আমন চাষ নিয়ে বিপাকে কৃষক

মিজানুর রহমান, কাউনিয়া (রংপুর)
প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২২, ০৬: ৪২
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২২, ১৩: ২৬

রংপুরের কাউনিয়ায় খরায় মাঠ শুকিয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়ায় আমন ধানের চারা রোপণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। তাঁরা সেচযন্ত্রের সাহায্যে জমি তৈরি করছেন। এতে খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, কাউনিয়ায় এবার ১১ হাজার ৪২১ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম থেকে চারা রোপণ শুরু হয়। কিন্তু এখন দুই সপ্তাহ ধরে দাবদাহের কারণে আবাদের জন্য তৈরি জমিগুলো শুকিয়ে গেছে।

গতকাল রোববার পর্যন্ত ১০০ হেক্টর জমিতে আমনের চারা রোপণ করা হয়েছে। অথচ গত বছর জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে এর পরিমাণ ছিল প্রায় ৭ হাজার হেক্টর।

চলতি মৌসুমে পানির অভাবে সঠিক সময়ে চারা রোপণ করতে না পারায় বীজতলাতেই তা বাড়ছে। ফলে আমন ধানের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। তবে কৃষি বিভাগ থেকে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সেচযন্ত্রের মাধ্যমে চারা রোপণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলার বল্লভবিষু গ্রামের কৃষক আনোয়ার বলেন, ‘আমন আবাদ হয় বৃষ্টির পানিতে, এবার সেই বৃষ্টি দেখা নাই। আর প্রচণ্ড রোদে জমি পুড়ে যাচ্ছে। সেচযন্ত্র দিয়ে জমিতে পানি দিচ্ছি।’

একই গ্রামের কৃষক সামছুল মিয়া বলেন, ‘বর্গা নিয়ে ৫০ শতক জমিতে আমন আবাদ করছি। খেত রক্ষার জন্য প্রতিবেশীর কাছ থেকে টাকা ধার করে খেতে সেচ দেওয়া হইতেছে।’

নাজিরদহ গ্রামের কৃষক সামছুল জানান, গত বছর তাঁর সব জমিতে আষাঢ় মাসেই আমনের চারা রোপণ শেষ হয়েছিল। এবার বৃষ্টি না হওয়ায় রোপণ করতে পারছেন না। পানির অভাবে বীজতলাও শুকিয়ে যাচ্ছে।

রাজিব গ্রামের কৃষক সোনা মিয়া জানান, জমিতে সেচ দেওয়ার পর তা নিমেষেই হারিয়ে যাচ্ছে। খরা ও প্রচণ্ড দাবদাহ অব্যাহত থাকলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। ধানের উৎপাদনও কম হবে।

পল্লীমারী গ্রামের সোবহান আলী বলেন, প্রকৃতির বৈরী আচরণে এ অঞ্চলের কৃষকেরা সেচ দিয়ে ধানের চারা রোপণের চেষ্টা করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানাজ পারভিন বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সেচযন্ত্রের মাধ্যমে জমি তৈরি করে চারা রোপণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আগামী সপ্তাহ থেকে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে আমন আবাদ নিয়ে কৃষকদের দুশ্চিন্তা থাকবে না।

রংপুর অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানান, কয়েক দিন ধরে এ অঞ্চলে ৩৫-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেখা দিয়েছে খরা। দুই সপ্তাহ ধরে এ অঞ্চলে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত