Ajker Patrika

কর্মী আসেন নিজের খেয়ালে

খান রফিক, বরিশাল
কর্মী আসেন নিজের খেয়ালে

কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো খোলার যেমন সময়সূচি নেই, তেমনি বন্ধ করারও নেই নির্দিষ্ট সময়সীমা। হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা সময়মতো না আসায় রোগীরা তালাবদ্ধ জরাজীর্ণ ভবনের সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন। এমন দুরবস্থা চলছে বরিশাল জেলার অধিকাংশ কমিউনিটি ক্লিনিকে।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, জেলায় প্রস্তাবিত কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা ৩০৫টি। এর মধ্যে ৩০৩টি চালু রয়েছে।

সেগুলোর মধ্যে আবার সদর, আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলার ১৫টি ক্লিনিকের ভবন নিলাম ডাকা হয়েছে। চালু থাকা ক্লিনিকগুলোয় ২৯২ জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার কর্মরত রয়েছেন। পাশাপাশি শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা দেওয়ার জন্য প্রতিটি ক্লিনিকে একজন স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যাণ সহকারীর পর্যায়ক্রমে সপ্তাহে তিন দিন করে বসার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু কর্মরতদের খেয়ালখুশির কারণে  রোগীদের সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

বরিশালের হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মাউল তলা মৃধাবাড়ির ক্লিনিকের অবস্থা জরাজীর্ণ। সেখানকার ইনচার্জ ছাবিনা ইয়াছমিন ঠিকমতো আসেন না। রোগীদের অভিযোগ, বেলা তিনটায় বন্ধ করার কথা থাকলেও একটার মধ্যেই ক্লিনিক বন্ধ করে চলে যান। এ প্রসঙ্গে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার ছাবিনা ইয়াছমিন বলেন, তাঁর ক্লিনিক ভাঙাচোরা। জানালা-কপাট নেই। পানি, বাথরুমের ব্যবস্থা নেই। গতকাল রোগী এসেছেন তিন-চারজন। গত এক মাসে মোট ৭৬৬ রোগী এসেছেন বলে দাবি করেন ছাবিনা। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্যমতে, ইনচার্জ সময়মতো আসেনও না, আবার যানও আগেভাগে।

উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাবরখানা কমিউনিটি ক্লিনিক। সেখানকার ইনচার্জ নারগিস কলি গত তিন দিন আসেননি বলে রোগীদের অভিযোগ। অধিকাংশ সময়ই সকাল ১০টার দিকে আসেন ও চলে যান একটার পরপরই। এমনকি দুজন স্বাস্থ্য সহকারী মাঠ পর্যায়ে যান না। যে কারণে রোগীদের পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে।

গত মঙ্গলবার দেখা হয় রোগী রেনু আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি মাসে ২-১ বার আসি। অনেক সময় পাই, অনেক সময় লোকজন পাই না।’

কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার নারগিস কলি অবশ্য জানান, গত এক মাসে ৫৩৭ জন রোগী এসেছেন। তাঁরা যতটা সম্ভব চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।

একইভাবে জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাধা ইউনিয়নের পাংশা, পশ্চিম পাংশা ও হাদিবাসকাঠি কমিউনিটি ক্লিনিকের অবস্থাও বেহাল। সদর উপজেলার লামচরি কমিউনিটি ক্লিনিকেও স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ার অভিযোগ রোগীদের। তবে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের অনেকেই অভিযোগ করেন, সংস্কারের অভাবে জীর্ণ ভবন, ব্যবহারের অনুপযোগী শৌচাগার, শ্যালো টিউবওয়েলের কারণে ক্লিনিকগুলোর সেবা কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে।

এ ব্যাপারে বরিশাল জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন সব্যসাচী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর কার্যক্রম গতিশীল করতে তদারকি জোরদার করেছেন তাঁরা। মাসিক সমন্বয় সভায় এর কার্যক্রমের প্রতিবেদন দেওয়া হয়। যেসব এলাকার কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা বিলম্বে আসেন বা আগে চলে যান, তাঁদের বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত