Ajker Patrika

দশধার উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র বেহাল নেই বিদ্যুৎ সংযোগও

বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২২, ১৬: ৪২
দশধার উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র বেহাল নেই বিদ্যুৎ সংযোগও

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার দশধার উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বেহাল। সেখানে পর্যাপ্ত ওষুধ নেই, এমবিবিএস চিকিৎসক নেই। ভবনটিতে বিদ্যুতের সংযোগও নেই। একমাত্র উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার দ্বারাই চলছে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির কার্যক্রম।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিস থেকে জানানো হয়েছে, সেখানে ছয় মাস আগেও একজন চিকিৎসক ছিলেন। তিনি বদলি হয়ে গেছেন। এখন সপ্তাহে দুই দিন একজন চিকিৎসক সেখানে বসেন। সেখানে পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে।

জানা গেছে, বারহাট্টা উপজেলার বাউসি ও রায়পুর এই দুই ইউনিয়নের উড়াদিঘি, রায়পুর, দশধার, সাদরকান্দা ও শুনই গ্রামের প্রায় ১৮ হাজার মানুষ দশধার উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা নিতে আসেন। কিন্তু সেবা বলতে তারা প্যারাসিটামল ও আয়রন ট্যাবলেট ছাড়া আর কিছুই সেখানে পান না।

বাউসি অর্ধচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র হৃদয় জানায়, ‘আমাদের দশধার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি শুধু নামেই আছে কামে নেই। এখানে আমরা কোনো ডাক্তার দেখাতে পারি না। আর যিনি ওষুধ দেওয়ার দায়িত্বে আছেন সেই উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রহুল আমিন প্রতিদিন আসেন না। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন বেলা ১১টার সময় এসে দুইটার সময় চলে যান।’ সে আরও জানায়, ‘গত একমাস আগে জ্বর ও পায়ে ব্যথা নিয়ে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলে আমাকে শুধু প্যারাসিটামল দেওয়া হয়। অন্য কোন ওষুধ নেই বলে জানানো হয়।’

দশধার গ্রামের একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমাদের উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বাইর থেকে যত সুন্দর ভেতরে তত গন্ডগোল। একটা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র চলছে কোনো ডাক্তার ছাড়া। এটা কি ভাবা যায়? আর যিনি ওষুধ দেন তিনি টাকা ছাড়া দিতে চান না।’ তিনি আরও বলেন, শুনই গ্রামের সমিরন বিবি নামে এক ভিক্ষুক মহিলা তিন চার মাস আগে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধ আনতে যান। তখন উনাকে বলা হয় ওষুধ নেই। কিন্তু যখন উনি ২০ টাকা বের করে দেন তখন উনাকে ছয় পাতা আয়রন ট্যাবলেট দেওয়া হয়। আমি বিষয়টি শুনে ওই মহিলাকে নিয়ে আবার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গেলে দায়িত্ব প্রাপ্ত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রহুল আমিন টাকা নিয়ে ওষুধ দেওয়ার বিষয়ে আমার সঙ্গে ঝগড়া জড়ান। তখন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি মীমাংসা করে দেন।’

এ বিষয়ে দশধার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রহুল আমিন বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে ওষুধ বিক্রির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি সততার সঙ্গে তাঁর দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি যে সৎ তা এলাকার মেম্বার ও মাতব্বররা জানেন।’ তবে কেন বেলা ১১টায় এসে দুইটায় চলে যান এমন প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান। আর প্রতিদিন কেন আসেন না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি একা মানুষ পুরো উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালাচ্ছি। প্রায়ই বিভিন্ন মিটিংয়ে যেতে হয়। যার কারণে বন্ধ রাখতে হয়।’ ওষুধ না পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তিনমাসের জন্য যে ওষুধ দেওয়া হয় তা যদি তিনি নিয়মিত দেন তাহলে মাত্র পনের দিনেই শেষ হয়ে যাবে। তাই বাধ্য হয়েই কম কম দিয়ে তিনমাস শেষ করেন তিনি।’

বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দশধার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ছয় মাস আগেও একজন ডাক্তার ছিলেন। তিনি বদলি হয়ে গেছেন। তবে এখন সাপ্তাহে অন্তত দুই দিন একজন ডাক্তার দশধার উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। পরবর্তীতে চাহিদা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাধারণ মানুষরা ওষুধ কেন পাচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের পর্যাপ্ত ওষুধ আছে। তবে কিছু জনবলসংকট আছে যেগুলো খুব দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে বলেও তিনি জানান। আর বিদ্যুৎ সংযোগ নেই কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলে, ‘এটাতে একটু জটিলতা আছে। তবু আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে সাধারণ মানুষদের কাছে উপযুক্ত সেবা পৌঁছে দেওয়া যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ভিসা নীতি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে: বলছেন কূটনীতিকেরা

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল ও এনসিপি

নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল, পুলিশের টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ

ভারত ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত