Ajker Patrika

কেএনএফকে অস্ত্র দিচ্ছে বিদেশিরা, কঠোর সরকার

সোহেল মারমা, জমির উদ্দিন ও বাসু দাশ, বান্দরবান থেকে
কেএনএফকে অস্ত্র দিচ্ছে বিদেশিরা, কঠোর সরকার

বান্দরবানে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ব্যাংক ও থানায় হামলার ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকার। সন্ত্রাসীদের হাতে পাশের কোনো দেশ থেকে যে অস্ত্র আসছে, সেই ইঙ্গিতও এসেছে সরকারের ভেতর থেকে। এদিকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার এবং সন্ত্রাস নির্মূলে পাহাড়ে শুরু হয়েছে যৌথ বাহিনীর অভিযান। তার আগে মামলা হয়েছে সাতটি। অবশ্য এসব মামলায় কেএনএফের কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। 

যৌথ বাহিনীর অভিযান
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গতকাল সকালে রুমা পরিদর্শনে যান। এ সময় তিনি যৌথ বাহিনীর অভিযানের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘অস্ত্র–পোশাকসহ তারা ঢুকবে, আর আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী বসে থাকবে, তা কাম্য নয়। এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে যাব। কোনোক্রমে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে দেব না।’ হামলার ঘটনায় কোনো গোয়েন্দা ব্যর্থতা রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সবকিছু দেখব। কারও কোনো গাফিলতি ছিল কি না, বের করব। কোন জায়গা থেকে ফেল করেছে, আমরা দেখব। আগে দেখে নিই, তারপর ব্যবস্থা নেব।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এখানে নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে, তারা তাদের মতো ব্যবস্থা নেবে। আমরা আর কোনো জিনিসকে আন-চ্যালেঞ্জড হতে দেব না। উৎসটা কোথায়, সবগুলো আমরা বের করব।’

এর আগে গত শুক্রবার র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, কেএনএফের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে যৌথ বাহিনী। এই অভিযানে র্যাব ছাড়াও অংশ নিচ্ছে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ। লুট হওয়া ১৪টি অস্ত্র উদ্ধার এবং কেএনএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নির্মূল না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে। 

কেএনএফের হাতে বিদেশের অস্ত্র
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ গতকাল চট্টগ্রামের ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, কেএনএফ পাশের একটি দেশের সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে ব্যাংক লুট, ডাকাতিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তাদের সঙ্গে আশপাশের সন্ত্রাসীদেরও যোগাযোগ আছে। তিনি বলেন, পাশের দেশে যারা ইতিমধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছিল, তাদের অস্ত্রশস্ত্র এদের কাছে এসেছে বলে জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে। তাদের নির্মূল করতে সরকার বদ্ধপরিকর। 

সাত মামলা দায়ের
বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংকে হামলা, টাকা ও অস্ত্র লুট এবং ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অপহরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত সাতটি মামলা হয়েছে। তবে এসব মামলায় কেএনএফের কোনো নেতা ও সশস্ত্র সদস্যদের নাম উল্লেখ করা হয়নি। মামলাগুলোর মধ্যে রুমা থানায় হয়েছে চারটি, থানচিতে তিনটি। এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা প্রায় ১৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত শুক্রবার মধ্যরাতে বান্দরবান জেলা পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে মামলার বিষয়টি জানানো হয়। বান্দরবান থানার ওসি জসিম উদ্দিন বলেছেন, হামলার ঘটনায় থানচি থানায় আরও একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। 

থমথমে বান্দরবান
পরপর হামলার ঘটনায় বান্দরবানে জনমনে আতঙ্ক কাটছেই না। তবে গতকাল পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। আজকের পত্রিকার থানচি প্রতিনিধি জানান, সকালে থানচির প্রধান বাজারে দোকানপাট খুলেছে। তবে রোয়াংছড়ির দেবতাখুমের দিকে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। কাউকে ওই দিকে যেতে দিচ্ছে না প্রশাসন। সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মো. সিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনার পর থেকেই রোয়াংছড়ির দেবতাখুমের দিকে গাড়ি চলাচল করতে দিচ্ছে না। রোয়াংছড়ি পর্যন্ত শুধু যেতে দিচ্ছে।

থানচির দিকে চলাচল করা বাসের লাইনম্যান মো. শহীদ বলেন, থানচির দিকে বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে যাত্রী আগের চেয়ে কমে গেছে।

এ বিষয়ে বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. শাহ আলম বলেন, সব জায়গায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত