Ajker Patrika

বালু তোলায় নদীতীরে ভাঙন

পাবনা প্রতিনিধি
বালু তোলায় নদীতীরে ভাঙন

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতির মধ্যেও পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারায় পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছেই। নদীর তীর ঘেঁষে বালু তোলার ফলে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে কৃষকদের ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। 
গত বুধবার বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করায় তিন কৃষককে পিটিয়েছে বালু সিন্ডিকেটের সদস্যরা। ভুক্তভোগী কৃষক ও স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পাবনা ও কুষ্টিয়ার প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বালু তোলা হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঁড়ারা ইউনিয়নের চর কণ্ঠগজরা এলাকায় প্রকাশ্যে ১৫-২০টি ড্রেজার লাগিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে পাবনার ভাঁড়ারা, দোগাছী, পাকশী, সুজানগর এবং কুষ্টিয়ার পাংশা, কুমারখালী, রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে নেওয়ার জন্য এগুলো শতাধিক ট্রলারে বোঝাই হচ্ছে। প্রতিদিন অন্তত কোটি টাকার ওপর বালু উত্তোলন করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

নদীতীরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, ‘নৌকার ওপর অস্ত্র নিয়ে তারা বালু উত্তোলন করছে। বছরের পর বছর ধরে এই কাজ চলছে। আমরা ধারণা করেছিলাম, সরকার পতনের পর বালু উত্তোলন বন্ধ হবে। কিন্তু প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ দেখতে পাচ্ছি না। আর প্রতিবাদ করলেই আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।’ আরও কয়েকজন কৃষক জানান, বালু তোলার কারণে ভাঙনে তীরের কয়েক শ বিঘা ফসলি জমি নদীতে চলে যাচ্ছে। কিন্তু এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগে কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাবেক এমপি সেলিম আলতাফ জর্জের সহযোগী আব্দুল আলিম এবং পাবনার ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ খানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতেন। এ জন্য নৌ পুলিশসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট মহলগুলোকে ম্যানেজ করে ফেলত এই সিন্ডিকেট। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সাবেক এমপি সেলিম আলতাফ জর্জ ও তাঁর সহযোগী আব্দুল আলিমের এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। তবে ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ খান এলাকায় রয়েছেন। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পাবনার ভাঁড়ারা ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ খান বলেন, ‘বালু উত্তোলনের সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমার জড়িত থাকার বিষয়টি মিথ্যা।’ 

আবার নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টি মিথ্যা দাবি করে পাবনার নাজিরগঞ্জ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমরা যখন অভিযানে যাই, তখন তারা পালিয়ে যায়। আমাদের জনবলও কম। তারপরও আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আবারও অভিযান চালাব।’ 

পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা বলেন, ‘কোথায় কারা কীভাবে বালু উত্তোলন করছে আমাদের সঠিক তথ্য দিন। আমরা সেখানে অভিযান পরিচালনা করব।’

পাবনার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বালু উত্তোলনের বিষয়টি জানা নেই। ভিডিওসহ তথ্য দিন। আমরা অভিযান চালিয়ে প্রতিহত করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত