মোংলা সেতুর জরিপ শুরু

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২২, ০৭: ১৫
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ০৮

দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর বাগেরহাটের মোংলা। এই বন্দর ঘিরে এক পাড়ে গড়ে উঠেছে স্থানীয়দের বহুমুখী ব্যবসা। অন্য পাড়ে বন্দর এলাকা, ইপিজেডসহ দেশি-বিদেশিদের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। মাঝখানে বয়ে গেছে মোংলা নদী। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই নদীকে বাধা মনে করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

১৯৫০ সালে মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠা হয়। এর পর থেকে ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফেরাতে মোংলা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয়রা। অবশেষে স্থানীয়দের সেই দাবি আলোর মুখ দেখছে। সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে এ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে নদীর ওপর প্রাথমিক জরিপ চালাচ্ছে একদল সার্ভেয়ার।

সেতু বিভাগের সার্ভেয়ার সমন্বয়কারী মো. হাফিজুর রহমান অন্তর বলেন, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হিসেবে এই জরিপ চালানো হচ্ছে। আর এই জরিপের ওপর নির্ভর করে মোংলা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হবে। কঠোর পরিশ্রম ও শতভাগ নিখুঁত তথ্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ে সবার সঙ্গে কথা বলে তাঁরা পজিটিভ প্রতিবেদন তৈরি করছেন বলে জানান।

মোংলা উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা ও বাগেরহাট জেলার ব্যস্ততম নদী মোংলা। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৫ কিলোমিটার ও গড় প্রস্থ ২৪৫ মিটার। নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার (পাকানো)। বাগেরহাটের পশ্চিম দিকের অনেকগুলো খাল বিশেষত কুমারখালী নদী, ফয়লা নদীর জলধারা রামপাল উপজেলার কাছে একত্রিত হয়ে মোংলা নাম ধারণ করেছে।

আপাতত নদীটি আরও দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে বন্দরনগরী মোংলার পাশে পশুর নদীতে পতিত হয়েছে। নদীটির উজানের তুলনায় ভাটির দিক বেশি প্রশস্ত। নদীতে সারা বছর পানিপ্রবাহ থাকে এবং ছোটবড় নৌযান চলাচল করে। এই নদী বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের প্রথম শ্রেণির নৌপথ হিসেবে স্বীকৃত।

এই নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য গত ৪ জানুয়ারি থেকে প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু হয়েছে। সেতু কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা মাঠপর্যায়ের পর্যবেক্ষণসহ নানা রকম তথ্য যাচাই করে প্রতিবেদন তৈরি করছেন।

মোংলা নদীতে চলমান একমাত্র ফেরিটি শুধুমাত্র জোয়ারের সময় চলাচল করে। ভাটির সময় নাব্যতাসংকটে চলতে পারে না। যে কারণে পণ্য পরিবহনে বড় বাধা হওয়ায় পচনশীল পণ্য গাড়িতেই পচে নষ্ট হয় বলে জানান মাছ ব্যবসায়ী কায়কোবাদ শেখ ও সত্তার ইজারদার।

নদীর ওপারে পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত নৌবাহিনীর স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র শোভন আকন বলে, ‘বর্ষাকালে নৌকায় করে এই নদী পার হতে প্রচণ্ড ভয় লাগে। আবার অনেক সময় ঘাটে মাঝি না থাকায় কলেজে যেতে দেরি হয়, ক্লাস মিস হয়। এখানে একটি সেতু হলে আমাদের অনেক উপকার হবে।’

সেতুটি নির্মিত হলে আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে বলে জানান মোংলা পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ডিজাইন) মো. লিয়াকত আলী বলেন, মোংলা নদীতে সেতু নির্মাণ করার জন্য সেতু কর্তৃপক্ষের মাস্টারপ্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখন এর জন্য প্রাথমিক জরিপ চলছে। জরিপের প্রতিবেদন পাওয়ার পরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত