Ajker Patrika

পানির অভাবে পাট জাগে খরচ দ্বিগুণ, বিপাকে চাষি

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২২, ১১: ৫৫
পানির অভাবে পাট জাগে খরচ দ্বিগুণ, বিপাকে চাষি

পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না গোপালগঞ্জের পাটচাষিরা। বৃষ্টি না হওয়ায় দ্বিগুণ খরচে পাট জাগ দিতে হচ্ছে তাঁদের। ফলে পাটের দাম দিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর গোপালগঞ্জ জেলায় ২৬ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে তোষা পাট ২৫ হাজার ৪১৯ হেক্টর, মেস্তা পাট ৫৮৬ হেক্টর ও দেশি পাট ১০৫ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়। প্রতি হেক্টরে ২ দশমিক ৪ মেট্রিক টন পাট উৎপাদিত হবে। সে হিসাবে জেলায় পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬২ হাজার ৬৬৪ মেট্রিক টন। ইতিমধ্যে জেলার ৪০ শতাংশ পাট খেত থেকে কাটা হয়েছে। বাজারে পাটের দাম ভালো রয়েছে।

জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূলে থাকায় পাটের আশানুরূপ ফলন হয় এবার। জমি থেকে পাট কেটে বাড়ির উঠান, সড়কের দুই পাশে স্তূপ করে রেখেছেন কৃষকেরা। কিন্তু পাট কাটার সময় ভরা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির দেখা না থাকায় খাল, বিল আর ডোবা-নালায় দেখা দিয়েছে পানির সংকট। ফলে পাট জাগ দিতে পারছেন না কৃষকেরা। এক পুকুরে অধিক পাট পচানোর ফলে আঁশের রং নষ্ট হয়ে কালো বর্ণ হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে আশানুরূপ দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন পাটচাষিরা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এ বছর বাজারে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায়; কিন্তু পাটের রং কালো হয়ে গুণগত মান নষ্ট হলে দাম কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পাট ব্যবসায়ীরা।

মুকসুদপুর উপজেলার কাউনিয়া গ্রামের পাটচাষি রহমত মোল্লা বলেন, ‘এবার বাজারে পাটের দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে। তবে পানিসংকটের কারণে আমাদের খরচ বেড়ে গেছে। জমি থেকে পাট কেটে জাগ দিতে অন্য স্থানে নিয়ে যেতে হচ্ছে। বিগত বছরে ১ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করতে সব মিলিয়ে খরচ ছিল ৭৫ হাজার টাকা, কিন্তু এ বছর পানির অভাবে অন্য স্থানে জাগ দিতে নেওয়ার কারণে খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ হাজার টাকা।’

গাড়লগাতী গ্রামের পাটচাষি রবিউল শেখ বলেন, ‘খাল-বিলে পানি নেই। তাই পাট জাগ দিতে আমাদের সমস্যা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পানি পচে গেছে। পচা পানিতে পাট জাগ দেওয়ায় পাটের রং ভালো হচ্ছে না। পাটের রং ভালো না হওয়ায় বেশি দামে পাট বিক্রি করতে পারছি না। ফলে লাভের পরিমাণ অনেক কমে যাচ্ছে।’

পাট ব্যবসায়ী শ্যামল কুন্ডু বলেন, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ অঞ্চলে বেশ কিছু জুট মিল গড়ে উঠেছে। এরা প্রতিযোগিতা করে পাট কিনতে মাঠে নেমেছে। এ কারণে পাটের দাম বাড়ছে। কয়েক বছর ধরে পাটের বাজার ভালো রয়েছে।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, এ বছর পাট চাষের অনুকূল পরিবেশ থাকায় গোপালগঞ্জে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে কৃষকদের সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় জেলার সব স্লুইসগেট খুলে দেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুতই পাট জাগ দেওয়ার সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত