ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে গত সোমবার (৫ আগস্ট)। এরপর থেকে দেশে কার্যত ভেঙে পড়ে দেশের আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের মাধ্যমে আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে। দেশের প্রায় সবগুলো থানায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার সুযোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাসহ মন্দির–বসতবাড়ি ভাঙচুরসহ লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
এসব ঘটনার বিপরীতে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশেষ করে এক্সে (সাবেক টুইটার) ছড়িয়েছে বিভিন্ন ভুল তথ্য সংবলিত দাবি, অপ্রাসঙ্গিক ভিডিও। সামাজিক মাধ্যম এক্সে এ জাতীয় পোস্টদাতাদের অনেকেরই অবস্থান ভারত বলে জানা গেছে।
এক্সে এসব পোস্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ যেমন: #HindusUnderAttack, #HindusUnderAttackInBangladesh, #BangladeshHindus ইত্যাদি ব্যবহার করতে দেখা যায়।
এমন কিছু দাবি ফ্যাক্টচেক করে দেখেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার ভিডিওকে নিপীড়িত হিন্দু নারী দাবিতে প্রচার
বিক্রম প্রতাপ সিং নামের একটি ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে গতকাল সোমবার (১২ আগস্ট) আজমেরী হক বাঁধনের বক্তব্যের ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ পোস্ট করে দাবি করা হয়, ‘এটি একজন হিন্দু নারীর আর্তনাদ। হিন্দুরা বাংলাদেশে আতঙ্কে আছে। তাঁদের সামনে দুটি পথ খোলা। হয় বাংলাদেশ ছাড়ো নয়তো ধর্মান্তরিত হও।’
ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ১ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন দৃশ্যমাধ্যম শিল্পী সমাজ। এ সমাবেশে অংশ নেন অভিনেতা মোশাররফ করিম, সিয়াম আহমেদ, জাকিয়া বারী মম, রোবেনা রেজা জুঁই, নির্মাতা অমিতাভ রেজাসহ অনেক শোবিজ তারকা। এতে অংশ নেন অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধনও। সেখানে বক্তব্য দেওয়ার ফুটেজ ব্যবহার করে বাঁধনকে হিন্দু নারী হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে এক্সে।
মাজারে অগ্নিসংযোগের ভিডিওকে ঠাকুরগাঁওয়ে মন্দিরে আগুন দেওয়া এবং প্রতিমা ভাঙচুরের দাবিতে প্রচার
‘বাবা বানারস (Baba Banaras)’ নামের একটি ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে গত ১০ আগস্ট ৩০ সেকেন্ডের একটি টুইট করে দাবি করা হয়, ঠাকুরগাঁওয়ে হিন্দু মন্দিরে আগুন দিয়েছে মুসলিমরা। এ সময় প্রতিমা ভাঙচুর ও পূজারিকে হত্যা করা হয়। টুইটটিতে আরও দাবি করা হয়, গত কদিনে বাংলাদেশে ২ হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে হত্যা করা হয়েছে, কয়েক শ হিন্দু নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। অনেক হিন্দু মন্দির ও হিন্দুদের বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভিডিওটি যাচাইয়ে এতে ‘সুন্নি টিভি’ নামের একটি চ্যানেলের লোগো দেখা যায়। জ্বলন্ত স্থাপনাটির গায়ে বাংলায় ‘হযরত গরীব শাহ রহঃ মাজার শরীফ’ লেখা দেখা যায়। এ থেকে স্পষ্ট, এটি কোনো মন্দির নয়। ‘সুন্নি টিভি’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ৭ আগস্ট ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘আন্দোলনটা কি মাজার ভাঙার জন্য করা হয়েছিল?’
অনুসন্ধানে জানা যায়, মাজারটি যশোরের বকুলতলায় অবস্থিত।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আজ মঙ্গলবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানায়, গত ৪ আগস্ট বিকেল থেকে সংগঠনটি অন্তত ৫টি জেলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়কে টার্গেট করে হামলা ও হুমকির নানান ঘটনার সংবাদ জানতে পারে। এর পরদিন ৫ আগস্ট থেকে তা তীব্রতর হয়।
সংগঠনটির সূত্র ও সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৫০ টিরও অধিক জেলায় সাম্প্রদায়িক অপশক্তির মূল লক্ষ্য ছিল সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, বসতভিটা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়। এসবে হামলা হয়েছে, ব্যাপক লুটপাট হয়েছে, কোথাও কোথাও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, জমিজমা দখল করা হয়েছে, নারীদের নির্যাতন করা হয়েছে এবং হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। চাঁদাবাজি, দেশ ছাড়ার হুমকি, জমি দখল ও দখলের চক্রান্ত আজও অব্যাহত আছে।
বিজ্ঞপ্তিটিতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া হিন্দুদের কোনো সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। পাশাপাশি কোনো নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন—এমন তথ্যও নেই।
হিন্দু ধর্মাবলম্বী সরকারি চাকরিজীবীদের অবসর নিতে বাধ্য করা হচ্ছে!
‘মেলাউন’ নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টে আজ মঙ্গলবার ৫২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও টুইট করে দাবি করা হয়, হিন্দু ধর্মাবলম্বী সরকারি চাকরিজীবীদের অবসর নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। ভিডিওটিতে দুজন নারীকে পদত্যাগ করতে দেখা যাচ্ছে। কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানে ফেসবুকে ভিডিও দুটি পাওয়া যায়। এর মধ্যে প্রথম ভিডিওটি ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আমেনা বেগমের পদত্যাগের।
দ্বিতীয়টি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষিকা ফারহানা খানমের পদত্যাগের। দুজনের নাম দেখেই নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, তাঁরা ইসলাম ধর্মাবলম্বী।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক পদে থাকা শিক্ষকেরা পদত্যাগ করছেন। কোথাও তাঁরা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন আবার কোথাও তাঁদের পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। এক্সে ভাইরাল ভিডিও দুটি এমন প্রেক্ষাপটেই ধারণ করা।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা চালিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
অশ্বিনী উপাধ্যায় (Ashwini Upadhyay) নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে ১ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও টুইট করে দাবি করা হয়, ‘কোনো কোনো মুসলিম বলছেন বাংলাদেশে হিন্দুরা নাকি নিরাপদ! দেখুন তাঁরা কতটা নিরাপদ! দেশটির সেনাবাহিনীই হিন্দু মারছে।’
ভাইরাল ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটির সঙ্গে হিন্দু নিধনের কোনো সম্পর্ক নেই। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশের অনুপস্থিতিতে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল ভিডিওটি এমনই একটি ঘটনার। অনুসন্ধানে গত ১০ আগস্ট ‘সালমান আহমেদ নায়েব’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘ডাকাতের অ্যাপিসোড শুরু হয়ে গেছে, সঙ্গে আর্মিদের খেলাও।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইসলাম ধর্মাবলম্বী ছাত্রলীগ নেত্রীকে হেনস্তার ভিডিওকে হিন্দু নির্যাতনের দাবিতে প্রচার
‘অশ্বিনী শ্রীবাস্তব (Ashwini Shrivastava) ’ নামের একটি ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৯ আগস্ট ৪১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও টুইট করে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে নির্যাতনের শিকার এক হিন্দু নারী। তাঁকে ইসলাম গ্রহণের জন্য নির্যাতন করা হচ্ছে। ভাইরাল ভিডিওটিতে হেনস্তার শিকার তরুণী বোরকা পড়ে আছেন। পরে ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা। ইউটিউব ও ফেসবুকে এ ঘটনার একাধিক ভিডিও পাওয়া যায়।
ভিডিওগুলোতে তরুণীটিকে ছাত্রলীগ নেত্রী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতীয় ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান বুম লাইভ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয় এক সাংবাদিকের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ভিডিওটির সঙ্গে সাম্প্রদায়িক হামলার কোনো সম্পর্ক নেই। ওই তরুণীর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পোলিং এজেন্ট দায়িত্ব পালনের পরিচয়পত্রও পাওয়া যায়। ওই পরিচয়পত্র অনুযায়ী, এই তরুণীর নাম আফসানা ইবাদ।
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে গত সোমবার (৫ আগস্ট)। এরপর থেকে দেশে কার্যত ভেঙে পড়ে দেশের আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের মাধ্যমে আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে। দেশের প্রায় সবগুলো থানায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার সুযোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাসহ মন্দির–বসতবাড়ি ভাঙচুরসহ লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
এসব ঘটনার বিপরীতে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশেষ করে এক্সে (সাবেক টুইটার) ছড়িয়েছে বিভিন্ন ভুল তথ্য সংবলিত দাবি, অপ্রাসঙ্গিক ভিডিও। সামাজিক মাধ্যম এক্সে এ জাতীয় পোস্টদাতাদের অনেকেরই অবস্থান ভারত বলে জানা গেছে।
এক্সে এসব পোস্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ যেমন: #HindusUnderAttack, #HindusUnderAttackInBangladesh, #BangladeshHindus ইত্যাদি ব্যবহার করতে দেখা যায়।
এমন কিছু দাবি ফ্যাক্টচেক করে দেখেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার ভিডিওকে নিপীড়িত হিন্দু নারী দাবিতে প্রচার
বিক্রম প্রতাপ সিং নামের একটি ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে গতকাল সোমবার (১২ আগস্ট) আজমেরী হক বাঁধনের বক্তব্যের ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ পোস্ট করে দাবি করা হয়, ‘এটি একজন হিন্দু নারীর আর্তনাদ। হিন্দুরা বাংলাদেশে আতঙ্কে আছে। তাঁদের সামনে দুটি পথ খোলা। হয় বাংলাদেশ ছাড়ো নয়তো ধর্মান্তরিত হও।’
ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ১ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন দৃশ্যমাধ্যম শিল্পী সমাজ। এ সমাবেশে অংশ নেন অভিনেতা মোশাররফ করিম, সিয়াম আহমেদ, জাকিয়া বারী মম, রোবেনা রেজা জুঁই, নির্মাতা অমিতাভ রেজাসহ অনেক শোবিজ তারকা। এতে অংশ নেন অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধনও। সেখানে বক্তব্য দেওয়ার ফুটেজ ব্যবহার করে বাঁধনকে হিন্দু নারী হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে এক্সে।
মাজারে অগ্নিসংযোগের ভিডিওকে ঠাকুরগাঁওয়ে মন্দিরে আগুন দেওয়া এবং প্রতিমা ভাঙচুরের দাবিতে প্রচার
‘বাবা বানারস (Baba Banaras)’ নামের একটি ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে গত ১০ আগস্ট ৩০ সেকেন্ডের একটি টুইট করে দাবি করা হয়, ঠাকুরগাঁওয়ে হিন্দু মন্দিরে আগুন দিয়েছে মুসলিমরা। এ সময় প্রতিমা ভাঙচুর ও পূজারিকে হত্যা করা হয়। টুইটটিতে আরও দাবি করা হয়, গত কদিনে বাংলাদেশে ২ হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে হত্যা করা হয়েছে, কয়েক শ হিন্দু নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। অনেক হিন্দু মন্দির ও হিন্দুদের বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভিডিওটি যাচাইয়ে এতে ‘সুন্নি টিভি’ নামের একটি চ্যানেলের লোগো দেখা যায়। জ্বলন্ত স্থাপনাটির গায়ে বাংলায় ‘হযরত গরীব শাহ রহঃ মাজার শরীফ’ লেখা দেখা যায়। এ থেকে স্পষ্ট, এটি কোনো মন্দির নয়। ‘সুন্নি টিভি’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ৭ আগস্ট ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘আন্দোলনটা কি মাজার ভাঙার জন্য করা হয়েছিল?’
অনুসন্ধানে জানা যায়, মাজারটি যশোরের বকুলতলায় অবস্থিত।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আজ মঙ্গলবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানায়, গত ৪ আগস্ট বিকেল থেকে সংগঠনটি অন্তত ৫টি জেলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়কে টার্গেট করে হামলা ও হুমকির নানান ঘটনার সংবাদ জানতে পারে। এর পরদিন ৫ আগস্ট থেকে তা তীব্রতর হয়।
সংগঠনটির সূত্র ও সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৫০ টিরও অধিক জেলায় সাম্প্রদায়িক অপশক্তির মূল লক্ষ্য ছিল সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, বসতভিটা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়। এসবে হামলা হয়েছে, ব্যাপক লুটপাট হয়েছে, কোথাও কোথাও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, জমিজমা দখল করা হয়েছে, নারীদের নির্যাতন করা হয়েছে এবং হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। চাঁদাবাজি, দেশ ছাড়ার হুমকি, জমি দখল ও দখলের চক্রান্ত আজও অব্যাহত আছে।
বিজ্ঞপ্তিটিতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া হিন্দুদের কোনো সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। পাশাপাশি কোনো নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন—এমন তথ্যও নেই।
হিন্দু ধর্মাবলম্বী সরকারি চাকরিজীবীদের অবসর নিতে বাধ্য করা হচ্ছে!
‘মেলাউন’ নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টে আজ মঙ্গলবার ৫২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও টুইট করে দাবি করা হয়, হিন্দু ধর্মাবলম্বী সরকারি চাকরিজীবীদের অবসর নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। ভিডিওটিতে দুজন নারীকে পদত্যাগ করতে দেখা যাচ্ছে। কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানে ফেসবুকে ভিডিও দুটি পাওয়া যায়। এর মধ্যে প্রথম ভিডিওটি ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আমেনা বেগমের পদত্যাগের।
দ্বিতীয়টি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষিকা ফারহানা খানমের পদত্যাগের। দুজনের নাম দেখেই নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, তাঁরা ইসলাম ধর্মাবলম্বী।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক পদে থাকা শিক্ষকেরা পদত্যাগ করছেন। কোথাও তাঁরা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন আবার কোথাও তাঁদের পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। এক্সে ভাইরাল ভিডিও দুটি এমন প্রেক্ষাপটেই ধারণ করা।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা চালিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
অশ্বিনী উপাধ্যায় (Ashwini Upadhyay) নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে ১ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও টুইট করে দাবি করা হয়, ‘কোনো কোনো মুসলিম বলছেন বাংলাদেশে হিন্দুরা নাকি নিরাপদ! দেখুন তাঁরা কতটা নিরাপদ! দেশটির সেনাবাহিনীই হিন্দু মারছে।’
ভাইরাল ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটির সঙ্গে হিন্দু নিধনের কোনো সম্পর্ক নেই। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশের অনুপস্থিতিতে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল ভিডিওটি এমনই একটি ঘটনার। অনুসন্ধানে গত ১০ আগস্ট ‘সালমান আহমেদ নায়েব’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘ডাকাতের অ্যাপিসোড শুরু হয়ে গেছে, সঙ্গে আর্মিদের খেলাও।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইসলাম ধর্মাবলম্বী ছাত্রলীগ নেত্রীকে হেনস্তার ভিডিওকে হিন্দু নির্যাতনের দাবিতে প্রচার
‘অশ্বিনী শ্রীবাস্তব (Ashwini Shrivastava) ’ নামের একটি ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৯ আগস্ট ৪১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও টুইট করে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে নির্যাতনের শিকার এক হিন্দু নারী। তাঁকে ইসলাম গ্রহণের জন্য নির্যাতন করা হচ্ছে। ভাইরাল ভিডিওটিতে হেনস্তার শিকার তরুণী বোরকা পড়ে আছেন। পরে ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা। ইউটিউব ও ফেসবুকে এ ঘটনার একাধিক ভিডিও পাওয়া যায়।
ভিডিওগুলোতে তরুণীটিকে ছাত্রলীগ নেত্রী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতীয় ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান বুম লাইভ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয় এক সাংবাদিকের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ভিডিওটির সঙ্গে সাম্প্রদায়িক হামলার কোনো সম্পর্ক নেই। ওই তরুণীর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পোলিং এজেন্ট দায়িত্ব পালনের পরিচয়পত্রও পাওয়া যায়। ওই পরিচয়পত্র অনুযায়ী, এই তরুণীর নাম আফসানা ইবাদ।
ইউটিউবে ‘Chetona।। চেতনা’ নামের একটি চ্যানেলে ‘ভয়ংকর তথ্য, মাহফুজ আফগান ট্রেনিংপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক।’ শিরোনামে পোস্ট করা একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন পোস্টেও সূত্র হিসেবে এই ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে। গত শনিবার (২৩ নভেম্বর) প্রায় ৯ মিনিটের ভিডিওটি চ্যানেলটিতে পোস্ট করা হয়।
১ ঘণ্টা আগেনোয়াখালী সদর উপজেলার দুই নং দাদপুর নলুয়া বাজার এলাকায় তিন যুবলীগ নেতা–কর্মী নির্যাতন করে হত্যা করার দাবিতে ফেসবুকে বেশ কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিগুলোর একটিতে দেখা যাচ্ছে, তিন ব্যক্তিকে শুইয়ে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে দুজন প্রায় অর্ধনগ্ন। একটিতে ছবিতে একজনের চেহারা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আরেকটি ছবিতে কিরিচ ও
৫ ঘণ্টা আগেফ্যাক্টচেক, সোশ্যাল মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ভাইরাল, ভুয়া পোস্ট, সংঘর্ষ, রাজধানী, সেনাবাহিনী, বিক্ষোভ, রিকশা
১ দিন আগেদীপ্তির বক্তব্য দাবিতে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের নাম ও লোগোযুক্ত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। দীপ্তি চৌধুরীর ছবিযুক্ত ফটোকার্ডটিতে লেখা, ‘আমার নানীর ফুফাতো বোনের স্বামী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।’
১ দিন আগে