পীরগঞ্জের পূর্ণিমা রাণীর ছবি নয় এটি

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ০৩
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২২, ১৯: ৪৫

সম্প্রতি ফেসবুকে একজন নারীর ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, তিনি পীরগঞ্জে ধর্মীয় উসকানীর ঘটনার ভূক্তভোগী। পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে, ওই নারীর নাম পূর্ণিমা রাণী।

পূর্ণিমার উক্তি দাবি করে ক্যাপশনে লেখা হচ্ছে, ‘পূর্ণিমা রাণী বলেন, হামলাকারীরা বাড়িতে ঢুকে তার দুই তরুণী মেয়ে কোথায়, জানতে চায়। ঘরে ঢুকে ভাঙচুর করে টাকা, গরু নিয়ে যায়। ঘরে আগুন লাগিয়ে যায়।’

ফেসবুকে ১৮ অক্টোবর থেকে এই ছবি পোস্ট করতে দেখা যাচ্ছে। প্রতিমুহুর্তে ছবিটি পোস্ট ও শেয়ার করার সংখ্যা বাড়ছে। 

২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর বিডিনিউজে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়ফ্যাক্টচেক
রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখা যায়, ছবিটি পুরোনো এবং ভিন্ন ঘটনার। ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর বিডিনিউজে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

ওই নারীর একই মুহুর্তে তোলা আরেকটি ছবি ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর ডেইলি স্টারে প্রকাশিত প্রতিবেদনে খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন দুটি থেকে জানা যায়, মূলত, ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননামূলক পোস্টের প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর রংপুর সদরে কয়েক শ মানুষ একটি গ্রামে হামলা চালায়। ওই গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কিছু লোক বাস করতেন। ওই সময় পুলিশের গুলিতে অন্তত একজন নিহত হয়েছিল।

ফেসবুকে সম্প্রতি ভাইরাল পোস্টগুলোতে পূর্ণিমা রানীর বক্তব্য দাবিতে যে উক্তি লেখা হচ্ছে, সেটি কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে খুঁজে পাওয়া যায় ।

২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে পূর্ণিমা রাণীর উক্তিটি খুঁজে পাওয়া যায়‘কী দোষ করছিলাম, কেন আমাদের সব শেষ করে দিল’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে পূর্ণিমা রানী নামে এক নারীর বক্তব্য লেখা হয়।

ওই প্রতিবেদনে পূর্ণিমা রানী বলেন, ‘হামলাকারীরা বাড়িতে ঢুকে তাঁর দুই তরুণী মেয়ে কোথায়, তা জানতে চায়। ঘরে ঢুকে ভাঙচুর করে ৫০ হাজার টাকা ও একটি গরু নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। গ্রামের নিরঞ্জন রায় বলেন, ১৫টি পরিবারের ২১টি বসতঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। গ্রামের অন্তত ৫০টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। হামলাকারীরা অন্তত ২৫টি গরু ও ১০টি ছাগল নিয়ে গেছে।’

ওই প্রতিবেদনে পূর্ণিমা রানীর কোনো ছবি প্রকাশ করা হয়নি। প্রথম আলোর ইউটিউব চ্যানেলে একই বিষয়ে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদনে কয়েকজন নারীকে দেখা গেলেও ফেসবুকে প্রচারিত পূর্ণিমা রাণীর ছবির সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সিদ্ধান্ত
সম্প্রতি ফেসবুকে ক্রন্দনরত যে নারীর ছবি ভাইরাল হয়েছে তিনি পীরগঞ্জে ধর্মীয় সহিংসতায় ভূক্তভোগী পুর্ণিমা রাণী নন। ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর রংপুর সদরে অন্য একটি সহিংসতার ঘটনায় ভূক্তভোগী নারীর ছবি এটি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে, তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা—[email protected]

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত