Ajker Patrika

অনলাইন জুয়ায় আসক্তি বাড়ছে উঠতি বয়সীদের

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২২, ১৩: ৪০
অনলাইন জুয়ায় আসক্তি বাড়ছে উঠতি বয়সীদের

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অনলাইন জুয়ায় আসক্তি বাড়ছে যুবকদের। শুধু যুবকেরা নন, বিভিন্ন বয়সী মানুষ এতে জড়িয়ে পড়ছেন। এ জুয়ার আসর শহর ছাড়িয়ে গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুটিকয়েক অনলাইন জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করলেও বাকিরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে। পুলিশ বলছে, এসব জুয়াড়িকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে তাঁদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে চলে এসব জুয়ার আসর। আশপাশের কেউ বুঝতেই পারে না, ছেলেটি মোবাইলে গেম খেলছে নাকি জুয়া। মোবাইল ফোনে অনলাইন জুয়ার অ্যাপস ডাউনলোড করে সেই অ্যাপসে লিংক অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে চালানো হয় জুয়া। নগদ, বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে চলে জুয়ার টাকা লেনদেন।

সম্প্রতি নাঈমুল হাসান নাঈম (২৮) নামের এক অনলাইন জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়েছে পুলিশ। একাধিক বেটিং সাইটের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া খেলতেন তিনি। নাঈম অনলাইনে জুয়া পরিচালনাসহ অন্যদের জুয়া খেলার জন্য রেফার অ্যাকাউন্ট খুলে দিতেন। এ ছাড়া তিনি বিকাশ ও নগদ মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে জুয়াড়িদের সঙ্গে টাকার লেনদেন করতেন। নাঈমের কাছ থেকে অন্য জুয়াড়িরা অনলাইনে জুয়া খেলার টাকা সংগ্রহ করে খেলতেন। তাঁর নিয়ন্ত্রিত এ জুয়াড়ি দল প্রতিদিন ৮-১০ লাখ টাকা লেনদেন করত।

পরে নাঈম তাঁর সহযোগীদের মাধ্যমে ওই টাকা ইলেকট্রনিক মানিতে রূপান্তর করে নিতেন। এ কাজে ২০-২৫ জন তাঁকে সহায়তা করেন। সম্প্রতি পৌরসভার আরামনগর বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে তাঁর অন্য সহযোগীরা কৌশলে পালিয়ে যান।

এদিকে অনলাইন জুয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকেরা। তাঁরা বলছেন, সবুজ ও নাঈমের সঙ্গে যেসব ছেলের সখ্য গড়ে উঠেছিল, তাঁদের চালচুলোর ঠিক নেই। অথচ তাঁরাই নতুন নতুন মডেলের বাইক হাঁকিয়ে বেড়ান। তাঁদের প্ররোচনায় পড়ে অনেকেই অনলাইন জুয়ায় জড়িয়ে পড়ছেন।

কিছুদিন আগে একই কায়দায় উপজেলার আওনা ইউনিয়নের স্থল গ্রামের বাসিন্দা সবুজ মিয়া অনলাইনে জুয়ার চালানো অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। তাঁর কাছ থেকে জানা যায়, স্থল এলাকায় তারাকান্দি-ভূঞাপুর প্রধান সড়কের পাশে একটি পার্ক ভাড়া নেন সবুজ। সেখানে তিনি শিশির রেস্টুরেন্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এ রেস্টুরেন্টের আড়ালে তিনি একটি অনলাইন জুয়ার গ্রুপ তৈরি করেন। নাঈমের মতো তিনিও অনলাইনে জুয়া পরিচালনাসহ জুয়া খেলার রেফার অ্যাকাউন্ট খুলে দিতেন। এ কাজে ২০-২৫ জন তাঁকে সহায়তা করতেন।

সবুজ মিয়ার বাবা জানান, কখন কীভাবে তাঁর ছেলে অনলাইন জুয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন, তা তিনি বুঝতেই পারেননি।

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার পরিদর্শক (ওসি) মোহাম্মদ মোহাব্বত কবির জানান, অনলাইনে জুয়া চালানোর অভিযোগে নাঈমুল হাসান নাঈম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়। অনলাইন জুয়াকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত