মো. ইকবাল হোসেন
বৈশাখের দাবদাহে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাপন। তাপমাত্রার পারদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শারীরিক জটিলতাও বেড়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। গরমের সঙ্গে এটি অস্বস্তির পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেয়। এ সমস্যা কমিয়ে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
কেন হয় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা
আমাদের পরিপাকতন্ত্র যখন খাবার সম্পূর্ণভাবে হজম করতে পারে না, তখনই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যায়। পরিপাকতন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমে গেলে বা খাদ্য হজমকারী এনজাইম নিঃসারণকারী অর্গানগুলো দুর্বল হয়ে পড়লে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যায়। মনে রাখতে হবে, সঠিক খাবার কমাতে পারে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা।
খারাপ খাদ্যাভ্যাসের ফলে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমে যায়। আবার এনজাইম নিঃসারণের গ্রন্থিগুলো ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সবচেয়ে কর্মক্ষম থাকে। কিন্তু তাপমাত্রা বেড়ে গেলে সেগুলো কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই গরমে খাবার ব্যবস্থাপনায় বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে।
কোন খাবার বাদ দেবেন
আটা ও ময়দায় তৈরি খাবার বাদ দিতে হবে। উচ্চ আঁশের পাশাপাশি আটায় গ্লুটেন নামক প্রোটিন থাকে। এটি পরিপাকের কোনো এনজাইম আমাদের শরীরে নেই। তাই আটা ও ময়দায় তৈরি খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সঙ্গে অ্যালার্জি, পেটে ব্যথা ও পাতলা পায়খানাও হতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের এ ধরনের সমস্যা বেশি হয়।
অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। বেশির ভাগ মসলা পরিপাক করার মতো এনজাইম আমাদের শরীরে নেই। তাই অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খাবেন না। গরমে রান্নায় পেঁয়াজ, রসুন, হলুদগুঁড়ো, কাঁচা মরিচ, লবণ ও তেল ছাড়া অন্য কোনো মসলা ব্যবহার না করাই ভালো।
তৈলাক্ত খাবার খাওয়া যাবে না। তেল পরিপাকে বেশি সময় লাগে, যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। তাই অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার ও ভাজাপোড়া খাবেন না। মাছ ও মাংসের ঝোল বাদ দিতে চেষ্টা করবেন। খিচুড়ি, বিরিয়ানি, পোলাওয়ের মতো খাবারগুলো না খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
খেলেও খুবই কম পরিমাণে খাবেন। কারণ, এসব খাবারে তেল-মসলার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি থাকে।
শাকে আঁশের পাশাপাশি সেলুলোজ থাকে। সেলুলোজ হজমকারী সেলুলয়েজ নামক এনজাইম মানুষের পরিপাকতন্ত্রে নেই। তাই শাক কম খাবেন। শাক দুপুরের খাবারের সঙ্গে খাবেন, রাতে খাবেন না।
কী খাবেন
সহজপাচ্য বা সহজে হজম হয় তেমন খাবার খাবেন। ভাতের সঙ্গে মাছের পাতলা ঝোল, সবজি ও পাতলা ডাল খাবেন। লাউ, পেঁপে, চালকুমড়া, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, মিষ্টিকুমড়া, ঢ্যাঁড়সের পাতলা ঝোলের তরকারি অতি উত্তম। শাকের মধ্যে লালশাক ও পুঁইশাক খাওয়া যেতে পারে। ফলের মধ্যে পাকা পেঁপে, কলা, বেল, তরমুজ, বাঙ্গি, আঙুর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাতে বেশ উপকারী।
দারুচিনি, মৌরি ও এলাচির নির্যাস খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেক কমে যায়। কিন্তু গোটা দারুচিনি, মৌরি বা এলাচি খেলে গ্যাসের সমস্যা বেড়ে যাবে। তাই এগুলো দীর্ঘ সময় পানিতে ভিজিয়ে রেখে বা সেদ্ধ করে এর পানি খালি পেটে খেতে হবে।
টক দই গ্যাস্ট্রিক নিরাময়ে খুবই চমৎকার একটি খাবার। তাই প্রতিদিন বিকেলে ১ কাপ টক দই খাবেন। এটি আমাদের অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়ায়, যা খাবার হজমে সহায়ক। তবে টক দই যদি বেশি টক হয়ে যায়, তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। শরীরে তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষার এবং কোষের ভেতরে প্রতিটি জৈবিক ক্রিয়ায় পানির প্রয়োজন হয়। তাই সারা দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খেলেও শরীরে তাপমাত্রার ভারসাম্য নষ্ট হয়। একটি ঘরের যে তাপমাত্রা থাকে, সেটাই স্বাভাবিক তাপমাত্রা। সে রকম তাপমাত্রার পানি পান করতে হবে।
সঠিক নিয়মে তৈরি পান্তা খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে। পান্তা প্রোবায়োটিকস হিসেবে কাজ করে। এটি অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ায়। আবার পান্তা খেলে শরীরে পানি, তাপমাত্রা এবং ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা হয়।
গ্যাস্ট্রিক মূলত পরিপাকজনিত সমস্যা। একেকজনের একেক খাবারে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। তাই এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো খাবার বাদ দেওয়া যায় না। এ সমস্যা নিরাময়ে চিকিৎসকের পরামর্শের পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে একজন বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে।
পরামর্শ: জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
বৈশাখের দাবদাহে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাপন। তাপমাত্রার পারদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শারীরিক জটিলতাও বেড়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। গরমের সঙ্গে এটি অস্বস্তির পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেয়। এ সমস্যা কমিয়ে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
কেন হয় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা
আমাদের পরিপাকতন্ত্র যখন খাবার সম্পূর্ণভাবে হজম করতে পারে না, তখনই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যায়। পরিপাকতন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমে গেলে বা খাদ্য হজমকারী এনজাইম নিঃসারণকারী অর্গানগুলো দুর্বল হয়ে পড়লে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যায়। মনে রাখতে হবে, সঠিক খাবার কমাতে পারে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা।
খারাপ খাদ্যাভ্যাসের ফলে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমে যায়। আবার এনজাইম নিঃসারণের গ্রন্থিগুলো ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সবচেয়ে কর্মক্ষম থাকে। কিন্তু তাপমাত্রা বেড়ে গেলে সেগুলো কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই গরমে খাবার ব্যবস্থাপনায় বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে।
কোন খাবার বাদ দেবেন
আটা ও ময়দায় তৈরি খাবার বাদ দিতে হবে। উচ্চ আঁশের পাশাপাশি আটায় গ্লুটেন নামক প্রোটিন থাকে। এটি পরিপাকের কোনো এনজাইম আমাদের শরীরে নেই। তাই আটা ও ময়দায় তৈরি খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সঙ্গে অ্যালার্জি, পেটে ব্যথা ও পাতলা পায়খানাও হতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের এ ধরনের সমস্যা বেশি হয়।
অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। বেশির ভাগ মসলা পরিপাক করার মতো এনজাইম আমাদের শরীরে নেই। তাই অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খাবেন না। গরমে রান্নায় পেঁয়াজ, রসুন, হলুদগুঁড়ো, কাঁচা মরিচ, লবণ ও তেল ছাড়া অন্য কোনো মসলা ব্যবহার না করাই ভালো।
তৈলাক্ত খাবার খাওয়া যাবে না। তেল পরিপাকে বেশি সময় লাগে, যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। তাই অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার ও ভাজাপোড়া খাবেন না। মাছ ও মাংসের ঝোল বাদ দিতে চেষ্টা করবেন। খিচুড়ি, বিরিয়ানি, পোলাওয়ের মতো খাবারগুলো না খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
খেলেও খুবই কম পরিমাণে খাবেন। কারণ, এসব খাবারে তেল-মসলার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি থাকে।
শাকে আঁশের পাশাপাশি সেলুলোজ থাকে। সেলুলোজ হজমকারী সেলুলয়েজ নামক এনজাইম মানুষের পরিপাকতন্ত্রে নেই। তাই শাক কম খাবেন। শাক দুপুরের খাবারের সঙ্গে খাবেন, রাতে খাবেন না।
কী খাবেন
সহজপাচ্য বা সহজে হজম হয় তেমন খাবার খাবেন। ভাতের সঙ্গে মাছের পাতলা ঝোল, সবজি ও পাতলা ডাল খাবেন। লাউ, পেঁপে, চালকুমড়া, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, মিষ্টিকুমড়া, ঢ্যাঁড়সের পাতলা ঝোলের তরকারি অতি উত্তম। শাকের মধ্যে লালশাক ও পুঁইশাক খাওয়া যেতে পারে। ফলের মধ্যে পাকা পেঁপে, কলা, বেল, তরমুজ, বাঙ্গি, আঙুর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাতে বেশ উপকারী।
দারুচিনি, মৌরি ও এলাচির নির্যাস খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেক কমে যায়। কিন্তু গোটা দারুচিনি, মৌরি বা এলাচি খেলে গ্যাসের সমস্যা বেড়ে যাবে। তাই এগুলো দীর্ঘ সময় পানিতে ভিজিয়ে রেখে বা সেদ্ধ করে এর পানি খালি পেটে খেতে হবে।
টক দই গ্যাস্ট্রিক নিরাময়ে খুবই চমৎকার একটি খাবার। তাই প্রতিদিন বিকেলে ১ কাপ টক দই খাবেন। এটি আমাদের অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়ায়, যা খাবার হজমে সহায়ক। তবে টক দই যদি বেশি টক হয়ে যায়, তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। শরীরে তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষার এবং কোষের ভেতরে প্রতিটি জৈবিক ক্রিয়ায় পানির প্রয়োজন হয়। তাই সারা দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খেলেও শরীরে তাপমাত্রার ভারসাম্য নষ্ট হয়। একটি ঘরের যে তাপমাত্রা থাকে, সেটাই স্বাভাবিক তাপমাত্রা। সে রকম তাপমাত্রার পানি পান করতে হবে।
সঠিক নিয়মে তৈরি পান্তা খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে। পান্তা প্রোবায়োটিকস হিসেবে কাজ করে। এটি অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ায়। আবার পান্তা খেলে শরীরে পানি, তাপমাত্রা এবং ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা হয়।
গ্যাস্ট্রিক মূলত পরিপাকজনিত সমস্যা। একেকজনের একেক খাবারে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। তাই এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো খাবার বাদ দেওয়া যায় না। এ সমস্যা নিরাময়ে চিকিৎসকের পরামর্শের পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে একজন বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে।
পরামর্শ: জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
সুস্থভাবে জীবনযাপন করার জন্য দেহের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে হয়। সাধারণত পুষ্টির কথা ভাবলে মনে করি সবটুকুই আমার খাদ্য থেকেই অর্জন করি। তবে এই ধারণাটি ভুল বললেন বিজ্ঞানীরা। নতুন গবেষণায় বলা যায়, মানুষ কিছু পুষ্টি বায়ু থেকেও শোষণ করতে পারে!
২ দিন আগেবিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন। হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনির ক্ষতি এবং দৃষ্টি শক্তিসহ বেশ কিছু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার প্রধান ঝুঁকির কারণ এটি। এই ধরনের ঝুঁকি কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ
৪ দিন আগেডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১ হাজার ৩৮৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে আজ রোববার পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলো ৭৯ হাজার ৯৮৪ জন। মারা গেছে আরও আটজন।
৪ দিন আগেএমন সময়ে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো, যখন ইংল্যান্ডে একটি লক্ষ্যভিত্তিক ফুসফুস স্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে সম্ভাব্য ৪০ শতাংশ ব্যক্তিকে স্ক্রিনিং করা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সবাইকে এর আওতায় আনা।
৫ দিন আগে