ডা. মো. গুলজার হোসেন
ক্যানসার কোনো একক রোগ নয়। শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গে ক্যানসার হতে পারে। আবার একই অঙ্গে হতে পারে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার। এদের আবার ভিন্ন ভিন্ন নাম। পরিণতিও ভিন্ন ভিন্ন। কোনোটা সাধারণ, সহজেই ভালো হয়। কোনোটা আবার জটিল ও কঠিন, প্রায় দুরারোগ্য।
ব্লাড ক্যানসার
আমাদের শরীর অসংখ্য কোষের সমন্বয়ে গঠিত। কোষগুলো স্বাভাবিক নিয়মেই নির্দিষ্ট সময়ের পর মরে যায়। একে আমরা বলি এপপটোসিস। অন্যদিকে চলতে থাকে কোষ বিভাজন, যা কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি করে। এই বিভাজন নিয়ন্ত্রণ করারও বিশেষ ব্যবস্থা আছে। এই নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবে নষ্ট বা বাধাগ্রস্ত হলে, শরীরে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন ও সংখ্যার বৃদ্ধি ঘটে। রক্ত কোষের এ রকম অস্বাভাবিক বিভাজনই হলো ব্লাড ক্যানসার।
মূলত লিউকেমিয়াকে আমরা সাধারণভাবে ব্লাড ক্যানসার বলে থাকি। লিউকেমিয়া প্রধানত শ্বেত রক্তকণিকার ক্যানসার। রক্তকোষ তৈরি হয় বোনম্যারো বা অস্থিমজ্জায়। তৈরির পর কয়েকটি ধাপে কোষগুলো পরিণত হয়। এরপর রক্ত প্রবাহে আসে। কোনো কারণে এই কোষগুলো অতিমাত্রায় উৎপাদিত হলে এবং ঠিকভাবে পরিণত না হলে দেখা যায় রক্ত প্রবাহে প্রচুর অপরিপক্ব রক্তকোষ এসে পড়েছে। এরা শরীরের কোনো কাজে তো আসেই না, উল্টো নানা রকম উপসর্গ তৈরি করে।
কেন হয়
এর কারণ নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। দীর্ঘদিন দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চমাত্রার রেডিয়েশন কোনোভাবে শরীরে ঢুকে পড়লে ব্লাড ক্যানসার হতে পারে। রাসায়নিক বর্জ্য, রঙের কারখানা, ধূমপান, কীটনাশক ইত্যাদি কারণ হিসেবে দেখা হয়। আবার বিশেষ একধরনের ভাইরাসের কারণেও রক্তের ক্যানসার হতে পারে। এসবের প্রভাবে শরীরের কোষের ভেতর যে জিন থাকে, সেগুলোর মিউটেশন হয়, ক্রোমোজোমের বাহুগুলোতে কিছু ওলট-পালট হয়। তখন কোষ বিভাজন বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে রক্তকোষ ব্যাপক হারে উৎপাদিত হয় এবং সেগুলো পরিণত না হয়েই রক্ত প্রবাহে চলে আসে।
রক্তের ক্যানসার ছোঁয়াচে নয়। এটা রক্তবাহিত, যৌনবাহিত কিংবা পানিবাহিত নয়। রোগীর সঙ্গে থাকলে, তাকে ছুঁলে, রোগীর খাওয়া খাবার খেলে, তার রক্ত গায়ে লাগলে, তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করলে এই রোগ ছড়াবে না।
লিউকেমিয়া কত প্রকার
রোগের লক্ষণের তীব্রতার ওপর ভিত্তি করে লিউকেমিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটি অ্যাকিউট বা তীব্র লিউকেমিয়া, অন্যটি ক্রনিক বা ধীরগতির লিউকেমিয়া। লিউকেমিয়া ছাড়াও লিম্ফোমা বা লসিকাগ্রন্থির ক্যানসার, মাল্টিপল মায়েলোমা—এগুলোও ব্লাড ক্যানসারের মধ্যে পড়ে।
লক্ষণ
রোগনির্ণয়ের উপায়
চিকিৎসা
ব্লাড ক্যানসারের প্রধান চিকিৎসা কেমোথেরাপি। আজকাল ইমিউনোথেরাপিও যুক্ত হয়েছে এর সঙ্গে। তাতে রোগমুক্তির হারও বেড়েছে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে রেডিওথেরাপিও প্রয়োগ করা হয়। মূল চিকিৎসার পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিফাঙ্গাস, রক্ত পরিসঞ্চালন ইত্যাদিরও প্রয়োজন হয়। বোনম্যারো প্রতিস্থাপন ব্লাড ক্যানসারের কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতি।
দেশে চিকিৎসাব্যবস্থা
দেশে এক যুগ ধরে বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে। তবে এর ব্যয় এখনো দেশের অধিকাংশ মানুষের নাগালের বাইরে। বাংলাদেশে ক্যানসার চিকিৎসার প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো এর ব্যয়। ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হয় একেকজন রোগীর চিকিৎসায়। সাধারণ মানুষের পক্ষে তা বহন করা অত্যন্ত কঠিন। শুরুতেই যেন ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে, সে জন্য সচেতনতা প্রয়োজন।
পরামর্শ দিয়েছেন:
ডা. মো. গুলজার হোসেন, সহকারী অধ্যাপক, হেমাটোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যানসার কোনো একক রোগ নয়। শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গে ক্যানসার হতে পারে। আবার একই অঙ্গে হতে পারে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার। এদের আবার ভিন্ন ভিন্ন নাম। পরিণতিও ভিন্ন ভিন্ন। কোনোটা সাধারণ, সহজেই ভালো হয়। কোনোটা আবার জটিল ও কঠিন, প্রায় দুরারোগ্য।
ব্লাড ক্যানসার
আমাদের শরীর অসংখ্য কোষের সমন্বয়ে গঠিত। কোষগুলো স্বাভাবিক নিয়মেই নির্দিষ্ট সময়ের পর মরে যায়। একে আমরা বলি এপপটোসিস। অন্যদিকে চলতে থাকে কোষ বিভাজন, যা কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি করে। এই বিভাজন নিয়ন্ত্রণ করারও বিশেষ ব্যবস্থা আছে। এই নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবে নষ্ট বা বাধাগ্রস্ত হলে, শরীরে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন ও সংখ্যার বৃদ্ধি ঘটে। রক্ত কোষের এ রকম অস্বাভাবিক বিভাজনই হলো ব্লাড ক্যানসার।
মূলত লিউকেমিয়াকে আমরা সাধারণভাবে ব্লাড ক্যানসার বলে থাকি। লিউকেমিয়া প্রধানত শ্বেত রক্তকণিকার ক্যানসার। রক্তকোষ তৈরি হয় বোনম্যারো বা অস্থিমজ্জায়। তৈরির পর কয়েকটি ধাপে কোষগুলো পরিণত হয়। এরপর রক্ত প্রবাহে আসে। কোনো কারণে এই কোষগুলো অতিমাত্রায় উৎপাদিত হলে এবং ঠিকভাবে পরিণত না হলে দেখা যায় রক্ত প্রবাহে প্রচুর অপরিপক্ব রক্তকোষ এসে পড়েছে। এরা শরীরের কোনো কাজে তো আসেই না, উল্টো নানা রকম উপসর্গ তৈরি করে।
কেন হয়
এর কারণ নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। দীর্ঘদিন দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চমাত্রার রেডিয়েশন কোনোভাবে শরীরে ঢুকে পড়লে ব্লাড ক্যানসার হতে পারে। রাসায়নিক বর্জ্য, রঙের কারখানা, ধূমপান, কীটনাশক ইত্যাদি কারণ হিসেবে দেখা হয়। আবার বিশেষ একধরনের ভাইরাসের কারণেও রক্তের ক্যানসার হতে পারে। এসবের প্রভাবে শরীরের কোষের ভেতর যে জিন থাকে, সেগুলোর মিউটেশন হয়, ক্রোমোজোমের বাহুগুলোতে কিছু ওলট-পালট হয়। তখন কোষ বিভাজন বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে রক্তকোষ ব্যাপক হারে উৎপাদিত হয় এবং সেগুলো পরিণত না হয়েই রক্ত প্রবাহে চলে আসে।
রক্তের ক্যানসার ছোঁয়াচে নয়। এটা রক্তবাহিত, যৌনবাহিত কিংবা পানিবাহিত নয়। রোগীর সঙ্গে থাকলে, তাকে ছুঁলে, রোগীর খাওয়া খাবার খেলে, তার রক্ত গায়ে লাগলে, তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করলে এই রোগ ছড়াবে না।
লিউকেমিয়া কত প্রকার
রোগের লক্ষণের তীব্রতার ওপর ভিত্তি করে লিউকেমিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটি অ্যাকিউট বা তীব্র লিউকেমিয়া, অন্যটি ক্রনিক বা ধীরগতির লিউকেমিয়া। লিউকেমিয়া ছাড়াও লিম্ফোমা বা লসিকাগ্রন্থির ক্যানসার, মাল্টিপল মায়েলোমা—এগুলোও ব্লাড ক্যানসারের মধ্যে পড়ে।
লক্ষণ
রোগনির্ণয়ের উপায়
চিকিৎসা
ব্লাড ক্যানসারের প্রধান চিকিৎসা কেমোথেরাপি। আজকাল ইমিউনোথেরাপিও যুক্ত হয়েছে এর সঙ্গে। তাতে রোগমুক্তির হারও বেড়েছে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে রেডিওথেরাপিও প্রয়োগ করা হয়। মূল চিকিৎসার পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিফাঙ্গাস, রক্ত পরিসঞ্চালন ইত্যাদিরও প্রয়োজন হয়। বোনম্যারো প্রতিস্থাপন ব্লাড ক্যানসারের কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতি।
দেশে চিকিৎসাব্যবস্থা
দেশে এক যুগ ধরে বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে। তবে এর ব্যয় এখনো দেশের অধিকাংশ মানুষের নাগালের বাইরে। বাংলাদেশে ক্যানসার চিকিৎসার প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো এর ব্যয়। ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হয় একেকজন রোগীর চিকিৎসায়। সাধারণ মানুষের পক্ষে তা বহন করা অত্যন্ত কঠিন। শুরুতেই যেন ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে, সে জন্য সচেতনতা প্রয়োজন।
পরামর্শ দিয়েছেন:
ডা. মো. গুলজার হোসেন, সহকারী অধ্যাপক, হেমাটোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
রোগে-শোকে মানুষকে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু ওষুধ খেতে হয়। নিত্যপণ্যের এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে যেখানে সাধারণ মানুষের তিনবেলা আহারের জোগান দেওয়াই কষ্টকর, সেখানে জীবন রক্ষার জন্য দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে ওধুষ কিনতে গিয়ে জীবন আরও ওষ্ঠাগত। দেশে এখন নিম্নআয়ের ৪০ শতাংশ মানুষের মোট আয়ের ২০ শতাংশ খরচ হচ্ছে ওষুধ কিনতেই।
৫ ঘণ্টা আগেদেশে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা না থাকায় ও ডাক্তারের ওপর আস্থা না থাকায় বিদেশে চিকিৎসা নিতে প্রতিবছর দেশের মানুষ ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করছে। স্বাস্থ্যেসেবার উন্নয়ন না হলে এর পরিমাণ দিন দিন আরও বাড়বে।
৬ ঘণ্টা আগেআমাদের দেশে শীত উপভোগ্য মৌসুম। কিন্তু অনেকের ঠান্ডা, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা, অ্যালার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা যাদের আছে, তাদের এই মৌসুমে কষ্ট বেড়ে যায়।
১৮ ঘণ্টা আগেত্বক অভ্যন্তরীণ অঙ্গের সংক্রমণ এবং যেকোনো ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দেয়। তাই এর যত্নে বিশেষ মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। শীতকালে ত্বক শুষ্ক ও টানটান হলে দুশ্চিন্তা করবেন না। চুলকানি হলেও চিন্তার কোনো কারণ নেই। শীতের শুষ্ক আবহাওয়া ত্বকের প্রতিরক্ষামূলক তেল কমিয়ে দেয়।
১৮ ঘণ্টা আগে