সেন্ট মার্টিনে পর্যটকের ভিড়

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২২, ০৭: ০৩
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২২, ১০: ০৬

আগামী ৩১ মার্চ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কক্সবাজারের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন নৌরুটের জাহাজ চলাচল। এরপর ৩ এপ্রিল থেকে পবিত্র রমজান। সঙ্গে গরম পড়াও শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে পর্যটকেরা এবারের মহান স্বাধীনতা দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনকেই বেঁচে নিয়েছেন। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বছরের পর্যটন মৌসুম অনেকটা শেষ বলা যাবে। এ সপ্তাহের পর ঈদের ছুটিতে পর্যটক আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

গতকাল শনিবার সাপ্তাহিক ও স্বাধীনতা দিবসের ছুটি ছিল। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে পর্যটক আসা শুরু হয়। শুক্রবার বিকেল থেকে কক্সবাজার শহর ও আশপাশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।

সম্প্রতি করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ ও কয়েকটি নেতিবাচক ঘটনায় কক্সবাজারে অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। এতে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল দেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র। ব্যবসা-বাণিজ্য, হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁয় পর্যটক খরায় খাঁ খাঁ করছিল। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও প্রশাসনের নানা উদ্যোগের পর পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হয়ে এসেছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।

জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি-ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কোয়াব)-এর কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর আজকের পত্রিকাকে জানান, সেন্ট মার্টিন নৌরুটে পর্যটক যাতায়াতে ১০টি জাহাজ চলাচল করছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে আসা ও টেকনাফের দুটি জাহাজ চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত কক্সবাজার শহর থেকে একটি ও টেকনাফ জেটিঘাট থেকে ৬টি জাহাজ চলাচল করবে।

সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় সরকার ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। এরপর থেকে এ দ্বীপের ছেঁড়াদিয়ায় পর্যটক যাতায়াত সীমিত করা হয়েছে।

সেন্ট মার্টিনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, পর্যটন মৌসুমে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পর্যটক সমাগম বেশি থাকে। বর্তমানে দ্বীপের পরিবেশ রক্ষায় সরকারি কয়েকটি দপ্তর কাজ করছে। পর্যটকদেরও পরিবেশ-প্রতিবেশের ক্ষতি না করে ঘুরে বেড়াতে সচেতন করা হচ্ছে।

গতকাল শনিবার সকালে সৈকতের লাবণি, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, গিজগিজ করছে পর্যটক। এই তিন স্পটের তিন কিলোমিটারজুড়ে কোথাও ঠাঁই নেই। সৈকতের বালিয়াড়ি ও আশপাশের মার্কেটগুলোতেও বেচাকেনার ধুম পড়েছে।

শহর থেকে জিপ, অটোরিকশা, টমটমে করে হিমছড়ি, ইনানী, পাতুয়ারটেক ও টেকনাফের দিকে ছুটছেন পর্যটকেরা।

এ ছাড়া টেকনাফ, শৈল দ্বীপ মহেশখালী, চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, নিভৃতে নিসর্গে, রামু বৌদ্ধ বিহারসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রেও পর্যটকদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘এ মাসে সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে বিভিন্ন দিবসের ছুটিতে আশানুরূপ পর্যটক এসেছে।’

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস, কটেজ ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার আজকের পত্রিকা জানান, কক্সবাজার শহরের সাড়ে ৪ শ হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউসে ১ লাখ ৭০ হাজারের মতো পর্যটক থাকার সুবিধা রয়েছে। বেশির ভাগ হোটেলের কক্ষ আগাম বুকিং ছিল। বলা যায়, ৯৫ ভাগ কক্ষ ভাড়া হয়েছে।

কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি তৌহিদুল ইসলাম তোহা বলেন, সমুদ্রসৈকতের পাশাপাশি নানা উদ্যোগের কারণে পর্যটকেরা এখন পাহাড়ি ঝরনা, লেক ও প্যারাবনের দর্শনীয় স্থানগুলোতেও ছুটে যাচ্ছে।

পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ছুটির দিনে পর্যটকের চাপ সব সময় বাড়ে। এ জন্য বাড়তি চাপ সামলাতে সব স্পটে অতিরিক্ত পুলিশ টহলে রয়েছে। পর্যটকদের সেবা ও নিরাপত্তায় পুলিশ সজাগ রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত