নিখোঁজ ৭ শিক্ষার্থীর পরিবারে উৎকণ্ঠা

কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২: ১৮

কুমিল্লায় সাত কলেজছাত্র গত ১৭ দিন ধরে নিখোঁজের খবরে তোলপাড় চলছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে কোতোয়ালি মডেল থানায় জিডি করার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ওই ছাত্রদের খোঁজে পেতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এদিকে নিখোঁজ ওই ছাত্রদের বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যসহ স্বজনদের মাঝে বিরাজ করছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, এই ছাত্ররা বাড়ি ছেড়ে গিয়ে জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করেছে, নাকি তাবলিগ জামাতে গিয়েছে এসব প্রশ্ন সামনে রেখে তদন্ত চলছে। এ নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছে অভিভাবকরা।

নিখোঁজ ওই ছাত্ররা হলেন, মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে আল আমিন, নিহাল আবদুল্লাহ, মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ ওরফে রিফাত, আসসামী, সরতাজ ইসলাম ওরফে নিলয়, ইমরান বিন রহমান ওরফে শিথিল, মো. হাসিবুল ইসলাম। তারা কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, কুমিল্লা সরকারি কলেজ ও ঢাকা ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তারা গত ২৩ আগস্ট কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন।

পুলিশ ও নিখোঁজদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজ সাত কলেজ ছাত্রের পরিবার আলাদাভাবে থানায় নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে জিডি করেন। ইমরান বিন রহমান শিথিলের বাবা মজিবুর রহমান মুকুল বলেন, শিথিল আমার একমাত্র ছেলে। সে পড়াশোনা, কলেজ, কোচিং সেন্টার আর মসজিদ ছাড়া কোথায়ও যেত না। কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে ২৩ আগস্ট বিকালে বাসা থেকে বের হয়। এরপর আর বাসায় ফেরেনি। পরদিন কোতোয়ালি মডেল থানায় জিডি করি। পুলিশ র‍্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন প্রায় প্রতিদিনই আমার কাজ থেকে তথ্য নিচ্ছে। আমরাও তাঁদের সহযোগিতা করছি।

নিখোঁজদের মধ্যে ইমতিয়াজ আহম্মেদ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে। কুমিল্লা শহরে তাদের বাসা। তার বাবা মো. ফয়েজ আহম্মেদ গত ২৬ আগস্ট ছেলের নিখোঁজের বিষয়ে থানায় জিডি করেন।

নিখোঁজ আমিনুলের বাবা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আমিনুল আমার বড় ছেলে। সে আগে তাবলিগের নেতাদের সঙ্গে চিল্লায় যেত। পড়াশোনার পাশাপাশি কান্দিরপাড়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসতো। ছেলেকে খুঁজে না পাচ্ছি না। আমরা উৎকণ্ঠার মধ্যে আছি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহিদুর রহমান বলেন, নিখোঁজদের পরিবারের পক্ষ থেকে করা সাধারণ ডায়েরি মূলে তাদের সন্তানদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে আমরা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাঁদের উদ্ধার করার চেষ্টা করছি। নিখোঁজ ছাত্রদের আগের সব কললিস্ট এবং গতিবিধি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পুলিশ জানতে পেরেছে তারা বাড়ি ছাড়ার পর কুমিল্লা থেকে চাঁদপুরে যায়। এরপর চাঁদপুর রেলস্টেশন এলাকার একটি হোটেলে রাতযাপন করে। পরদিন সকালে তারা ওই হোটেল ছেড়ে যায়। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনগুলো বন্ধ থাকায় উদ্ধার কিংবা তাদের অবস্থান জানতে বিলম্ব হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

র‍্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব বলেন, ৭ কলেজ ছাত্রের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি র‍্যাব গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। তবে বলার মত উল্লেখ্যযোগ্য কোন অগ্রগতি হয়নি।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে কথা বলা নিষেধ। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের হেড কোয়ার্টার কাজ করছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত