধ করে দেওয়ার পাঁয়তারা চলে। গুঁড়িয়েও দেওয়া হয় শিল্পীদের এই আস্তানা। প্রতিবাদ হয়। আবার গুছিয়ে নতুন করে সম্মিলিত হন শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীরা। তারপর নানা কারণে কয়েক বছর আগের মতো খুব একটা জমে উঠতে দেখা যায়নি। গত ১০ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাস্তবতায় হঠাৎ ভিড় জমে ছবির হাটে। শাহবাগ থানার হেফাজতে থাকা পরিত্যক্ত গাড়িগুলো হয়ে যায় ব্যাকড্রপ। তাতে আঁকা গ্রাফিতি। লম্বা সাদা কাপড়ে লেখা হয়, ‘আওয়াজ উডা, কথা ক—ছবির হাট’। প্রাণখোলা আড্ডায় ছবির হাট প্রাণ ফিরে পায়।
নব্বই দশকের শেষ। চারুকলা অনুষদে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের আড্ডা চলে। নানা কারণে সেখানে আড্ডা আর প্রাণবন্ত হচ্ছিল না! একদল শিক্ষার্থী ভাবলেন, আড্ডাটা চারুকলার বাইরে করলে কেমন হয়? মোল্লার দোকানের পাশে গাছের ছায়ায় শুরু। তাতে যোগ দেন চারুকলার বর্তমান-প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। ধীরে ধীরে নাটকের, গানের কিংবা পথচলতি মানুষ, চাকরিজীবী—সবারই আড্ডার জায়গা হয়ে ওঠে। যে শিল্পীদের হাতে শুরুটা হয়েছিল, তাঁরা নিজেদের মজা করে ডাকতেন ‘হাতুড়ে’। এই সময়ে কথা বলতে গিয়ে অনুরোধ জানান, যেন নামের পরিবর্তে এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়। তেমনই একজন হাতুড়ে জানালেন শুরুর দিনের কথা।
‘চারুকলার উল্টো দিকে মোল্লার চায়ের দোকানে প্রতিদিন বিকেলে আড্ডা দিতাম। সেখানে মাথায় এল, আমরা যে ধরনের চিন্তাভাবনা করছি, এই চিন্তার একটা প্ল্যাটফর্ম থাকতে পারে। আমরা কোনো সংগঠন করব না কিন্তু সংগঠিত একটা প্ল্যাটফর্ম হলো। ছবির হাট কিন্তু প্রথাগত কোনো সংগঠন নয়। যে আসত সে-ই ছবির হাটের হয়ে যেত।’
শিল্পীদের হাত ধরে ছবির হাটের উত্থান হলেও এখানকার আড্ডায় মিলিত হতো নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের মধ্যে কেউ নাটকের, কেউ সংগীতের আবার কেউ সাংবাদিক। এর মধ্যে সপ্তাহের শুক্রবার এখানে ভিড় হতো সবচেয়ে বেশি।
ছবির হাটের এই পথচলা শুরু হয় ২০০০ সালের দিকে। তারপর থেকেই নানা শিল্পী-সংস্কৃতিসেবীর আড্ডার কেন্দ্রে পরিণত হয়। ছবির হাটের পথচলা শুরুর দিকের আরেক শিল্পী আশরাফুল কবির কনক। তিনি বলেন, ‘আমাদের সাপ্তাহিক একটা আড্ডা, রিক্রিয়েশনের জায়গা ছিল এটি। যেহেতু হাটের আদলে করেছিলাম। তাই এখানে যে কেউ ছবি ঝুলিয়ে দিতে পারত। তার একটা দামও আপনি বলতে পারবেন। বার্গেনিং করতে পারবেন। এভাবে আড্ডার মধ্যেই শুরু ছবির হাট।’
আশরাফুল কবির জানান, বিভিন্ন উপলক্ষে এখানে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে রাজনৈতিক কোনো কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণ করতেন না তাঁরা। তাঁদের লক্ষ্য ছিল, এখানে সবার অংশগ্রহণ থাকবে। তবে বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে তাঁরা সজাগ ছিলেন। কনক জানান, ধীরে ধীরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদকের আড্ডা বসে। ধর্ষণেরও খবর পাওয়া যায়। একপর্যায়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। আড্ডাও বন্ধ হয়ে যায়।
কনক বলেন, ‘আমরাও চাইনি কোনো কনস্ট্রাকশন এখানে হোক। দেয়াল যখন ছিল না, তখন আমরা গাছেও ছবি ঝুলিয়েছি। শুধু একটি স্টোররুমের দরকার ছিল, যাতে বৃষ্টি এলে ছবি না ভিজে। এখানে গ্যালারি, স্টোররুম তৈরি হচ্ছে। আপাতত কাজ বন্ধ। যে কোম্পানি কাজ করত, তারা পলাতক। কাজ শুরু হতে পারে। তাহলে আমরা আগের মতো আড্ডা শুরু করব।’
ঢাকার বাইরের অনেক শিল্পী আছেন, যাঁরা ঢাকায় এলে ছবির হাটে চলে আসেন। কারণ, এখানে কাউকে না কাউকে পাওয়া যাবে। দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে আসা নাজির হোসেন বলেন, ‘আমি দেখলাম ছবির হাট নামের একটি প্ল্যাটফর্ম আছে। এখানে দেশের যে কেউ ছবি প্রদর্শনী করতে পারে। সেই ভাবনা নিয়ে বড় ভাইদের সঙ্গে দেখা করে এক বস্তা শিল্পকর্ম নিয়ে ঢাকায় আসি। তারপরে এখানে এসে অন্য শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলি। শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, পরিচালকদের মিলনমেলায় পরিণত হতো ছবির হাট।’ আবারও জমে উঠবে ছবির হাট—এই স্বপ্ন নাজিরের।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
২ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪