Ajker Patrika

স্বাস্থ্যবিধি মানায় নেই আগ্রহ

মাগুরা প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ১৭
স্বাস্থ্যবিধি মানায় নেই আগ্রহ

দেশে ওমিক্রনের সংক্রমণ বাড়লেও মাগুরায় কমেছে স্বাস্থ্যবিধি মানার গুরুত্ব। নতুন করে সংক্রমণ শুরু হলেও জেলা শহরের বাসিন্দাদের মাঝে তেমন কোনো সতর্কতা দেখা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতে জেলায় করোনার সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন জেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও সচেতন বাসিন্দারা।

গতকাল মঙ্গলবার শহরের ঢাকা সড়ক, ভায়না মোড়, বাজার এলাকা, ইটখোলা, পুলিশ লাইন, চৌরঙ্গী মোড়, কলেজ সড়কসহ সব জায়গাতেই দিনের অধিকাংশ সময় মানুষের ভিড় দেখা গেছে। এসব এলাকায় ১০ জনের মধ্যে ২ জনকে মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা গেছে। আর সামাজিক দূরত্ব মানার তো কোনো বালাই নেই। রেস্টুরেন্টগুলোতেও বেশ ভিড় দেখা গেছে। অনেক রেস্টুরেন্টেই নেই যথাযথ স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা।

তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করছেন বলে জানান, মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হাসান। তিনি বলেন, ‘সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর থেকেই মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কোনো দিন কেউ মাস্ক পরতে ভুলে গেলে তাকে স্কুল থেকে মাস্ক দেওয়া হয়।’

মাগুরা নতুন বাজার এলাকার অপর এক পথচারী মোহন বলেন, ‘বিধিনিষেধ তো দুই বছর ধরে দেখছি, শুনছি। করোনা এই কমে তো এই বাড়ে। কমে যাবে তার ঠিক নাই। কত আর মানামানি বলেন। নিজেকে সুস্থ রাখতে কে না চান। তবু হয় না অনেক সময়। নিজের অজান্তেই মাস্ক পরা হয় না।’

সদরের টেঙ্গাখালি এলাকার কৃষক কাসেম বলেন, আর কত মাস্ক কিনব? সারা বছর ধরে মাস্ক পরি। মাস্কের পরলে শ্বাসকষ্ট হয়। তাই পরা বাদ দিয়ে দিয়েছি। মাস কয়েক পরপরই করোনা আসে, আর আমাদের মতো গরিবদের দুনিয়ার যত নিয়ম মানতে হচ্ছে। নিয়ম মানতে গিয়ে গরিব মানুষদের খুব কষ্ট হয়।’

নোমান নামের এক যুবক বলেন, ‘এসব করোনা-টরোনা কখন আসে আমরা জানি। মাস্ক সময়মতো পরব। এত মানুষ মাঠে-ঘাটে অনুষ্ঠান করছে, মেলা হচ্ছে, কই সেখানে তো কোনো নিয়ম নাই! সেখানে তো কেউই মাস্ক পরছে না! যত নিয়ম আমাদের মতো গরিবদের জন্য।’

নাম না প্রকাশের শর্তে এক রেস্টুরেন্ট মালিক বলেন, ‘শহরের কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানেন না। আর করোনার কথা আর কি বলব! আসে আর যায়। মাঝে বিপদে পড়ি আমরা।’

ওই রেস্টুরেন্ট মালিক আরও বলেন, ‘আসেলে এসব কিছুই না। সবই রাজনীতি। এসব আমরা বুঝি। এর আগে লকডাউনে খুব বাজে অবস্থার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। এবারও নাকি লকডাউন দেবে। এ নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি।

শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেওয়া চলছে টেকনিক্যাল স্কুল প্রাঙ্গণে। গতকাল সেখানে কথা হয় রায়হান হোসেন নামের এক অভিভাবকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মেয়েকে টিকা দিতে নিয়ে এসেছি। গতকাল প্রচণ্ড ভিড়ে অনেকে নিতে পারেনি। শুনেছি ১৫ তারিখের পর টিকা নেওয়া ছাড়া শিক্ষার্থীদের স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এখন কথা হলো, টিকার কার্ড কি গলায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে? কিছুই তো জানি না। এত বিধি-নিষেধ মনে থাকে না আমাদের।’

মাগুরায় মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক ঘোষণা দিয়ে এক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় জেলা প্রশাসন থেকে। ৩ জানুয়ারিতে ঘোষণা করা করা এ গণবিজ্ঞপ্তিতে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণের বিষয়ে সতর্ক করা হয়।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাশের জেলা যশোরে ওমিক্রনের রোগী পাওয়া গেছে। তাই মাগুরায় মাস্ক ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ ঘোষণার ৭ দিন পেরিয়ে গেলেও এ সংক্রান্ত কোনো জরিমানা বা শাস্তির ব্যবস্থা নেয়নি জেলা প্রশাসন।

সিভিল সার্জন শহীদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, ‘টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। আমরা মাগুরার ১১ লাখ মানুষের মধ্যে ১২ বছর থেকে প্রাপ্ত বয়স্কদের অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে চেষ্টা করছি। বিধিনিষেধ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মানুষকে অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে। ডেলটার ভয়াবহতা আমরা দেখেছি। মাগুরায় এখন পর্যন্ত ওমিক্রনের কোনো রোগী শনাক্ত না হলেও দেশে এর সংক্রমণ বাড়ছে। আমরা ইতিমধ্যে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সচেতন করেছি। স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়টি আমার কানে এসেছি। আমরা খুব শিগগিরই কঠোর অবস্থানে যাব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

এনআইডির তথ্য ফাঁস করে ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ জিয়াউলের বিরুদ্ধে

সাতকানিয়ায় নিহত জামায়াত কর্মীর লাশের পাশে ব্রাজিলের তৈরি অত্যাধুনিক পিস্তল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত