Ajker Patrika

উচ্চ ঝুঁকির অঞ্চলে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৩১
উচ্চ ঝুঁকির অঞ্চলে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

রাজধানী লাগোয়া শিল্প-অধ্যুষিত গাজীপুরে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। সংক্রমণের হার দ্রুত বাড়ার কারণে গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গাজীপুর জেলাকে উচ্চ ঝুঁকির এলাকা (রেড জোন) হিসেবে চিহ্নিত করেছে। কিন্তু জেলায় সব ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।

গতকাল বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা বিবেচনায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুরসহ ১২ জেলাকে উচ্চ ঝুঁকির এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গত ১০ থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে দেশের জেলাগুলোকে উচ্চ, মাঝারি ও স্বল্প ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ভাগ করে যথাক্রমে রেড বা লাল, ইয়েলো বা হলুদ ও গ্রিন বা সবুজ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

তাদের তথ্যমতে, করোনার নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার যে সব জেলায় ২০ শতাংশের বেশি সেগুলো লাল, শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের বেশি হলে অধিকতর গাঢ় লাল রঙে চিহ্নিত করছে অধিদপ্তর। শনাক্তের হার বিবেচনায় দেশে উচ্চ ঝুঁকিতে আছে ১২ জেলা। উচ্চ ঝুঁকির ১২ জেলা হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রাঙামাটি, বগুড়া, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, যশোর, লালমনিরহাট, গাজীপুর, পঞ্চগড় ও খাগড়াছড়ি।

উচ্চ ঝুঁকির জেলা গাজীপুরে করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৭৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৪২২ জন। অপরদিকে, গতকাল জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন একজন। এই নিয়ে জেলায় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৫০৬ জনে। গতকাল বুধবার দুপুরে গাজীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২২৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ। প্রাপ্ত তথ্যমতে, মঙ্গলবার ২৪৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়। সেদিন শনাক্তের হার ছিল ২৬ দশমিক ৯০ শতাংশ।

তবে গাজীপুরে করোনা সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। গতকাল সন্ধ্যায় মহানগরীর কয়েকটি হোটেল ও গণপরিবহনে বিষয়টি দেখা যায়। হোটেলগুলোতে অর্ধেক আসন ফাঁকা থাকার কথা থাকলেও কয়েকটি হোটেল ঘুরে একটিতেও কোনো আসন ফাঁকা দেখা যায়নি।

হোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও মাস্ক পরা নেই। মহানগরীর রাজবাড়ী সড়কের সুরমা হোটেলে গিয়ে দেখা যায় ম্যানেজারের মুখে মাস্ক নেই। জানতে চাইলে হাসতে হাসতে হোটেল ব্যবস্থা্পক জহিরুল ইসলাম মাস্ক আছে বলে অনেক খুঁজেও বের করতে পারেননি।

হোটেলে খেতে আসা ফয়সালের কাছে জানতে চাওয়া হয়, টিকা কার্ড আছে কি না, তা কেউ জানতে চেয়েছে? উত্তরে তিনি বলেন, ‘না, কেউ কোনো প্রশ্ন করেনি।’

সরকারি নির্দেশনার বিষয়ে হোটেল ব্যবস্থাপক জহিরুল ইসলামকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি। টিকার সনদ দেখতে চাইলে কাস্টমার রাগ করেন।’

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, সরকারের ১১ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন কঠোর ভূমিকা পালন করবে। ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতে জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার জন্য এরই মধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জনসমাগম হয় এমন স্থানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত