Ajker Patrika

সঠিক পরিকল্পনার অভাবে হুমকিতে জীববৈচিত্র্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ জুন ২০২২, ১০: ১১
সঠিক পরিকল্পনার অভাবে হুমকিতে জীববৈচিত্র্য

অত্যধিক ফসল কাটা ও টেকসই ব্যবস্থাপনার অভাব, স্থানান্তর জুমচাষ, জমির ব্যবহার পরিবর্তনসহ অন্যান্য কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের বনগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিছু জায়গাকে সরকারের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন ঘোষণা করার ফলে সংরক্ষিত বনের ভেতরে শুধু বসতিই নয়, ইউনিয়ন পরিষদও গড়ে উঠেছে। জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও পার্বত্য চট্টগ্রামকে রক্ষা করতে সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে পরিকল্পনা করার কথা উল্লেখ করেন গবেষক ও পরিবেশবিদ।

গতকাল বুধবার পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত একটি সেমিনারে পার্বত্য চট্টগ্রামে বনভূমি দখল পুনরুদ্ধার ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ নিয়ে আলোচনায় এ বিষয়গুলো উঠে আসে। ‘একটাই পৃথিবী: প্রকৃতির ঐকতানে টেকসই জীবন’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে আরণ্যক ফাউন্ডেশন।

আরণ্যক ফাউন্ডেশনের গবেষণায় উঠে এসেছে, ব্যবস্থাপনার অভাব ও অনিয়ম পার্বত্য চট্টগ্রামের জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি, ত্বরান্বিত মৃত্তিকা ক্ষয়, ভূমিধস ও স্রোতে পানির প্রবাহ হ্রাস, প্রভাবিত করে স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীবন ও জীবিকা। জলবায়ু পরিবর্তনের (জিওবি ২০১৭) ফলে বন ও গাছপালা আবরণ ও টেকসই চাষাবাদের ক্ষতির এই ধরনের প্রভাবগুলি আরও তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে বন পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে এখন পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা করা হয়নি।

এদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে জুমচাষ হিসেবে পরিচিত প্রথাগত চাষাবাদ পদ্ধতির আবর্তকাল ২০ বছর থেকে ৫ বছরে নেমে আসাতে জুমচাষ আর টেকসই চাষাবাদ পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হতে পারছে না। জুমচাষের আবর্তকাল কমে যাওয়াতে মাটির উর্বরশক্তিও কমে যাচ্ছে। ফলে স্থানীয়রা জুমচাষের নতুন জমির সন্ধানে ছুটছে। তারা শ্রেণিভুক্ত বনসহ বন বিভাগের রিজার্ভ ফরেস্টে বা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ঢুকে পড়ছে।

সম্প্রতি একটি জরিপে দেখা গেছে, রাইংখ্যং ছড়ি সংরক্ষিত বনের ফারুয়া নামক স্থানে প্রায় ৩ হাজার পরিবার বসতি স্থাপন করেছে। সেখানে জনসংখ্যা ১৪ হাজারেরও বেশি। সরকার সেই স্থানকে ইউনিয়ন ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ রিজার্ভ ফরেস্ট বা সংরক্ষিত বনের ভেতরে এখন শুধু বসতি নয়, ইউনিয়ন পরিষদও স্থাপন হয়েছে। এভাবে বনের জমি কৃষিজমিতে রূপান্তর হতে থাকলে বনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংসসহ বনের প্রতিবেশ সেবা সম্পূর্ণরূপে ব্যাহত হবে।

পরিবেশের ক্ষতি করে, বন ধ্বংস করে কোনো স্থায়ী উন্নয়ন সম্ভব নয় উল্লেখ করেন সেমিনারে প্রধান অতিথি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আবদুল্লাহ হারুন। তিনি বলেন, দেশটা আমাদের, তাই উন্নয়নের জন্য আমাদেরই কাজ করতে হবে। সেই উন্নয়ন পরিবেশের বিপর্যয় করে, বন ধ্বংস করে নয়।

বিশেষ অতিথি প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরী বলেন, আমাদের হেবিটেশন ঠিক রাখতে হবে। তখনই বন্যপ্রাণীরা ঠিক থাকবে। বায়োডাইভারসিটি কমিয়ে আনতে যেই পরিকল্পনাগুলো গ্রহণ করা হবে সেগুলো আদৌ ওই জায়গার জন্য উপযুক্ত হবে কিনা, সেদিকে লক্ষ রাখার কথা উল্লেখ করেন সেমিনারে উপস্থিত বিশেষ অতিথি পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আব্দুল হামিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ভিসা নীতি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে: বলছেন কূটনীতিকেরা

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল ও এনসিপি

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

ফেরত পাঠাতে ৫০০ বাংলাদেশিকে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র

নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল, পুলিশের টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত