Ajker Patrika

এবার কাউন্সিলরকে হত্যাচেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ০১ জুন ২০২২, ১৬: ০৮
এবার কাউন্সিলরকে হত্যাচেষ্টা

যশোর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বাবলুকে (৫৪) হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার পর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। গত সোমবার রাতে যশোর শহরের নাজির শংকরপুর জিরো পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার এক দিন আগে হত্যা, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন ঘটনায় ১০ মামলার আসামি আফজাল (২৮) হত্যাকাণ্ডের জের ধরেই এ হত্যাচেষ্টা চালানো হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় রাজনৈতিক বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, এলাকাবাসী ও পৌরসভার কাউন্সিলররা তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান। ঘটনার পরপরই পুলিশের একাধিক দল হাসপাতাল ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

আসাদুজ্জামান বাবলুর ভাই টুটুল হোসেন জানান, সোমবার রাতে বেজপাড়া কবরস্থানে আফজাল শেখকে দাফন করে লোকজনের সঙ্গে বাড়িতে ফিরছিলেন আসাদুজ্জামান বাবলু। পথিমধ্যে শঙ্করপুর জিরো পয়েন্ট মোড়ে পৌঁছালে একই এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে ফার্নিচার শ্রমিক সাকিব গাছিদা দিয়ে পেছন থেকে আসাদুজ্জামানের মাথার পেছনে আঘাত করে পালিয়ে যান।’

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে যশোরের শংকরপুরের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন ১০ মামলার আসামি আফজাল হোসেন (২৮)। ওই হত্যাকাণ্ডে শহরের কোল্ড স্টোর মোড় এলাকার সুজন ওরফে ট্যারা সুজনসহ চাতালের মোড় এলাকার ৭ / ৮ জনের একটি চিহ্নিত চক্র অংশ নেয়। হত্যার মিশনে থাকা সুজনসহ চক্রের সদস্যরা আসাদুজ্জামান বাবলুর লোক বলে এলাকায় প্রচার রয়েছে। আফজাল হত্যাকাণ্ডে অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বাবলুর প্রত্যক্ষ ইন্ধন রয়েছে বলেও প্রচার করেন আফজালের সঙ্গে চলাফেরা কয়েকজন।

বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার রাত থেকেই ক্ষুব্ধ আচরণ করে খোঁজাখুঁজি করছিলেন বাবলুকে। ঘটনার পরদিন সোমবার রাত ৮টায় দাফন সম্পন্ন হয় নিহত আফজালের। তাঁর জানাজায় অংশ নেন কাউন্সিলর বাবলু। এতে আরও ক্ষুব্ধ হন আফজালের সহযোগীরা। যে কুড়াল দিয়ে আফজালের কবরের বাঁশ কাটা হয়, দাফন শেষে সেই কুড়াল দিয়েই হামলা করা হয় বাবলুর ওপর। রাত সাড়ে ৮টায় নাজির শংকরপুরের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে নিহত আফজালের একান্ত কাছের লোক সাকিব কুড়াল দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা করেন বাবলুকে।

স্থানীয়রা আরও জানান, পৌর কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বাবলু এলাকায় কয়েকটি দল গড়ে তোলেন। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে তাঁদের ব্যবহার করতেন। তাঁর একটি দলের প্রতিপক্ষ হিসেবে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেন খুন হওয়া আফজাল। তিনি বাবলুর কয়েকটি দলকে টেক্কা দিয়ে এলাকায় নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে বাবলু পক্ষের দুটি দলের সঙ্গে তাঁর বিরোধ হয়। এর পরেই খুন হন আফজাল। যে ট্যারা সুজন কুপিয়ে হত্যা করেন আফজালকে, সেই সুজন সব সময় চলতেন বাবলুর সঙ্গে। এতে করে আফজালকে বাবলু খুন করিয়েছে বলে ধারণা করেন আফজাল পক্ষের সদস্যরা। এর জের ধরেই সোমবার রাতে বাবলুর ওপর হামলা চালানো হয়।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়েই পরপর হত্যা ও হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটে। এটা পল্টা-পাল্টাপাল্টি হামলা ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও আটকের চেষ্টা চলছে।’

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আফজাল হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে এ ঘটনার যোগসূত্রতা আছে কি না, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য না পেলেও রহস্য খুঁজে বের করে দ্রুতই জড়িতদের আটক করা হবে।’

এদিকে নিহত আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যাসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বে সে খুন হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাঁর সাথিরাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত তাঁদের নাম ঠিকানা পুলিশের কাছে এসেছে। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার এজাহার পেয়েছি। তদন্ত করে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

পাগল বেশে রাস্তায় মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সম্পর্কে যা জানা গেল

প্রধান উপদেষ্টার নতুন বিশেষ সহকারী কে এই আনিসুজ্জামান চৌধুরী

সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে জাতিসংঘের ফলকার তুর্কের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল আইএসপিআর

হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত