চোখ বেশি কচলালে হতে পারে কেরাটোকোনাস

ডা. মো. আরমান হোসেন রনি
প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২৪, ০৭: ৪৬

আমরা প্রায়ই কারণে-অকারণে চোখ কচলাই। এর ফলে চোখের কর্নিয়া তার স্বাভাবিক গোলাকার আকৃতির পরিবর্তে শঙ্কু আকৃতি নেয় এবং ধীরে ধীরে পাতলা ও অনিয়মিত হয়ে যায়। একে কেরাটোকোনাস বলে। কর্নিয়া হলো চোখের সামনের স্বচ্ছ একটি অংশ যা ‘চোখের মণি’ নামে পরিচিত।

কেরাটোকোনাস নামের এই রোগ ছোঁয়াচে নয়। তবে এটি ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে দুটি চোখকে প্রভাবিত করে। এতে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। 

কাদের বেশি হয়
এই অসুখ প্রতি ২ হাজার জনের মধ্যে একজনের হতে পারে। রোগের লক্ষণ খুব অল্প বয়সে দেখা দেয় এবং রোগ বৃদ্ধির পরিমাণ বেশি হয় ১০ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে। 

কারণ
সাধারণত বিশ্বাস করা হয় যে পরিবেশগত এবং জেনেটিক উভয় কারণই এর বিকাশে ভূমিকা পালন করে।

  • পারিবারিক ইতিহাস: কেরাটোকোনাসে আক্রান্ত কিছু মানুষ পারিবারিকভাবে জিন বহন করতে পারে। কিছু পরিবেশগত কারণের সংস্পর্শে এলে এটি বিকশিত হওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়।
  • প্রধান ব্যাধি: কিছু কিছু রোগের সঙ্গে কেরাটোকোনাস রোগটি সম্পর্কিত। যেমন ডাউনস সিনড্রোম, স্লিপ অ্যাপনিয়া, হাঁপানি, মারফানের সিনড্রোম এবং লেবারের জন্মগত অ্যামাউরোসিসসহ নির্দিষ্ট সংযোগকারী টিস্যু রোগ।
  • পরিবেশগত ঝুঁকির কারণ: অত্যধিক চোখ ঘষা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারসহ বেশ কয়েকটি পরিবেশগত ঝুঁকির কারণে কেরাটোকোনাস বিকশিত হতে পারে।

 কী করে বুঝবেন
কিশোর বয়সে বারবার খুব কম সময়ের ব্যবধানে চোখের পাওয়ার বদলাতে থাকলে সতর্ক হতে হবে। সাধারণত ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সের মধ্যে চোখের পাওয়ার স্থির হয়ে যায়। সেটা যদি বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে, তাহলে সেটি কেরাটোকোনাসের প্রাথমিক পর্ব হতে পারে। যেসব ব্যক্তির উচ্চ সিলিন্ড্রিক্যাল কিংবা মাইনাস পাওয়ার থাকে, তাঁদের কেরাটোকোনাস হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

রোগের লক্ষণ

  • বারবার চোখের চশমার পাওয়ার পরিবর্তন হওয়া।
  • চশমা পরেও চোখে পুরোপুরি না দেখা।
  • চোখে এক জিনিস দুটি দেখা।
  • শিশুদের ক্ষেত্রে চোখ অনেক বেশি চুলকানো।
  • চোখের মণিতে দাগ হওয়া।
  • চোখের ব্যথা এবং দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা।
  • রাতের দৃষ্টিতে অসুবিধা হওয়া।
  • উজ্জ্বল আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা তৈরি হওয়া।

চিকিৎসা

  • চশমা: কেরাটোকোনাস রোগীদের প্রাথমিক অবস্থায় চশমা ব্যবহার করে দৃষ্টির উন্নতি করা যায়।
  • কন্টাক্ট লেন্স: যখন রোগীদের শুধু চশমায় দৃষ্টি ভালো করা যায় না, তখন দৃষ্টির উন্নতির জন্য কন্টাক্ট লেন্স দেওয়া যায়।
  • কোলাজেন ক্রস লিংকেজ: এই চিকিৎসা কেরাটোকোনাসের দুর্বল কর্নিয়া সবল করে এবং কেরাটোকোনাসের বৃদ্ধি থামিয়ে দেয়।
  • চোখের মণি পরিবর্তন করা: যখন কর্নিয়া অনেক বেশি পাতলা হয়ে যায় অথবা কর্নিয়ায় দাগ পড়ে কিংবা কন্টাক্ট লেন্স কাজ করে না, তখন দুর্বল কর্নিয়ার পরিবর্তে নতুন কর্নিয়া বা চোখের মণি সংযোজন করা হয়।

পরামর্শ দিয়েছন: ডা. মো. আরমান হোসেন রনি, কনসালট্যান্ট (চক্ষু) দীন মোহাম্মদ আই হসপিটাল সোবহানবাগ, ঢাকা

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত