Ajker Patrika

কলেজের পুকুর উপাধ্যক্ষের দখলে

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ৪৭
কলেজের পুকুর উপাধ্যক্ষের দখলে

মেহেন্দীগঞ্জের সরকারি পাতারহাট আরসি কলেজের তিনটি বিশাল পুকুর দখল করে আট মাস ধরে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করছেন কলেজেরই উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম। দিনের পর দিন পুকুরে মাছের খাবার দেওয়ায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি কলেজের ছাত্র সংসদ কক্ষ দখল করে এবং বিদ্যুৎ ব্যবহার করে মাছ চাষের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এ ঘটনার জবাব চেয়ে কলেজের অধ্যক্ষ এ বি এম মাহবুবল হক উপাধ্যক্ষকে শোকজ করেছেন।

অধ্যক্ষ দাবি করেছেন, এতে কলেজের সম্পত্তি যেমন বেহাত হওয়ার উপক্রম হয়েছে, তেমনি রাজস্ব হারাচ্ছেন তাঁরা। মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজের সভাপতি (পদাধিকারবলে) মো. নুরুন্নবী জানান, উপাধ্যক্ষ চাষ বন্ধ না করলে মাছ বিক্রি করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।

সরকারি আরসি কলেজের অধ্যক্ষ এ বি এম মাহবুবল হক বলেন, সরকারি কলেজের তিনটি বিশাল পুকুর দখল করে উপাধ্যক্ষ মাছ চাষ করছেন। তিনি তাঁকে অফিশিয়ালি গত বছরের ১১ অক্টোবর কলেজের পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষের কারণ জানতে চেয়ে শোকজ করেছেন, কিন্তু এখনো জবাব দেননি।

অধ্যক্ষ বলেন, ২০১৮ সালে কলেজটি সরকারীকরণের গেজেট প্রকাশিত হয়। সরকারি হওয়ার পর এখন আর লিজ দেওয়ারও ক্ষমতা তাঁদের নেই। এই পুকুরে মাছ চাষের কারণে কলেজের ছাত্র সংসদ কক্ষ দখল করে সেখানে মাছের খাবার রাখা হয়েছে। কলেজের বিদ্যুৎ অবৈধভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুকুরে মাছের খাবার দেওয়ায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এমনকি পুকুরে নেট দিয়ে ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। সম্প্রতি ইউএনও উপাধ্যক্ষকে এগুলো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিলেও তিনি শোনেননি।

কলেজের একজন প্রভাষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকারি পুকুরে উপাধ্যক্ষ বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করছেন এবং জাল দিয়ে ঘেরাও করে রেখেছেন। শিক্ষার্থীরা ওই পানি ব্যবহার করতে পারছে না। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির ঘনিষ্ঠ সহচর হওয়ায় উপাধ্যক্ষ পুকুর দখল করে আছেন।

আরসি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. আব্দুল লতিফ বলেন, তিনি তাঁর সময়ে পুকুরগুলো ইজারা দিয়ে টাকা কলেজের ফান্ডে জমা দিয়েছেন। এটাই হওয়া উচিত।

সরকারি আরসি কলেজের উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম বলেন, অধ্যক্ষের মৌখিক অনুমতি নিয়ে গত বছরের মে থেকে মাছ চাষ করছেন। বিধি অনুযায়ী অধ্যক্ষের চাকরি ৫৯ বছর হয়েছে। অধ্যক্ষ অবসরে গেলে তিনি দায়িত্ব পাবেন। এ কারণে অধ্যক্ষ বলে বেড়ান যে যাওয়ার আগে তাঁর (উপাধ্যক্ষ) চাকরি খেয়ে যাবেন। উপাধ্যক্ষ বলেন, কলেজের আসন বৃদ্ধি, অনার্স খোলায় অধ্যক্ষের অনীহা ছিল। তিনি স্থানীয় সাংসদকে দিয়ে এসব করিয়েছেন। যে কারণে তাঁর সঙ্গে বিরোধ। শহিদুল বলেন, যে কক্ষে খাবার রেখেছেন, সেখানে ছাত্র সংসদের কার্যক্রম নেই। পুকুরে নেট দিয়েছেন মাছ রক্ষায়। কোনো শোকজের চিঠি পাননি। সরকার মাছ নিয়ে যেতে চাইলে আপত্তি নেই।

কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি (পদাধিকারবলে) ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুন্নবী বলেন, তিনি সম্প্রতি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শনকালে কলেজের পুকুরগুলোতে মাছ চাষের চিত্র দেখেছেন। পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে ভীষণ গন্ধ পেয়েছেন। ওই সময়ই উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলামকে পুকুরে মাছ চাষ বন্ধের জন্য সতর্ক করেছেন। সরকারি পুকুরে তিনি এভাবে মাছ চাষ করতে পারেন না। এটি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য। উপাধ্যক্ষকে শিক্ষা খাতে মনোযোগী হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন। এরপরই উপাধ্যক্ষকে শোকজ করা হয়েছে। ইউএনও বলেন, চাষ বন্ধ না করা হলে শিগগিরই মাছ বিক্রি করে সরকারি কোষাগারে অর্থ জমা দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

রাজধানীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে ইরানের দুই নাগরিককে মারধর

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ: ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, নিষিদ্ধের দাবি শিক্ষার্থীদের

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে পন্টিংয়ের আরেকটি রেকর্ড ভাঙলেন কোহলি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত