২০৬ কেজি সোনার নিরাপত্তার ঝুঁকি দেখছে চট্টগ্রাম কাস্টমস

জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা
Thumbnail image

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিভিন্ন সময়ে আটক ২০৬ কেজি সোনার নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি দেখছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। প্রায় ১১৫ কোটি টাকা বাজারমূল্যের এই সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অস্থায়ী হেফাজতে আছে। জমাদানের প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় সংরক্ষণ ঝুঁকিমুক্ত রাখতে এসব সোনা ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বুলিয়ান ভল্টে স্থানান্তরের প্রস্তাব দিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোনা আটক হলে সঙ্গে সঙ্গে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের বুলিয়ান ভল্টে জমা করার সুযোগ রয়েছে। তবে চট্টগ্রামের শাহ আমানত কিংবা সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরে আটক চোরাচালানের সোনা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে এমন সুযোগ নেই।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের তৈরি এক প্রতিবেদনে জানা যায়, চোরাচালানের সোনা আটক হওয়ার পর সাত দিনের মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দিষ্ট প্রতিনিধির উপস্থিতিতে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বুলিয়ান ভল্টে জমা করার বিধান রয়েছে। ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে তা মানা সম্ভব হলেও দেশের অন্য বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে তা মানা যাচ্ছে না। চট্টগ্রামসহ অন্য জায়গার স্থানীয় বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে অস্থায়ী সেফ ভল্টে সিল করা বাক্সে যৌথ স্বাক্ষরে সাদা কাপড়ে মুড়িয়ে আটক সোনা রাখা হয়। জমা নেওয়ার পর এসব সোনার বারের রিসিভ কপি দেওয়া হয়, যাতে শুধু একটি নম্বর লেখা থাকে। ব্যাংকের ওই রিসিভ কপিতে সোনার বারের গুণগত মান, সত্যতা, সংখ্যা ও ওজন সম্পর্কে কোনো তথ্যই থাকে না। এমনকি সিল করা এসব বাক্সে সোনার বার বা অন্য কোন বস্তু আছে, তা-ও উল্লেখ করা হয় না। এ কারণেই ঝুঁকির বিষয়টি সামনে এনেছে কাস্টমস। সিলেটে বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়েও ৮১ কেজি সোনা জমা থাকার কথা উল্লেখ করেছে কাস্টমস।

কাস্টমসের কর্মকর্তারা বলছেন, আটক সোনার নিরাপত্তার স্বার্থে চট্টগ্রামেও ঢাকার মতো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। চট্টগ্রামে আটক সোনা ঢাকায় স্থানান্তর করতে হলে এক দিনেই র‍্যাবের সহায়তায় বিশেষ হেলিকপ্টারে করে আনতে হবে। ঢাকায় স্থায়ীভাবে জমা দেওয়ার কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম এবং কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর অথবা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ফাউজুর রহমানের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসের পক্ষ থেকে সোনার নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং তা সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।

এনবিআরের সাবেক সদস্য ও কাস্টমস কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, আটকের সময়ই সবার সামনে তা স্বর্ণের বার, নাকি অলংকার এবং পরিমাণ জিআইতে লিপিবদ্ধ করা হয়। পরে ওই জিআইয়ের নম্বরসহ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক যখন নেয়, যাচাই করেই নেয়। এ প্রক্রিয়ায় কোনো ঝুঁকি আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঝুঁকি সেভাবে নেই, যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি না করে। তবে সাধারণত এমন ঝুঁকি কেউ নিতে চাইবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত