ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
মানুষ একদিকে যেমন ভোজনরসিক, তেমনি খাদ্য নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রচলিত আছে বিভিন্ন বিশ্বাস-ধারণা। সংস্কৃতি, শিক্ষা, অর্থনীতি, পরিবেশ, মানবীয় আচরণসহ নানা পারিপার্শ্বিক বিষয় এসব ধারণাকে পাকাপোক্ত করেছে। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যেও খাদ্য নিয়ে এমন ট্যাবু, মিথ প্রচলিত আছে। এর মধ্যে অন্যতম আনারসের সঙ্গে দুধ খাওয়া। বলা হয়, ‘দুধ ও আনারস একসঙ্গে খেলে বমি, সংক্রমণ, ডায়রিয়া, মাথাব্যথা এবং এমনকি পাকস্থলীর ব্যথায় আক্রান্ত’ হওয়ার কথা বলা হয়। কারণ, ‘আনারসে থাকা ব্রোমালেইন এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড একসঙ্গে মিশলে বিষক্রিয়া হয়’। কখনো কখনো আনারসের সঙ্গে দুধ খেয়ে মৃত্যু হয়েছে—এমন সংবাদও সংবাদমাধ্যমে প্রচার হতে দেখা যায়। তাই একসঙ্গে দুধের সঙ্গে আনারস খেতে বারণ করা হয়। কিন্তু এই বারণের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে?
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালে ২০১৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গবেষক ড. মো. মাহবুবুর রহমান একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে দুধ ও আনারস না খাওয়ার ট্যাবু নিয়ে করা এই গবেষণায় ড. মো. মাহবুবুর রহমান লেখেন, দুধ ও আনারস না খাওয়ার ট্যাবু দীর্ঘদিন ধরে প্রচার হয়ে আসলেও এর সত্যতা অনুসন্ধানে কোনো গবেষণা পাওয়া যায়নি।
গবেষণায় ড. মো. মাহবুবুর রহমান দুধ ও আনারস একসঙ্গে খেলে বিষক্রিয়া বা মৃত্যু হতে পারে—এই দাবির সত্যতা যাচাইয়ে ৪০টি ইঁদুরকে চারটি দলে ভাগ করে তাদের বিভিন্ন ঘনমাত্রায় দুধ ও আনারসের রস খেতে দেন। একই সময়ে দুই পুষ্টি উপাদান খেয়ে ইঁদুরগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ ছিল। এ সময় কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে দুধ ও আনারস একসঙ্গে না খাওয়া প্রসঙ্গে প্রচলিত ধারণাটি ভুল। বিষাক্ততা-সম্পর্কিত ক্লিনিক্যাল লক্ষণ, হেমাটোলজিকাল এবং জৈব রাসায়নিক প্যারামিটার, মোটাদাগ ও আণুবীক্ষণিক ফলাফল অনুযায়ী, একই সঙ্গে আনারস এবং দুধ পান বিষক্রিয়া তৈরি করে না।
স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইনের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আনারস ও দুধ একসঙ্গে গ্রহণ না করা এবং এই দুইয়ের মিশ্রণ বিষক্রিয়া ঘটায় এবং মৃত্যু পর্যন্ত হওয়ার দাবিটি কেবল বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী প্রচলিত ধারণা। তবে এই ধারণাকে সমর্থন করার মতো কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। প্রকৃতপক্ষে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফল আনারস মিষ্টি এবং অম্লীয় স্বাদের জন্য বিখ্যাত। এটি কলা ও লেবুজাতীয় ফলের পরে বিশ্বের তৃতীয় জনপ্রিয় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফল। অপর দিকে একমাত্র দুধেই একসঙ্গে তিনটি পুষ্টি উপাদান ফ্যাট, প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট খুঁজে পাওয়া যায়। পাশাপাশি একাধিক ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করে দুধ। তাই খাবার দুটি একসঙ্গে গ্রহণ মানুষের জন্য নিরাপদ।
একই প্রতিবেদনে হেলথ লাইন জানায়, আনারসের সঙ্গে দুধ মেশানোর ফলে কখনো কখনো দুধে ছানা পড়ে যেতে পারে। দুধের এই অবস্থাকে অনেকেই দুধ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সঙ্গে মিলিয়ে ফেলে। তবে দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য হলো, খাবারের পচন সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার অত্যধিক বৃদ্ধির কারণে দুধ নষ্ট হয়, অন্যদিকে দুধে ছানা পড়ে আনারসে থাকা এনজাইম ব্রোমেলেন কারণে। নষ্ট হয়ে যাওয়া দুধ পান অনিরাপদ হলেও ছানা পড়া দুধ পান নিরাপদ। ইন্দোনেশিয়ায় পনির তৈরির সময় দুধের সঙ্গে আনারসের রস মেশানো খুব সাধারণ ঘটনা।
ড. মো. মাহবুবুর রহমানও তাঁর গবেষণাতেও উল্লেখ করেন, পৃথিবীর অনেক দেশে দুধ ও আনারস একসঙ্গে মিশিয়ে সুস্বাদু খাবার তৈরি করা হয়। এমন কিছু রেসিপি দেখুন এখানে, এখানে।
বিজ্ঞানবিষয়ক ওয়েবসাইট বিজ্ঞানচিন্তা থেকে দুধ ও আনারস একসঙ্গে না খাওয়ার দাবিটির সূচনা প্রসঙ্গে কিছু ধারণা পাওয়া যায়। ওয়েবসাইটটিতে বলা হয়, দুধ-আনারসে বিষক্রিয়া? কথাটা সত্য নয়। আনারসের সঙ্গে গরুর দুধের কোনো শত্রুতা নেই। বিষক্রিয়ারও কোনো আশঙ্কা নেই। মানুষ মারা যাওয়ার মতো ঘটনার সুযোগ নেই। তবে কারও যদি ‘ল্যাকটোজ ইন টলারেন্স’ থাকে, তাহলে সমস্যা হতে পারে। দুধের একটি মূল উপাদান হলো ল্যাকটোজ। অনেকের পাকস্থলী ল্যাকটোজ পরিপাক করতে পারে না। তাই দুধ খেলে বমি হতে পারে। আর যদি এর আগে-পরে ঘটনাক্রমে আনারস খেয়ে থাকে, মনে হবে দুধ-আনারসের জন্যই দুর্ভোগ! হয়তো কোনো কালে কারও দুধ-আনারসে প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। হয়তো তার ছিল ল্যাকটোজ ইন টলারেন্স। চিকিৎকদের ধারণা, এ রকম কোনো ঘটনা থেকে ‘দুধ-আনারসের’ বিষক্রিয়ার কল্পকাহিনি চালু হয়ে থাকতে পারে।
সিদ্ধান্ত
ওপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে দুধের সঙ্গে আনারস বা আনারস খেয়ে দুধ পানে বিষক্রিয়া বা মৃত্যুর কোনো আশঙ্কা নেই। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এই দাবির পক্ষে কোনো সমর্থন পাওয়া যায়নি।
মানুষ একদিকে যেমন ভোজনরসিক, তেমনি খাদ্য নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রচলিত আছে বিভিন্ন বিশ্বাস-ধারণা। সংস্কৃতি, শিক্ষা, অর্থনীতি, পরিবেশ, মানবীয় আচরণসহ নানা পারিপার্শ্বিক বিষয় এসব ধারণাকে পাকাপোক্ত করেছে। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যেও খাদ্য নিয়ে এমন ট্যাবু, মিথ প্রচলিত আছে। এর মধ্যে অন্যতম আনারসের সঙ্গে দুধ খাওয়া। বলা হয়, ‘দুধ ও আনারস একসঙ্গে খেলে বমি, সংক্রমণ, ডায়রিয়া, মাথাব্যথা এবং এমনকি পাকস্থলীর ব্যথায় আক্রান্ত’ হওয়ার কথা বলা হয়। কারণ, ‘আনারসে থাকা ব্রোমালেইন এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড একসঙ্গে মিশলে বিষক্রিয়া হয়’। কখনো কখনো আনারসের সঙ্গে দুধ খেয়ে মৃত্যু হয়েছে—এমন সংবাদও সংবাদমাধ্যমে প্রচার হতে দেখা যায়। তাই একসঙ্গে দুধের সঙ্গে আনারস খেতে বারণ করা হয়। কিন্তু এই বারণের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে?
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালে ২০১৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গবেষক ড. মো. মাহবুবুর রহমান একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে দুধ ও আনারস না খাওয়ার ট্যাবু নিয়ে করা এই গবেষণায় ড. মো. মাহবুবুর রহমান লেখেন, দুধ ও আনারস না খাওয়ার ট্যাবু দীর্ঘদিন ধরে প্রচার হয়ে আসলেও এর সত্যতা অনুসন্ধানে কোনো গবেষণা পাওয়া যায়নি।
গবেষণায় ড. মো. মাহবুবুর রহমান দুধ ও আনারস একসঙ্গে খেলে বিষক্রিয়া বা মৃত্যু হতে পারে—এই দাবির সত্যতা যাচাইয়ে ৪০টি ইঁদুরকে চারটি দলে ভাগ করে তাদের বিভিন্ন ঘনমাত্রায় দুধ ও আনারসের রস খেতে দেন। একই সময়ে দুই পুষ্টি উপাদান খেয়ে ইঁদুরগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ ছিল। এ সময় কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে দুধ ও আনারস একসঙ্গে না খাওয়া প্রসঙ্গে প্রচলিত ধারণাটি ভুল। বিষাক্ততা-সম্পর্কিত ক্লিনিক্যাল লক্ষণ, হেমাটোলজিকাল এবং জৈব রাসায়নিক প্যারামিটার, মোটাদাগ ও আণুবীক্ষণিক ফলাফল অনুযায়ী, একই সঙ্গে আনারস এবং দুধ পান বিষক্রিয়া তৈরি করে না।
স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইনের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আনারস ও দুধ একসঙ্গে গ্রহণ না করা এবং এই দুইয়ের মিশ্রণ বিষক্রিয়া ঘটায় এবং মৃত্যু পর্যন্ত হওয়ার দাবিটি কেবল বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী প্রচলিত ধারণা। তবে এই ধারণাকে সমর্থন করার মতো কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। প্রকৃতপক্ষে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফল আনারস মিষ্টি এবং অম্লীয় স্বাদের জন্য বিখ্যাত। এটি কলা ও লেবুজাতীয় ফলের পরে বিশ্বের তৃতীয় জনপ্রিয় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফল। অপর দিকে একমাত্র দুধেই একসঙ্গে তিনটি পুষ্টি উপাদান ফ্যাট, প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট খুঁজে পাওয়া যায়। পাশাপাশি একাধিক ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করে দুধ। তাই খাবার দুটি একসঙ্গে গ্রহণ মানুষের জন্য নিরাপদ।
একই প্রতিবেদনে হেলথ লাইন জানায়, আনারসের সঙ্গে দুধ মেশানোর ফলে কখনো কখনো দুধে ছানা পড়ে যেতে পারে। দুধের এই অবস্থাকে অনেকেই দুধ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সঙ্গে মিলিয়ে ফেলে। তবে দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য হলো, খাবারের পচন সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার অত্যধিক বৃদ্ধির কারণে দুধ নষ্ট হয়, অন্যদিকে দুধে ছানা পড়ে আনারসে থাকা এনজাইম ব্রোমেলেন কারণে। নষ্ট হয়ে যাওয়া দুধ পান অনিরাপদ হলেও ছানা পড়া দুধ পান নিরাপদ। ইন্দোনেশিয়ায় পনির তৈরির সময় দুধের সঙ্গে আনারসের রস মেশানো খুব সাধারণ ঘটনা।
ড. মো. মাহবুবুর রহমানও তাঁর গবেষণাতেও উল্লেখ করেন, পৃথিবীর অনেক দেশে দুধ ও আনারস একসঙ্গে মিশিয়ে সুস্বাদু খাবার তৈরি করা হয়। এমন কিছু রেসিপি দেখুন এখানে, এখানে।
বিজ্ঞানবিষয়ক ওয়েবসাইট বিজ্ঞানচিন্তা থেকে দুধ ও আনারস একসঙ্গে না খাওয়ার দাবিটির সূচনা প্রসঙ্গে কিছু ধারণা পাওয়া যায়। ওয়েবসাইটটিতে বলা হয়, দুধ-আনারসে বিষক্রিয়া? কথাটা সত্য নয়। আনারসের সঙ্গে গরুর দুধের কোনো শত্রুতা নেই। বিষক্রিয়ারও কোনো আশঙ্কা নেই। মানুষ মারা যাওয়ার মতো ঘটনার সুযোগ নেই। তবে কারও যদি ‘ল্যাকটোজ ইন টলারেন্স’ থাকে, তাহলে সমস্যা হতে পারে। দুধের একটি মূল উপাদান হলো ল্যাকটোজ। অনেকের পাকস্থলী ল্যাকটোজ পরিপাক করতে পারে না। তাই দুধ খেলে বমি হতে পারে। আর যদি এর আগে-পরে ঘটনাক্রমে আনারস খেয়ে থাকে, মনে হবে দুধ-আনারসের জন্যই দুর্ভোগ! হয়তো কোনো কালে কারও দুধ-আনারসে প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। হয়তো তার ছিল ল্যাকটোজ ইন টলারেন্স। চিকিৎকদের ধারণা, এ রকম কোনো ঘটনা থেকে ‘দুধ-আনারসের’ বিষক্রিয়ার কল্পকাহিনি চালু হয়ে থাকতে পারে।
সিদ্ধান্ত
ওপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে দুধের সঙ্গে আনারস বা আনারস খেয়ে দুধ পানে বিষক্রিয়া বা মৃত্যুর কোনো আশঙ্কা নেই। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এই দাবির পক্ষে কোনো সমর্থন পাওয়া যায়নি।
ময়মনসিংহের ‘ফুলবাড়ীয়ায় ক্যানসার প্রতিরোধক করোসল গাছের পাতা সংগ্রহে ভিড়’ শিরোনামে ২০২৩ সালের ৫ জুলাই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি দৈনিক। তাতে দাবি করা হয়, ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে পরিচিত করোসল ফলের গাছের পাতা সংগ্রহে ভিড় করছেন রোগীদের স্বজনেরা।
১৬ ঘণ্টা আগেভোলার বোরহানউদ্দিনে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি চলাকালে অর্ধশত স্কুলছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, এ শিক্ষার্থীদের দেওয়া টিকাগুলো ‘বিষাক্ত’ ছিল। এর প্রভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
২০ ঘণ্টা আগেদাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ভয়েস অব আমেরিকার ওয়েবসাইটে গত শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) ‘ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী হাসিনার দল বিক্ষোভের পরিকল্পনা করছে’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
২ দিন আগেসোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি মন্তব্যে দাবি করা হচ্ছে, সেনাপ্রধান ওয়াকার–উজ–জামান এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, শেখ হাসিনা জনগণের লাশের বন্যা ও মৃত্যু চাননি। তাই তিনি পদত্যাগ না করেই ভারতে চলে যান।
৪ দিন আগে