ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ নামে একটি ট্রেনের গল্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাতে দাবি করা হচ্ছে, ট্রেনটি ১৯৫০-৬০ এর দশকে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচল করতো। একটি ট্রেন হলেও ৫টি রেকে চলাচল করতো। বিভিন্ন স্থানে যাত্রীরা একটি রেক থেকে নেমে অন্য রেকে উঠে যাত্রা করতো। পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের কোহ-এ-তাফতান থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে পৌঁছাতে ট্রেনটির সময় লাগতো প্রায় ৬ দিন। ট্রেনটির রুট ছিল লাহোর-ওয়াগা-অমৃতসর বর্ডার, দিল্লি, বিহার, হাওড়া গেদে-দর্শনা বর্ডার; তারপর গোয়ালন্দঘাট থেকে ফেরি করে নারায়ণগঞ্জ হয়ে চট্টগ্রাম এসে পৌঁছাতো এটি।
গত ১২ মার্চ ওল্ড হিস্ট্রি অব চিটাগং নামের ৫০ হাজার সদস্যের একটি গ্রুপে মাওয়া জান্নাত নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে কথিত ট্রেনটি সম্পর্কে পোস্ট দেওয়া হয়। পোস্টটি আজ শুক্রবার (১৫ মার্চ) বেলা ৩টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ শত বার শেয়ার হয়েছে, রিয়েকশন পড়েছে ১০ হাজারের বেশি।
কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি সম্পর্কে অনুসন্ধান করেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
ট্রেনটি নিয়ে অনুসন্ধানে এই অঞ্চলের রেলের ইতিহাস খুঁজে দেখা হয়। বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলা পিডিয়া সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে প্রথম রেলপথ স্থাপন করা হয় ১৮৬২ সালের ১৫ই নভেম্বর। ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত এই রেলপথ স্থাপন করে। তারও আগে ১৮৩০ সালের দিকে আসাম অঞ্চলের সিলেট এলাকায় চা কোম্পানিগুলো কার্যক্রম শুরু করে। যেসব চা উৎপাদনকারী কোম্পানি আসামের চা বাগানে প্রচুর বিনিয়োগ করেছিল, তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৮৯১ সালে আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ে নামে আরেকটি কোম্পানি স্থাপন করা হয়েছিল। এর প্রধান দপ্তর ছিল চট্টগ্রামে।
১৯৪২ সালের ১ জানুয়ারি ব্রিটিশ সরকার আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ে অধিগ্রহণ করে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সঙ্গে একীভূত করে এবং এর নতুন নামকরণ হয় বেঙ্গল-আসাম রেলওয়ে। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ভারত বিভক্তির পর বেঙ্গল-আসাম রেলওয়ে পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায়। পূর্ববাংলা তথা পূর্ব পাকিস্তান উত্তরাধিকারসূত্রে পায় ২,৬০৬. ৫৯ কিমি রেললাইন এবং তা ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে (ইবিআর) নামে পরিচিত হয়। ১৯৬১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এর নতুন নামকরণ হয় পাকিস্তান ইস্টার্ন রেলওয়ে।
বাংলাপিডিয়ার এই বর্ণনায় বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রেল যোগাযোগ সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। তবে বর্ণনায় পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের রেল যোগাযোগের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভারত বিভক্তির পর পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানের সরাসরি সড়ক বা রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কি না তা নিয়ে অনুসন্ধান করা হয়। আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) স্বীকৃত ভারতীয় ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান ও ফেসবুকের ফ্যাক্টচেকিং পার্টনার ফ্যাক্টলিতে প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল ও পাকিস্তানের জাতির পিতা মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে উত্তর প্রদেশ ও বিহারের মধ্য দিয়ে একটি ট্রানজিট করিডোরের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
এ প্রস্তাব নিয়ে তিনি যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের কাছে ১৯৪৭ সালের ৫ আগস্ট চিঠিও লিখেন। তবে তাঁর এই প্রস্তাব ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার প্যাটেল এবং প্রধানমন্ত্রী জওহারলাল নেহরু সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে দেন। সরদার প্যাটেল এই প্রস্তাবকে ‘ফ্যান্টাসিক ননসেন্স’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। এসবের বাইরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি সড়ক বা রেল যোগাযোগ স্থাপনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
তাহলে কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেনের গল্পটির ভিত্তি কী?
ট্রেনটি সম্পর্কে অধিকতর অনুসন্ধানে উন্মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ায় পাকিস্তান ইস্টার্ণ রেলওয়ে নামে একটি পেজ খুঁজে পাওয়া যায়। পেজটির হিস্ট্রি যাচাই করে দেখা যায়, ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর পেজটি তৈরি করা হয়েছে। পেজটি চালু করেন ‘PAKHIGHWAY’ নামের একজন উইকিপিডিয়া সম্পাদক। ওইদিন পেজটি একাধিবার সম্পাদনা করা হয়েছে। এর মধ্যে দুপুর ১টা ৪৯ মিনিটে পেজটিতে কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেনের তথ্য যুক্ত করা হয়।
ট্রেনটি সম্পর্কে পেজে দাবি করা হয়, ১৯৫০ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত মাশরিক-মাগরেব এক্সপ্রেস পশ্চিম পাকিস্তানের কোহ-ই-তাফতান থেকে পূর্ব পাকিস্তানের চট্টগ্রাম পর্যন্ত চলাচল করতো। ট্রেনটির নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে ৫২১৪। ট্রেনটি ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতসর জেলার আত্তারি এবং বাংলাদেশের বেনাপোলের মধ্যে ১ হাজার ৯৮৬ কিলোমিটার বা ১ হাজার ২৪৫ মাইল ভারতীয় রেলপথ অতিক্রম করতো। পেজটিতে ট্রেনটি সম্পর্কে কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয়নি।
একই বছর পাকিস্তানের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নাল অব দ্য রিসার্চ সোসাইটি অব পাকিস্তানে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিবন্ধেও কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি সম্পর্কে একই তথ্য পাওয়া যায়।
পাকিস্তান ইস্টার্ন রেলওয়ে পেজের হিস্ট্রি ঘুরে দেখা যায়, পেজটিতে ২০১৬ সালে ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেন সম্পর্কে তথ্য যোগ করার পরে এটি প্রায় চার বছর অন্তর্ভুক্ত ছিল। আবার গুগল অ্যাডভান্স সার্চেও ২০১৬ সালের আগে কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেন সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।
তবে ২০২০ সালের ১৬ আগস্ট উইকিপিডিয়া কর্তৃপক্ষ তথ্যটি পেজটি থেকে তথ্যটি মুছে ফেলে। মুছে ফেলার কারণ হিসেবে উইকিপিডিয়া জানায়, কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি সম্পর্কে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র না থাকায় মুছে ফেলা হয়েছে।
বর্তমানে পাকিস্তান ইস্টার্ন রেলওয়ে পেজটিতে কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেন সম্পর্কে যুক্ত অংশটি নেই। তবে ‘পাকিস্তান রেলওয়ে’ নামের আরেকটি উইকিপিডিয়ার পেজে কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেনটির তথ্য নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়াই এখনো পাওয়া যায়।
পরে ইস্টার্ন রেলওয়ে পেজটিতে কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেন সম্পর্কে ‘PAKHIGHWAY’ নামে যে উইকিপিডিয়া সম্পাদক তথ্য যুক্ত করেছিলেন তাঁর সম্পর্কে অনুসন্ধানে দেখা যায়, উইকিপিডিয়া কর্তৃপক্ষ এই সম্পাদককে একাধিক একাউন্ট ব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগে উইকিপিডিয়া থেকে নিষিদ্ধ করেছে। অর্থাৎ এই উইকিপিডিয়া সম্পাদকও কোনো বিশ্বস্ত ব্যক্তি নন।
উপরিউক্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এটি স্পষ্ট, ১৯৫০-৬০ এর দশকে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচলের দাবিতে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেনটির কোনো অস্তিত্ব নেই। একজন উইকিপিডিয়া সম্পাদক কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়াই তথ্যটি উইকিপিডিয়ায় যুক্ত করেছিলেন। পরে উইকিপিডিয়া কর্তৃপক্ষ থেকেই তথ্যটি মুছে দেওয়া হয়েছে।
‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ নামে একটি ট্রেনের গল্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাতে দাবি করা হচ্ছে, ট্রেনটি ১৯৫০-৬০ এর দশকে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচল করতো। একটি ট্রেন হলেও ৫টি রেকে চলাচল করতো। বিভিন্ন স্থানে যাত্রীরা একটি রেক থেকে নেমে অন্য রেকে উঠে যাত্রা করতো। পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের কোহ-এ-তাফতান থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে পৌঁছাতে ট্রেনটির সময় লাগতো প্রায় ৬ দিন। ট্রেনটির রুট ছিল লাহোর-ওয়াগা-অমৃতসর বর্ডার, দিল্লি, বিহার, হাওড়া গেদে-দর্শনা বর্ডার; তারপর গোয়ালন্দঘাট থেকে ফেরি করে নারায়ণগঞ্জ হয়ে চট্টগ্রাম এসে পৌঁছাতো এটি।
গত ১২ মার্চ ওল্ড হিস্ট্রি অব চিটাগং নামের ৫০ হাজার সদস্যের একটি গ্রুপে মাওয়া জান্নাত নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে কথিত ট্রেনটি সম্পর্কে পোস্ট দেওয়া হয়। পোস্টটি আজ শুক্রবার (১৫ মার্চ) বেলা ৩টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ শত বার শেয়ার হয়েছে, রিয়েকশন পড়েছে ১০ হাজারের বেশি।
কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি সম্পর্কে অনুসন্ধান করেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
ট্রেনটি নিয়ে অনুসন্ধানে এই অঞ্চলের রেলের ইতিহাস খুঁজে দেখা হয়। বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলা পিডিয়া সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে প্রথম রেলপথ স্থাপন করা হয় ১৮৬২ সালের ১৫ই নভেম্বর। ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত এই রেলপথ স্থাপন করে। তারও আগে ১৮৩০ সালের দিকে আসাম অঞ্চলের সিলেট এলাকায় চা কোম্পানিগুলো কার্যক্রম শুরু করে। যেসব চা উৎপাদনকারী কোম্পানি আসামের চা বাগানে প্রচুর বিনিয়োগ করেছিল, তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৮৯১ সালে আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ে নামে আরেকটি কোম্পানি স্থাপন করা হয়েছিল। এর প্রধান দপ্তর ছিল চট্টগ্রামে।
১৯৪২ সালের ১ জানুয়ারি ব্রিটিশ সরকার আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ে অধিগ্রহণ করে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সঙ্গে একীভূত করে এবং এর নতুন নামকরণ হয় বেঙ্গল-আসাম রেলওয়ে। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ভারত বিভক্তির পর বেঙ্গল-আসাম রেলওয়ে পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায়। পূর্ববাংলা তথা পূর্ব পাকিস্তান উত্তরাধিকারসূত্রে পায় ২,৬০৬. ৫৯ কিমি রেললাইন এবং তা ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে (ইবিআর) নামে পরিচিত হয়। ১৯৬১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এর নতুন নামকরণ হয় পাকিস্তান ইস্টার্ন রেলওয়ে।
বাংলাপিডিয়ার এই বর্ণনায় বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রেল যোগাযোগ সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। তবে বর্ণনায় পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের রেল যোগাযোগের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভারত বিভক্তির পর পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানের সরাসরি সড়ক বা রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কি না তা নিয়ে অনুসন্ধান করা হয়। আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) স্বীকৃত ভারতীয় ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান ও ফেসবুকের ফ্যাক্টচেকিং পার্টনার ফ্যাক্টলিতে প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল ও পাকিস্তানের জাতির পিতা মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে উত্তর প্রদেশ ও বিহারের মধ্য দিয়ে একটি ট্রানজিট করিডোরের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
এ প্রস্তাব নিয়ে তিনি যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের কাছে ১৯৪৭ সালের ৫ আগস্ট চিঠিও লিখেন। তবে তাঁর এই প্রস্তাব ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার প্যাটেল এবং প্রধানমন্ত্রী জওহারলাল নেহরু সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে দেন। সরদার প্যাটেল এই প্রস্তাবকে ‘ফ্যান্টাসিক ননসেন্স’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। এসবের বাইরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি সড়ক বা রেল যোগাযোগ স্থাপনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
তাহলে কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেনের গল্পটির ভিত্তি কী?
ট্রেনটি সম্পর্কে অধিকতর অনুসন্ধানে উন্মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ায় পাকিস্তান ইস্টার্ণ রেলওয়ে নামে একটি পেজ খুঁজে পাওয়া যায়। পেজটির হিস্ট্রি যাচাই করে দেখা যায়, ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর পেজটি তৈরি করা হয়েছে। পেজটি চালু করেন ‘PAKHIGHWAY’ নামের একজন উইকিপিডিয়া সম্পাদক। ওইদিন পেজটি একাধিবার সম্পাদনা করা হয়েছে। এর মধ্যে দুপুর ১টা ৪৯ মিনিটে পেজটিতে কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেনের তথ্য যুক্ত করা হয়।
ট্রেনটি সম্পর্কে পেজে দাবি করা হয়, ১৯৫০ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত মাশরিক-মাগরেব এক্সপ্রেস পশ্চিম পাকিস্তানের কোহ-ই-তাফতান থেকে পূর্ব পাকিস্তানের চট্টগ্রাম পর্যন্ত চলাচল করতো। ট্রেনটির নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে ৫২১৪। ট্রেনটি ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতসর জেলার আত্তারি এবং বাংলাদেশের বেনাপোলের মধ্যে ১ হাজার ৯৮৬ কিলোমিটার বা ১ হাজার ২৪৫ মাইল ভারতীয় রেলপথ অতিক্রম করতো। পেজটিতে ট্রেনটি সম্পর্কে কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয়নি।
একই বছর পাকিস্তানের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নাল অব দ্য রিসার্চ সোসাইটি অব পাকিস্তানে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিবন্ধেও কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি সম্পর্কে একই তথ্য পাওয়া যায়।
পাকিস্তান ইস্টার্ন রেলওয়ে পেজের হিস্ট্রি ঘুরে দেখা যায়, পেজটিতে ২০১৬ সালে ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেন সম্পর্কে তথ্য যোগ করার পরে এটি প্রায় চার বছর অন্তর্ভুক্ত ছিল। আবার গুগল অ্যাডভান্স সার্চেও ২০১৬ সালের আগে কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেন সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।
তবে ২০২০ সালের ১৬ আগস্ট উইকিপিডিয়া কর্তৃপক্ষ তথ্যটি পেজটি থেকে তথ্যটি মুছে ফেলে। মুছে ফেলার কারণ হিসেবে উইকিপিডিয়া জানায়, কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি সম্পর্কে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র না থাকায় মুছে ফেলা হয়েছে।
বর্তমানে পাকিস্তান ইস্টার্ন রেলওয়ে পেজটিতে কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেন সম্পর্কে যুক্ত অংশটি নেই। তবে ‘পাকিস্তান রেলওয়ে’ নামের আরেকটি উইকিপিডিয়ার পেজে কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেনটির তথ্য নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়াই এখনো পাওয়া যায়।
পরে ইস্টার্ন রেলওয়ে পেজটিতে কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেন সম্পর্কে ‘PAKHIGHWAY’ নামে যে উইকিপিডিয়া সম্পাদক তথ্য যুক্ত করেছিলেন তাঁর সম্পর্কে অনুসন্ধানে দেখা যায়, উইকিপিডিয়া কর্তৃপক্ষ এই সম্পাদককে একাধিক একাউন্ট ব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগে উইকিপিডিয়া থেকে নিষিদ্ধ করেছে। অর্থাৎ এই উইকিপিডিয়া সম্পাদকও কোনো বিশ্বস্ত ব্যক্তি নন।
উপরিউক্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এটি স্পষ্ট, ১৯৫০-৬০ এর দশকে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচলের দাবিতে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া কথিত ‘মাশরিক-মাগরিব এক্সপ্রেস’ ট্রেনটির কোনো অস্তিত্ব নেই। একজন উইকিপিডিয়া সম্পাদক কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়াই তথ্যটি উইকিপিডিয়ায় যুক্ত করেছিলেন। পরে উইকিপিডিয়া কর্তৃপক্ষ থেকেই তথ্যটি মুছে দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি অডিও রেকর্ড প্রচার করা হয়েছে। তাতে হাসিনাকে কথা বলতে শোনা যায়, গুলি খাওয়ার পর আবু সাঈদকে চার–পাঁচ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
২০ ঘণ্টা আগেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদকও। সম্প্রতি সারজিস শিশু মডেল অভিনেত্রী সিমরিন লুবাবাকে ফেসবুকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন দাবিতে একটি ফটোকার্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
১ দিন আগেপ্রযুক্তি জগতে নানা উদ্ভাবন দিয়ে সব সময়ই আলোচনায় থাকেন স্পেসএক্স, টেসলাসহ মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সের (সাবেক টুইটার) মালিক ইলন মাস্ক। সম্প্রতি তিনি আলোচনায় এসেছেন এক্সে ডিজনির এলজিবিটিকিউ সম্পর্কিত কনটেন্ট ব্লক করে দিয়েছেন এমন দাবিতে। গত মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে ফেসবুকে ‘মহিদুল আলম...
২ দিন আগেরাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় গত বুধবার দুপুরে সংঘর্ষে জড়ায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ ও সেনাসদস্যরা, দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন তাঁরা। এ সময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেডও ছোড়ে।
২ দিন আগে