Ajker Patrika

শিক্ষকের প্রশংসনীয় উদ্যোগ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য

আব্দুর রব, মৌলভীবাজার
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২২, ১৪: ৫৮
শিক্ষকের প্রশংসনীয় উদ্যোগ  দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য

দরিদ্র শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠিত করতে প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন এক শিক্ষক। ফল চাষাবাদ করছেন তিনি।

এ থেকে উপার্জিত অর্থ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় ব্যয় করবেন। ইতিমধ্যে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা জমিয়েছেন। মানবিক উদ্যোগ নিয়েছেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শিক্ষক আমেনা ফজল।

কাশ্মীরি আপেল কুলের সঙ্গে সঙ্গে বল সুন্দরী, নারকেলি কুল, পেয়ারা, আম, লেবু ও বিভিন্ন সবজিও চাষাবাদ করছেন। এ কাজে সহায়তা করছেন বেতনভুক্ত দুই ব্যক্তি। সদর উপজেলার মিনারা গ্রামে তিন বিঘা জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেছেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রফিনগর গ্রামে।

প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা আমেনা ফজল চাকরির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মানবিক ও সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। তিন সন্তানের এ জননী চাকরির পাশাপাশি মানবিক কাজ করে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে আমেনা ফজল বলেন, ‘আপেল কুলের লাভের পুরোটাই মেধাবী ওই শিক্ষার্থীর জন্য ব্যয় হবে। ওই শিক্ষার্থীর লেখাপড়ায় সহযোগিতায় অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। আমার এত সামর্থ্য নেই, তাই বিভিন্নভাবে টাকা সঞ্চয়ের পরিকল্পনা করছি।’

এ শিক্ষক বলেন, ‘তিন বিঘা জমি লিজ নিয়ে ৭০০ আপেল কুলের চারা রোপণ করি। প্রতি গাছে আশানুরূপ ফলন হয়েছে। এই গাছগুলো প্রথম তিন বছর ভালো ফলন দেবে; পরে ধীরে ধীরে ফলন কমবে। এর পাশাপাশি কিছু অস্ট্রেলিয়ান বল সুন্দরীর চারাও রোপণ করি। সেগুলোতেও ভালো ফলন হয়েছে।’

আমেনা আরও বলেন, ‘প্রতিবছর একটি গাছ থেকে ৪০-৫০ কেজি ফলন পাব আশা করি। সে অনুযায়ী পাইকারি ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করে বছরে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা আয় হয়। সার্বিক খরচ বাদ দিলে বছরে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় হয়। সে অনুযায়ী প্রায় ৫ বছরের টাকা একত্রে করলে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারব।’

মোছাব্বির নামের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলে, ‘আমি সুনামগঞ্জে গ্রামে থাকতাম, সেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতাম। পাশাপাশি পড়ালেখা করতাম। কিন্তু পড়ালেখা ভালোভাবে করতে পারতাম না। এরপর শিক্ষক আমেনা ও তাঁর স্বামী আমাকে মৌলভীবাজার শহরে নিয়ে আসেন।’

মোছাব্বির আরও বলে, ‘আমার এক চোখে সমস্যা ছিল। দেখতে পারতাম না। তাঁরা ঢাকায় নিয়ে চোখের অপারেশন করান। সেখান থেকে ফেরার পর আমাকে পড়ালেখা করান। এরপর মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিই। সেখানে সবার মধ্যে প্রথম হই। তাঁরা আমার পড়ালেখার সব খরচ দিচ্ছেন।’

মোছাব্বিরের পাশাপাশি নিজের গ্রামের আরও তিনজন শিক্ষার্থীকে নিজের বাসায় রেখে পড়ালেখা করাচ্ছেন আমেনা ফজল।

আমেনার স্বামী এ এফ তালুকদার বলেন, ‘আমার স্ত্রী একজন গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্ন দেখে; পাশাপাশি বাসায় তিন শিক্ষার্থীকে পড়াচ্ছে—সেই স্বপ্নের সমর্থক আমি। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমিও কাজ করছি। সামনের দিনগুলোতে আমরা দুজন মিলে মানুষের কল্যাণে কাজ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত