Ajker Patrika

ঋণ দেওয়ার নামে ফাঁদ, টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা

হারুনুর রশিদ, রায়পুরা
ঋণ দেওয়ার নামে ফাঁদ, টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা

নরসিংদীর রায়পুরায় এনজিওর পাতা ফাঁদে পড়েছেন কয়েক গ্রামের শতাধিক গ্রাহক। স্বল্প সুদে জামানতহীন ঋণের ফাঁদ পেতে তাঁদের কাছ থেকে সঞ্চয় হিসেবে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে প্রতারক চক্র। প্রতারকদের সেই ফাঁদে পা দিয়ে সাধারণ মানুষ হারিয়েছেন নিজের কষ্টের সম্বল।

বুধবার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে জানা গেছে, এই চক্রের প্রতারণার শিকার হয়েছেন সকিনা, পপি বেগম, রুবিনার মতো শতাধিক মানুষ। তাঁদের অধিকাংশই নারী। এ সময় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, ‘স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে সচ্ছলতা ফিরবে পরিবারে। ঘুচবে অভাব নামক যন্ত্রণা।’—এমন গালভরা কথা বলে গ্রামের সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে ‘সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি’ নামের এনজিও। স্বল্প সুদে ঋণ নেওয়ার আশায় এসব মানুষ নিজেদের সঞ্চিত টাকা জমা করে এই প্রতিষ্ঠানে। গত মঙ্গলবার তাঁদের ঋণ দেওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু এর এক দিন আগেই সবকিছু গুটিয়ে নিয়ে গত সোমবার লাপাত্তা হয়ে যান প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গত মঙ্গলবার সকাল থেকেই ওই এনজিওর প্রধান কার্যালয় ফাঁকা পড়ে আছে।

শতাধিক গ্রাহককে কার্যালয়ের সামনে দেখা গেলেও দেখা মেলেনি প্রতিষ্ঠানের কাউকে।

প্রতারক চক্রটি সপ্তাহখানেক আগে পূর্বহরিপুর গ্রামে প্রবাসী আওয়াল ইসলামের ঘরে প্রতিষ্ঠানের নাম করে অফিস সাজিয়ে বসে। উপজেলার পূর্বহরিপুর, মুছাপুর, সাপমারা, বেগমাবাদ, জয়নগর, মাঝেরচর, আলগীসহ আশপাশের আরও ৪-৫টি গ্রামের নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের টার্গেট করে মাঠে নামে। দুই বছরের এককালীন এক থেকে চার লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা বলে ওই ঋণ পেতে কিছু শর্ত জুড়ে দেয় প্রতারকরা। জানানো হয়, ঋণ পেতে হলে লাখপ্রতি ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় করতে হবে। কিস্তি হিসেবে বছর শেষে গ্রাহককে সুদ দিতে হবে ৮-১২ শতাংশ হারে। এভাবে যিনি যত টাকা ঋণ নেবেন সে অনুপাতে সঞ্চয় জমা দিতে হবে। আর এই ঋণ নিতে কোনো জামানত লাগবে না। এসব কথা বিশ্বাস করে চক্রটি সঞ্চয় ও ঋণের পাস বইয়ে শতাধিক মানুষের কাছ থেকে ৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা জমা করে।

প্রাপ্ত কাগজপত্রে দেখা গেছে, ‘সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি’র প্রধান কার্যালয়  উল্লেখ করা হয়েছে সর্জনকান্দা বড় পুল, রাজবাড়ী, রেজি. নম্বর ১২৭৮৮ (৭৯৬) ২০১৪ ইং । ব্রাঞ্চ ম‍্যানেজার মো. সালাহউদ্দিন, মোবাইল নম্বর দেওয়া ছিল। তবে কল করে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ ছাড়া প্রতারক চক্রের সাত সদস্যের সবার নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়।

ভুক্তভোগী সকিনা, পপি বেগম, রুবিনা, বিলকিস বেগম, তাসলিমা, বিলকিস, জারু মিয়া, আল আমিনসহ অনেকে বলেন, ‘প্রবাসী ও ব্যবসায়ী ঋণ দেওয়ার কথা বলে তারা সঞ্চয় হিসেবে টাকা জমা করে। গত মঙ্গলবার ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। তাই অফিসে এসেছি। এসে দেখি প্রতারক চক্র লাপাত্তা। কষ্টের টাকাগুলো পেতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর হোসেন বলেন, বিষয়টি জানা নেই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত