Ajker Patrika

স্বাস্থ্যের আবজাল-রুবিনার ৩০৭ কোটি টাকা পাচার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
স্বাস্থ্যের আবজাল-রুবিনার ৩০৭ কোটি টাকা পাচার

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেন ও তাঁর স্ত্রী রুবিনা খানম অপরাধলব্ধ ৩০৭ কোটি ৬৯ লাখ ১৯ হাজার টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। এর সিংহভাগই পাচার করেছেন অস্ট্রেলিয়ায়। তদন্তে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সূত্র।

আবজাল হোসেন দুর্নীতি মামলায় কারাগারে থাকলেও রুবিনা খানম পলাতক। শোনা যায়, তিনি অস্ট্রেলিয়ায় আছেন। তিনিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক কর্মচারী। তিনি অধিদপ্তরের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন শাখার স্টেনোগ্রাফার ছিলেন। এ ছাড়া তাঁদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গেই ব্যবসা করত।

দুদক সূত্র বলেছে, এই দম্পতির বিরুদ্ধে দেশ-বিদেশে শতকোটি টাকার সম্পদ গড়ার এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে করা মামলার তদন্ত শেষ করেছে দুদক। তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সহিদুর রহমান সম্প্রতি তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে জমাও দিয়েছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, কমিশন অনুমোদন দিলে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

আবজাল-রুবিনা দম্পতির বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ জুন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ দুটি মামলা করেন সংস্থাটির উপপরিচালক তৌফিকুল ইসলাম। তিনি বর্তমানে অবসরে। পরে তদন্তের দায়িত্ব পান সহিদুর রহমান।

দুদকের সূত্র জানায়, মামলার তদন্তকালে আবজালের নামে ৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেছে। তিনি স্ত্রীর সহায়তায় বিদেশে তাঁর নামের ব্যাংক হিসাবে মালয়েশিয়ায় ৯ লাখ ২৯ হাজার ৬৭০ রিঙ্গিত, অস্ট্রেলিয়ায় ৫৬ লাখ ৮৮ হাজার ৬৬৭ অস্ট্রেলিয়ান ডলার ও ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৫৫ কানাডিয়ান ডলার এবং কানাডায় ২ লাখ ২৩ হাজার ৬৫৫ কানাডিয়ান ডলার পাচার করে জমা করেন। পরে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৫৫ কানাডিয়ান ডলার অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর করেন।

তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে আরও জানা যায়, আবজাল দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে অনৈতিক প্রক্রিয়ায় আর্থিকভাবে লাভবান হওয়াসহ অবৈধ আয়কে বৈধ করতে তাঁর ব্যাংক হিসাবে ১৭ কোটি ১৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা জমা করেন। পরে ওই হিসাবে ১৯ লাখ ৩ হাজার টাকা স্থিতি রেখে বাকি টাকা তুলে নেন। রুবিনার নামে ৯ কোটি ৮৬ লাখ ৮২ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। দুদকের কাছে তিনি ৫ কোটি ৭৯ লাখ ২৭ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। আয়কর নথিতে রুবিনার নামে ৩২ কোটি ৪১ লাখ ৮৭ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

দুদক সূত্র জানায়, রুবিনাদের প্রতিষ্ঠান রহমান ট্রেডের নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৭৪ কোটি ৩৪ লাখ ৮ টাকা গোপন করাসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। রুবিনার নামে মোট ১০৬ কোটি ৭৫ লাখ ৯৫ টাকার স্থাবর, অস্থাবর সম্পদ বা অপরাধলব্ধ আয়ের তথ্য পাওয়া গেছে। রুবিনা, আবজাল ও বিভিন্ন ব্যক্তির নামে এবং তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে অপরাধলব্ধ সর্বমোট ৩০৭ কোটি ৮৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা জমা হয়। পরে ১৭ লাখ ৩ হাজার টাকা ব্যাংক হিসাবে রেখে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ৩০৭ কোটি ৬৯ লাখ ১৯ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়, যার পুরোটাই বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত