Ajker Patrika

শিক্ষকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি মঞ্জুর করাতে ভোগান্তি

গোপালপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ২৩
শিক্ষকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি মঞ্জুর করাতে ভোগান্তি

মাতৃত্বকালীন ছুটি একজন কর্মজীবী নারীর অধিকার। কিন্তু সেই ছুটি নিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন গোপালপুর উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নারী শিক্ষকেরা। অস্ত্রোপচার করার পর নবজাতককে নিয়ে প্রসূতিকে সরাসরি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে গিয়ে ছুটি মঞ্জুর করতে হবে। এমন অমানবিক রেওয়াজে ক্ষোভ বিরাজ করছে উপজেলার শিক্ষকদের মধ্যে।

সাজনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাকছুদা বেগমের সন্তান প্রসবের তারিখ ছিল ৩ অক্টোবর। কিন্তু তাঁর এক মাস আগেই গত ২ সেপ্টেম্বর পৌর শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। মাতৃত্বকালীন ছুটির আবেদন আগেই করা ছিল। পরদিন ছুটি নিশ্চিতের জন্য এক আত্মীয়কে ডাক্তারের সনদসহ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পাঠান।

কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তা মর্জিনা পারভীন প্রসূতি ও নবজাতককে সরাসরি অফিস আসতে বলেন। নিজের চোখে না দেখে ছুটি মঞ্জুরের নিয়ম নেই বলে সাফ জানান। পরে ২০ সেপ্টেম্বর মাকছুদা অসুস্থ বাচ্চা ও বৃদ্ধা মাকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা পরিষদ ভবনের তিনতলার সিঁড়ি বেয়ে শিক্ষা অফিসে যান। অসুস্থ মাকছুদাকে সিঁড়িতে হাঁপাতে দেখে এগিয়ে আসেন দুই মহিলা কর্মচারী।

মাকছুদা বলেন, ‘সিজারের পর পেটের সেলাই নিয়ে যন্ত্রণায় ছিলাম। বাচ্চাটার ঠান্ডা কমছিল না। কিন্তু ম্যাডামের কড়া নির্দেশ। তাই কাহিল শরীরে অতিকষ্টে সিঁড়ি ডিঙিয়ে অফিসে গিয়ে ছুটি নিশ্চিত করি।’

মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে একইভাবে হয়রানি হয়েছেন ভেঙ্গুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা কানিজ ফাতেমা। তাঁকে ‘ছুটি না নিয়েই কেন সন্তান প্রসব ও স্কুল কামাই করলেন অভিযোগে’ শোকজ করা হয়। একইভাবে হয়রানি শিকার হন ভোলারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উম্মে হাবীবা, সুতি হিজলীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সালমা খাতুন এবং জোত আতাউল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাসলীমা খাতুন।

উপজেলা শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুল করিম বলেন, গত আগস্টে মর্জিনা পারভীন যোগদানের পর থেকেই মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে হয়রানি চলছে। অফিসের বারান্দায় নোটিশ টানিয়ে বলা হয়েছে, ‘কোনো শিক্ষক বেলা ৩টার আগে অফিসে প্রবেশ করতে পারবেন না।’ এতে দূর-দূরান্ত থেকে আগত প্রসূতিদের মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিঁড়িতে অপেক্ষা করতে হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. পারভেজ মল্লিক হয়রানির সত্যতা স্বীকার করে জানান, নোটিশ টানিয়ে শিক্ষকদের অফিসে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারও কোনো এখতিয়ার নেই। সবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও অসৌজন্যমূলক আচরণের শত অভিযোগ রয়েছে ওই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

মর্জিনা পারভীন অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি সরকারি নিয়মানুযায়ী অফিস চালান। কাউকে কখনো হয়রানি করেননি। নিয়ম অনুযায়ীই বারান্দায় নোটিশ দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত