ফারুক মেহেদী, ঢাকা
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের গর্ব। এভাবেই দেখা হয় ক্রিকেটার সাকিবকে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের ‘পোস্টারবয়’ নামেও ডাকা হয় তাঁকে। কিন্তু নিজেরই তৈরি বিতর্ক আর সমালোচনায় ক্রমেই সেই পরিচয় নড়বড়ে হয়ে উঠছে। এবার পুঁজিবাজারে কারসাজিতে জড়িত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সঙ্গে জড়িয়ে গেল সাকিব আল হাসানের নাম।
সাকিবের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, খেলার পাশাপাশি ব্যবসার আড়ালে তাঁর নাম এমন সব কারসাজি আর কেলেঙ্কারির হোতাদের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে, তাতে সাকিবের কষ্টে গড়া ক্যারিয়ার আর বাংলাদেশের সুনাম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। সম্প্রতি আবুল খায়ের ওরফে হিরো নামে পরিচিত শেয়ারবাজারে কারসাজির নতুন এক হোতার আবির্ভাব হয়েছে, যেখানে সাকিবকে সামনে রেখে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুঁজিবাজার থেকে হিরো ও তাঁর সহযোগীদের নামে-বেনামে যখন বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’, তখন এশিয়া কাপে প্রথম রাউন্ডে বিদায় নেওয়া বাংলাদেশের ক্রিকেট অধিনায়ক সাকিব ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে।
এ ব্যাপারে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে যোগাযোগ করে মন্তব্য জানার চেষ্টা করেও পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে পুঁজিবাজারের কারসাজির হোতা হিরোর নামের সঙ্গে সাকিবের নাম জড়ানোর বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমি জানি না। ওইটা যেহেতু ক্রিকেটের সঙ্গে না, আমি এখানে কী করব?’
জানা যায়, সাকিব নিজের অন্যান্য ব্যবসার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। ক্রিকেটের সুবাদে তৈরি হওয়া তাঁর খ্যাতির কারণে সখ্য গড়ে ওঠে পুঁজিবাজারের কোনো কোনো ‘প্লেয়ার’দের সঙ্গে। এখানে অল্প সময়ে বিপুল অঙ্কের টাকা কামানোর গল্প কম-বেশি সবারই জানা। সাকিবও এই পথে পা বাড়ান। পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন–বিএসইসির শুভেচ্ছাদূতের পরিচয় কাজে লাগিয়ে চলতি বছরের মে মাসে মোনার্ক হোল্ডিংস নামের এক ব্রোকারেজ হাউসের অনুমোদন নেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ–ডিএসইর সূত্র বলছে, সেখানে জমা দেওয়া নথিতে মোনার্ক হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান পদে সাকিব আল হাসানের নাম রয়েছে। আর এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে আছেন পুঁজিবাজারে বহুল আলোচিত শেয়ার ব্যবসায়ী ও সমবায় অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আবুল খায়ের হিরোর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান। এ ছাড়া পরিচালক হিসেবে জাভেদ এ মতিন ও আবুল কালাম মাতবরের নাম রয়েছে। পুঁজিবাজারে কারসাজির নেপথ্যের ‘প্লেয়ার’ হিসেবে এসব নাম এখন ব্যাপক আলোচিত।
ডিএসই’র অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, আলোচিত বিনিয়োগকারী আবুল খায়ের ও তাঁর সহযোগীরা ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে বিপুল পরিমাণ মুনাফা তুলে নিয়েছেন। তাঁরা গত বছরের নভেম্বরে মাত্র ১৫ দিনের কারসাজিতে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেনে ১৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা মুনাফা তুলে নেন। নিজেদের মধ্যে শেয়ার কেনাবেচা করে কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে এই মুনাফা তুলে নেন তাঁরা। আর কারসাজির জন্য হিরো তাঁর নিজের, বাবার, স্ত্রীর ও বোনের এবং বন্ধুবান্ধব ও অনুসারীদের মোট ১৪টি বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) ব্যবহার করেন। এ ঘটনায় বিএসইসি সম্প্রতি হিরোর বাবা ও তাঁর সহযোগীদের ৩ কোটি টাকা জরিমানা করেছে। জরিমানার টাকা আদায়ে বিএসইসি একটি আদেশও জারি করেছে।
বিএসইসির জরিমানার আদেশ থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৫ থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ওই ১৫ দিনে হিরো তাঁর স্বজন, সহযোগী ও অনুসারীরা ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার কেনাবেচায় ব্যাপক কারসাজি করেন। বিএসইসির আদেশে টপ সেলার হিসেবে হিরো ও তাঁর সহযোগীদের তালিকায় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নাম রয়েছে আট নম্বরে। সেখানে তাঁর একটি বিও অ্যাকাউন্টের বিপরীতে দেখা যাচ্ছে সাকিব মোট ৭৫ লাখ ১ হাজার ৬৭৬টি শেয়ার কিনেছেন। ওই সময় কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সাড়ে ৭ টাকা বা ৬০ শতাংশ বেড়ে যায়। তাতে হিরো, তাঁর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, বাবা আবুল কালাম মাতবর, বোন কনিকা আফরোজ এবং তাঁর সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠান ক্যান্ডেলস্টোন ইনভেস্টমেন্টস পার্টনার্সসহ একাধিক অনুসারী ও সহযোগীর ১৪টি বিও হিসাবে প্রায় ১৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা মুনাফা হয়।
ডিএসইর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের দামে বড় ধরনের উত্থানের সময় ব্যাংকটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ছিল ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। জড়িতদের মধ্যে রয়েছে আবুল খায়ের হিরো, তাঁর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, বাবা আবুল কালাম মাতবর, বোন কনিকা আফরোজ; তাঁর সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠান ক্যান্ডেলস্টোন ইনভেস্টমেন্টসের অন্যতম পার্টনার সাকিব আল হাসান। সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্রোকারেজ হাউস সূত্র জানায়, ক্রিকেটার সাকিবের নামে শেয়ার কেনাবেচার কাজটি তদারক করেছেন আবুল খায়ের। ওই সময়ে পুঁজিবাজারে ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের যত লেনদেন হয়েছে, তার প্রায় অর্ধেকই এ সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলে করেছেন। এ ধরনের লেনদেন সিকিউরিটিজ আইনের চোখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে জানিয়েছেন বিএসইসির একাধিক কর্মকর্তা।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা আমাদের দিক থেকে যে শাস্তি হওয়া দরকার সেটা করছি। এরই মধ্যে জরিমানা করেছি। ডিএসই আমাদের কাছে যখনই কিছু পাঠায়, আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই। আমরা আমাদের মতো করে যাচাই বাছাই করি।’ তবে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নাম থাকলেও এর সঙ্গে সে জড়িত নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
দেশের ক্রিকেটের সাকিব ভক্ত অনেকের সঙ্গে গতকাল এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁরা বলছেন, পুঁজিবাজারের কারসাজির হোতা আবুল খায়ের হিরোর সঙ্গে নাম জড়ানোয় আবারও নিজেকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিলেন সাকিব। তাঁরা মনে করেন, সাকিব বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিংয়ের অন্যতম সেলিব্রিটি। তাঁর দুর্নাম দেশের ক্রিকেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গত আগস্টে বেটিং সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেটউইনার নিউজের শুভেচ্ছাদূত হয়েছিলেন সাকিব। এ নিয়ে তখন ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। পরে ক্রিকেট বোর্ড এ ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নেওয়ায় সাকিব বিতর্কিত চুক্তি থেকে সরে আসেন। সেই সময় বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই, এটা (বেটউইনার) একটা বেটিং কোম্পানি। জুয়া, ক্যাসিনোর সঙ্গে এটা জড়িত। বিসিবিতে দুটো জিনিস পরিষ্কার বলা আছে, কীসের কীসের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারবে না।’
ক্রিকেটে জুয়াড়িদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা বা তাদের কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেয়েও গোপন রাখার অপরাধে সাকিবকে ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। সাকিব নিজেই আইসিসির কাছে তাঁর অপরাধের কথা স্বীকার করেছিলেন।
তাই বারবার বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ের সঙ্গে দেশের ক্রিকেটের এক নম্বর তারকা সাকিব আল হাসানের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় তাঁর ভক্তরা যেমন হতাশ তেমনি দেশের ক্রিকেট অনুরাগীরাও চিন্তিত।
অন্যান্য খবর পড়ুন:
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের গর্ব। এভাবেই দেখা হয় ক্রিকেটার সাকিবকে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের ‘পোস্টারবয়’ নামেও ডাকা হয় তাঁকে। কিন্তু নিজেরই তৈরি বিতর্ক আর সমালোচনায় ক্রমেই সেই পরিচয় নড়বড়ে হয়ে উঠছে। এবার পুঁজিবাজারে কারসাজিতে জড়িত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সঙ্গে জড়িয়ে গেল সাকিব আল হাসানের নাম।
সাকিবের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, খেলার পাশাপাশি ব্যবসার আড়ালে তাঁর নাম এমন সব কারসাজি আর কেলেঙ্কারির হোতাদের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে, তাতে সাকিবের কষ্টে গড়া ক্যারিয়ার আর বাংলাদেশের সুনাম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। সম্প্রতি আবুল খায়ের ওরফে হিরো নামে পরিচিত শেয়ারবাজারে কারসাজির নতুন এক হোতার আবির্ভাব হয়েছে, যেখানে সাকিবকে সামনে রেখে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুঁজিবাজার থেকে হিরো ও তাঁর সহযোগীদের নামে-বেনামে যখন বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’, তখন এশিয়া কাপে প্রথম রাউন্ডে বিদায় নেওয়া বাংলাদেশের ক্রিকেট অধিনায়ক সাকিব ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে।
এ ব্যাপারে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে যোগাযোগ করে মন্তব্য জানার চেষ্টা করেও পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে পুঁজিবাজারের কারসাজির হোতা হিরোর নামের সঙ্গে সাকিবের নাম জড়ানোর বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমি জানি না। ওইটা যেহেতু ক্রিকেটের সঙ্গে না, আমি এখানে কী করব?’
জানা যায়, সাকিব নিজের অন্যান্য ব্যবসার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। ক্রিকেটের সুবাদে তৈরি হওয়া তাঁর খ্যাতির কারণে সখ্য গড়ে ওঠে পুঁজিবাজারের কোনো কোনো ‘প্লেয়ার’দের সঙ্গে। এখানে অল্প সময়ে বিপুল অঙ্কের টাকা কামানোর গল্প কম-বেশি সবারই জানা। সাকিবও এই পথে পা বাড়ান। পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন–বিএসইসির শুভেচ্ছাদূতের পরিচয় কাজে লাগিয়ে চলতি বছরের মে মাসে মোনার্ক হোল্ডিংস নামের এক ব্রোকারেজ হাউসের অনুমোদন নেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ–ডিএসইর সূত্র বলছে, সেখানে জমা দেওয়া নথিতে মোনার্ক হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান পদে সাকিব আল হাসানের নাম রয়েছে। আর এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে আছেন পুঁজিবাজারে বহুল আলোচিত শেয়ার ব্যবসায়ী ও সমবায় অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আবুল খায়ের হিরোর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান। এ ছাড়া পরিচালক হিসেবে জাভেদ এ মতিন ও আবুল কালাম মাতবরের নাম রয়েছে। পুঁজিবাজারে কারসাজির নেপথ্যের ‘প্লেয়ার’ হিসেবে এসব নাম এখন ব্যাপক আলোচিত।
ডিএসই’র অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, আলোচিত বিনিয়োগকারী আবুল খায়ের ও তাঁর সহযোগীরা ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে বিপুল পরিমাণ মুনাফা তুলে নিয়েছেন। তাঁরা গত বছরের নভেম্বরে মাত্র ১৫ দিনের কারসাজিতে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেনে ১৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা মুনাফা তুলে নেন। নিজেদের মধ্যে শেয়ার কেনাবেচা করে কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে এই মুনাফা তুলে নেন তাঁরা। আর কারসাজির জন্য হিরো তাঁর নিজের, বাবার, স্ত্রীর ও বোনের এবং বন্ধুবান্ধব ও অনুসারীদের মোট ১৪টি বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) ব্যবহার করেন। এ ঘটনায় বিএসইসি সম্প্রতি হিরোর বাবা ও তাঁর সহযোগীদের ৩ কোটি টাকা জরিমানা করেছে। জরিমানার টাকা আদায়ে বিএসইসি একটি আদেশও জারি করেছে।
বিএসইসির জরিমানার আদেশ থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৫ থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ওই ১৫ দিনে হিরো তাঁর স্বজন, সহযোগী ও অনুসারীরা ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার কেনাবেচায় ব্যাপক কারসাজি করেন। বিএসইসির আদেশে টপ সেলার হিসেবে হিরো ও তাঁর সহযোগীদের তালিকায় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নাম রয়েছে আট নম্বরে। সেখানে তাঁর একটি বিও অ্যাকাউন্টের বিপরীতে দেখা যাচ্ছে সাকিব মোট ৭৫ লাখ ১ হাজার ৬৭৬টি শেয়ার কিনেছেন। ওই সময় কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সাড়ে ৭ টাকা বা ৬০ শতাংশ বেড়ে যায়। তাতে হিরো, তাঁর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, বাবা আবুল কালাম মাতবর, বোন কনিকা আফরোজ এবং তাঁর সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠান ক্যান্ডেলস্টোন ইনভেস্টমেন্টস পার্টনার্সসহ একাধিক অনুসারী ও সহযোগীর ১৪টি বিও হিসাবে প্রায় ১৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা মুনাফা হয়।
ডিএসইর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের দামে বড় ধরনের উত্থানের সময় ব্যাংকটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ছিল ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। জড়িতদের মধ্যে রয়েছে আবুল খায়ের হিরো, তাঁর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, বাবা আবুল কালাম মাতবর, বোন কনিকা আফরোজ; তাঁর সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠান ক্যান্ডেলস্টোন ইনভেস্টমেন্টসের অন্যতম পার্টনার সাকিব আল হাসান। সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্রোকারেজ হাউস সূত্র জানায়, ক্রিকেটার সাকিবের নামে শেয়ার কেনাবেচার কাজটি তদারক করেছেন আবুল খায়ের। ওই সময়ে পুঁজিবাজারে ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের যত লেনদেন হয়েছে, তার প্রায় অর্ধেকই এ সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলে করেছেন। এ ধরনের লেনদেন সিকিউরিটিজ আইনের চোখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে জানিয়েছেন বিএসইসির একাধিক কর্মকর্তা।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা আমাদের দিক থেকে যে শাস্তি হওয়া দরকার সেটা করছি। এরই মধ্যে জরিমানা করেছি। ডিএসই আমাদের কাছে যখনই কিছু পাঠায়, আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই। আমরা আমাদের মতো করে যাচাই বাছাই করি।’ তবে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নাম থাকলেও এর সঙ্গে সে জড়িত নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
দেশের ক্রিকেটের সাকিব ভক্ত অনেকের সঙ্গে গতকাল এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁরা বলছেন, পুঁজিবাজারের কারসাজির হোতা আবুল খায়ের হিরোর সঙ্গে নাম জড়ানোয় আবারও নিজেকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিলেন সাকিব। তাঁরা মনে করেন, সাকিব বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিংয়ের অন্যতম সেলিব্রিটি। তাঁর দুর্নাম দেশের ক্রিকেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গত আগস্টে বেটিং সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেটউইনার নিউজের শুভেচ্ছাদূত হয়েছিলেন সাকিব। এ নিয়ে তখন ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। পরে ক্রিকেট বোর্ড এ ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নেওয়ায় সাকিব বিতর্কিত চুক্তি থেকে সরে আসেন। সেই সময় বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই, এটা (বেটউইনার) একটা বেটিং কোম্পানি। জুয়া, ক্যাসিনোর সঙ্গে এটা জড়িত। বিসিবিতে দুটো জিনিস পরিষ্কার বলা আছে, কীসের কীসের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারবে না।’
ক্রিকেটে জুয়াড়িদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা বা তাদের কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেয়েও গোপন রাখার অপরাধে সাকিবকে ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। সাকিব নিজেই আইসিসির কাছে তাঁর অপরাধের কথা স্বীকার করেছিলেন।
তাই বারবার বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ের সঙ্গে দেশের ক্রিকেটের এক নম্বর তারকা সাকিব আল হাসানের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় তাঁর ভক্তরা যেমন হতাশ তেমনি দেশের ক্রিকেট অনুরাগীরাও চিন্তিত।
অন্যান্য খবর পড়ুন:
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগে