Ajker Patrika

শাহ আমানতে সোনা চোরাচালান: বিমানবন্দর-কাস্টমস মুখোমুখি

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১: ২৭
শাহ আমানতে সোনা চোরাচালান: বিমানবন্দর-কাস্টমস মুখোমুখি

চট্টগ্রামের হজরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে সোনা চোরাচালান নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দুষছে কাস্টমস কর্মকর্তাদের। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় নজরে এনেছে বিমানবন্দরে কর্মরত কর্মকর্তাদের দুর্নীতি।

বিষয়টি নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে চলে গেছে কাস্টমস ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি সংস্থা দুটির চিঠি-চালাচালি, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ থেকে বিষয়টি সামনে উঠে আসে।

জানা যায়, গত ২৮ নভেম্বর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালকের দপ্তর থেকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এয়ারপোর্ট ও এয়ারফ্রেইট ইউনিটের উপকমিশনারকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। সেই চিঠিতে কাস্টমসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়। বলা হয়, কাস্টমস সদস্যরা সরাসরি চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েছেন।

বিমানবন্দরের পরিচালকের দপ্তরের দেওয়া ওই চিঠির জবাবে গত ১৪ ডিসেম্বর পাল্টা চিঠি দেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এয়ারপোর্ট ও এয়ারফ্রেইট ইউনিটের উপকমিশনার অলোক কুমার হাজরা। সেই চিঠিতে বলা হয়, কাস্টমস সদস্যরা চোরাচালানিদের সফট টার্গেটে পরিণত হওয়ার যে ঢালাও অভিযোগ করা হয়েছে, তার সঙ্গে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ একমত নয়।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কাস্টমস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেও এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নজরে এসেছে বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির বিষয়টি। গত ১৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে। চিঠিতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। কিন্তু তারপরও থেমে নেই সোনা চোরাচালান।

 গত ২৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে নিয়োজিত স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা ডা. এম জেড এ শরীফ মিঠুর কাছ থেকে চারটি সোনার বার উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ডা. এম জেড এ শরীফ মিঠু বিমানবন্দরের ভেতর থেকে চারটি সোনার বার বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে আটক হন। পর অবশ্য স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের জিম্মায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই দিন সকালে আরব আমিরাতের শারজা থেকে আসা বিমানযাত্রী আলাউদ্দিনের কাছ থেকে চারটি বার নিয়েছিলেন তিনি।

এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি সকালে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কনভেয়ারে পড়ে থাকা পরিত্যক্ত একটি বিদেশি সিগারেটের প্যাকেট থেকে ১৪টি সোনার বার জব্দ করে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা।পরে সেগুলো শুল্ক গোয়েন্দার কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সার্বিক বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তসলিম আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, চোরাচালান রোধে ইতিমধ্যে বিমানবন্দরের চার কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আইন ও নিয়ম ভাঙলে কোনো ছাড় নেই। চোরাচালানের বিষয়টি মাথায় রেখেই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে।

এদিকে চোরাচালানিদের এমন দৌরাত্ম্যের কারণে বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। অভিযোগ রয়েছে, বকশিশের নামে বিমানবন্দরে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্য, গাড়িচালক এবং বহিরাগতরা এ হয়রানি করছে। ট্যুরিস্ট ভিসার যাত্রীরা শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশে যেতে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আগে কন্ট্রাক্ট করতে হয়। না করলে তারা (ইমিগ্রেশন) হয়রানি করে। আবার বিমান থেকে নামতেই হয়রানি শুরু হয়।  এ বিষয়ে পরিচালক জানান, যাত্রী হয়রানির অভিযোগ পাওয়ায় দুই আনসার সদস্যকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত