বান্দরবানের লামা ও আলীকদমে লাইসেন্স না থাকায় ১২টি ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ১৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে ১১টি ও আলীকদমের আমতলী পাড়ায় ১টি ইটভাটায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় এক্সকাভেটর দিয়ে কাঁচা ইটের স্তূপ ও চুল্লি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. কায়েসুর রহমান এবং আলীকদমের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ এতে নেতৃত্ব দেন। অভিযানের সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. আশফাকুর রহমান, বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম, লামা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহীন পারভেজ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মো. সাফায়েত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, লামার ফাইতং ইউনিয়নে ২৯টি ও আলীকদমে কয়েকটি ইটভাটা রয়েছে। কোনো অনুমতি না নিয়ে চলা এসব ভাটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সম্প্রতি হাইকোর্টে এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভাটাগুলো বন্ধের আদেশ দেন।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ জানুয়ারি ভাটাগুলো বন্ধ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। এ জন্য হাইকোর্টের বন্ধের নির্দেশসংবলিত লাল সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবারের অভিযানে ভাটাগুলো বন্ধের পাশাপাশি ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনে ১৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে লামার ১১টিকে ১৪ লাখ ও আলীকদমের ১টি ইটভাটাকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

এদিকে আলীকদম প্রতিনিধি জানান, উপজেলার আমতলী ও আলীবাজার এলাকার দুটি ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। এ সময় আমতলী এলাকার ইউনিয়ন ব্রিকস্ (ইউবিএম) মালিককে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রশিদ। এ ছাড়া ইট তৈরির যন্ত্রপাতি ও ড্রামচিমনি ভেঙে দেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, অভিযানে লাইসেন্স ব্যতীত ইট প্রস্তুত, বিভিন্নভাবে পাহাড় কাটা, ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি কাঠ ব্যবহার ও নিষিদ্ধ এলাকায় ভাটা স্থাপনের অপরাধে ভাটামালিককে জরিমানা করা হয়। উপজেলার আলীবাজার ও তারাবুনিয়া এলাকার এফবিএম এবং এবিএম ইটভাটা দুটি উচ্চ আদালতে রিট করার কারণে জরিমানা করা হয়নি। ভবিষ্যতে রিট আবেদন খারিজ হলে অভিযান চালানো হবে।

এদিকে আলীকদমের তিনটি ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর সত্যতা পেয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এ ছাড়া ভাটাগুলোতে ফসলি জমি নষ্ট করে ও পাহাড় কেটে ইট প্রস্তুতের জন্য মাটি সংগ্রহ করছে বলে জানিয়েছে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আবদুস সালাম। বৃহস্পতিবারের অভিযানে ওইসব ভাটার কার্যক্রম বন্ধে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।