কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চোরের উপদ্রব

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২২, ০৭: ০৩
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২২, ১২: ৫৪

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে হঠাৎ বেড়েছে চোরের উপদ্রব। দূরদুরান্ত থেকে আসা বিপদগ্রস্ত মানুষজন এখানে চিকিৎসা নিতে এসে মোবাইল, স্বর্ণালংকার, জুতা, এমনকি পোশাক হারাচ্ছেন। হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মী ও হাসপাতাল ফাঁড়ির পুলিশ বলছে, চুরির সঙ্গে নারী-পুরুষসহ ছোট ছোট শিশুরাও জড়িত। ইতিমধ্যে কয়েকজনকে আটক করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরপরও চুরি থামছে না।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে শ্বশুর ইশারত আলীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে এসেছিলেন আফরিন আক্তার নামের এক নারী। তিনি জানান, তাঁর শ্বশুরের কিডনিতে সমস্যা। সেই কারণে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসকের কাছে তাঁকে নিয়ে আসেন। চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা করতে বলেন। হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য বের হওয়ার সময় খেয়াল করেন তাঁর হাতব্যাগ থেকে কেউ মোবাইলটি বের করে নিয়ে গেছে। আফরিন বলেন, ‘ওই দিন আরও দুজনের টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি, কিন্তু এখানো সমাধান পাইনি।’

শহিদুল ইসলাম নামের আরেক ভুক্তভোগী জানান, কয়েক দিন আগে তাঁর বাবা সোলাইমানকে হাসপাতালে ডায়রিয়া বিভাগে ভর্তি করেন। বাবার সেবার জন্য তিনি থাকতেন। গত শনিবার বিকেলে শয্যার পাশে তাঁর মোবাইলটি চার্জে দেন। সন্ধ্যায় সময় দেখেন মোবাইলটি নেই।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অনেকের দাবি কিশোর ও যুবকের পাশাপাশি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নারী দালালেরা এসব চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা পারভিন জানান, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে থেকে চুরি হয় জেনে, মেয়ের চিকিৎসার টাকা তিনি সঙ্গেই রাখতেন। শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ২য় গেটের কাছে ভিড়ের মধ্যে দুই নারী তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলতে ব্যাগের ভেতর থেকে কানের দুল ও সঙ্গে থাকা ৪ হাজার টাকা নিয়ে নেয়।

ভুক্তভোগী আরেক নারী বলেন, ‘আমার মোবাইলটি হাসপাতাল থেকে চুরি হয়ে গেছে। কিন্তু পুলিশ বলে, থানায় গিয়ে মামলা করতে হবে। আমি মামলা করে কি করব। এসব তো আমি বুঝি না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, ২৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও এখানে সব সময় গড়ে ৭০০ রোগী ভর্তি থাকে। আর একজন রোগীর সঙ্গে গড়ে তিনজন করে তাদের স্বজন থাকে। তাতে যত লোকের ভিড় হয়, আমাদের লোকবল দিয়ে তা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এরপরও আমরা এ বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। হাসপাতালের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে পুলিশ এবং জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। চুরির অপরাধে কয়েকজনকে ধরে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিব্রত।’

হাসপাতাল ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। বিশাল এ হাসপাতাল অনুযায়ী আমাদের লোকবল একটু কম। অচিরেই আমরা এ চক্রটিকে ধরতে পারব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত