অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া
আজ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। বছর ঘুরে ২রা এপ্রিল আসে, আবার চলে যায়। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদেরকে নিয়ে আমরা আলোচনা করি, কিন্তু একজন নিরাময় অযোগ্য ও জীবন সীমিত রোগে আক্রান্ত অটিস্টিক ব্যক্তির ব্যাপারে আমরা আসলে কতটুকু কাজ করি?
জীবনের শেষ দিনগুলোতে কেমন যত্ন পান একজন অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তি? যদি প্যালিয়েটিভ কেয়ার প্রয়োজন হয় তখন কিভাবে এই নিরাময় অযোগ্য জীবনসীমিত রোগে আক্রান্ত মানুষটির অটিজমকে অতিক্রম করে তাকে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক সেবা দেয়া যায় তা নিয়ে বাস্তবিক অর্থে ভাবা দরকার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতি ১০০ জন শিশুর মধ্যে ১জন শিশু অটিজমে আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বৈশ্বিক চালচিত্রে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১জন মানুষ অটিজম স্পেট্রাম ডিসঅর্ডারের মধ্যে পড়ছেন। আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়েট্রিক্স এর বরাত দিয়ে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৩৬ জনের মধ্যে ১ জন শিশু অটিজমে আক্রান্ত। আরো দুশ্চিন্তার কথা হলো, অটিজমের ব্যাপকতা ২০০০ সালের পর থেকে ১৭৮% বেড়ে গেছে। ছেলেদের আক্রান্ত হবার হার মেয়েদের থেকে চার গুণ বেশি। এদের মধ্যে প্রায় ৪০% কথা বলতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রে একজন স্বাভাবিক শিশু থেকে একজন অটিস্টিক শিশুর জন্য ৪.১ থেকে ৬.২ গুণ বেশি খরচ করতে হয়।
অটিজমে আক্রান্তদের প্যালিয়েটিভ কেয়ার
১. এ ধরনের ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা কঠিন। কিন্তু তারপরও মনে রাখতে হবে যে তাদেরও কিছুটা হলেও ভাবনার জায়গায় দক্ষতা রয়েছে। কাজেই তার জীবনের যত্নের ব্যাকরণ অন্তিম মুহূর্তে কেমন হবে, তা নিয়ে ভাবতে হবে। সাধারণত চিকিৎসক বা পরিবার এককভাবে সেই দায়িত্ব নেন। তবে শুধুমাত্র চিকিৎসক বা পরিবার এককভাবে সিদ্ধান্ত নিতে নৈতিকভাবে সক্ষম নন। আক্রান্ত ব্যক্তি মতামতও কিন্তু জরুরি। আমরা ভুলে যাই এই মানুষটিরও ইচ্ছে, অনিচ্ছে রয়েছে। ফলে তার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হলে তার ইতিবাচক মনোভাবকেও গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ দিনশেষে সেবা তাঁর জন্য।
২. অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তির যত্নে স্বাস্থ্যকর্মী এবং সমাজের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যাঁরা পরিবারকে সাহায্য করছেন তাঁদের অংশীদারিত্ব প্রয়োজন। কারণ পরিবার একটা পর্যায়ে যত্ন নিতে নিতে ক্লান্ত হয়ে যান। তখন আশপাশকে সহায়তার প্রয়োজন পড়ে।
৩. যাঁরা অটিজমের আক্রান্ত এবং ভাষাগত জায়গায় যোগাযোগ দক্ষতা কম, তাঁদের বেশি সময় দিয়ে কোন ধরনের যত্ন তাদের সব থেকে বেশি প্রয়োজন সেটা খুঁজে বের করা জরুরি।কী কী শারীরিক উপসর্গের কারণে জীবনের অন্তিম সমযয়ে তাঁদের কষ্ট হচ্ছে; সেটা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, কোষ্ঠকাঠিন্য নাকি শয্যাক্ষত সেটা খুঁজে দেখা জরুরি।
৪. একজন অটিজমে আক্রান্ত মানুষকে সাহায্য করতে গেলে মনে রাখতে হবে তার ভাবনার ধরন এবং আপনার ভাবনার ধরন এবং পরিকল্পনা ভিন্নতর হবে। তবে এটাই স্বাভাবিক। কাজেই নিজের ভাবনা তার ওপর চাপিয়ে দেবেন না। মনে রাখতে হবে আপনি যেভাবে পৃথিবীকে বুঝছেন তা থেকে অটিজমে আক্রান্ত মানুষটির অভিজ্ঞতায় পৃথিবী অন্যরকম। আপনার পৃথিবীকে তিনি চেনেন না, তাঁর পরিচিত পৃথিবীকে আপনি চেনেন না। কাজেই বুঝতে চেষ্টা করুন তাঁরা কিভাবে নতুন তথ্য নিজেদের মধ্যে গ্রহণ করেন। এখানে সময় লাগে। বিরক্ত হওয়া যাবেনা। সেই সাথে এটাও বোঝার চেষ্টা করুন যে তাদের জীবনে কোন জিনিসটা সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সেই মানুষটি যেভাবে বুঝতে পারেন সেই ভাবে তাকে তথ্যগুলো দিন। তিনি যেভাবে মতামত দিতে পারেন, সেভাবেই তাকে মতামত দিতে আগ্রহী করে তোলা আপনার কর্তব্য। কোন কোন তথ্যগুলো তাকে আগে দেবেন এবং কোন কোন তথ্যগুলো তাকে পরে দেবেন সেটা নিয়েও ভেবে দেখা জরুরি।
৫. জীবনের শেষ দিনগুলোতে একজন অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তি কিছুটা হলেও যেন কোন কোন অভিজ্ঞতা গুলো তাদের জীবনকে অর্থবহ করে তুলেছে সেগুলোর প্রতিফলন করতে পারে সেজন্য আপনার সহায়তা প্রয়োজন। হতে পারে আপনি তাকে ছবি বা ভিডিও দেখালেন, কিংবা কোনো গান শোনালেন সেই স্মৃতির সাথে সম্পৃক্ত। কখনো কোনো কোনো গন্ধ বা স্পর্শ অনুভূতি পুরনো সেই দিনের কথা তাকে হয়তো মনে করিয়ে দেয় যেটা তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
একজন নিরাময় অযোগ্য ও জীবন সীমিত রোগে ভুগতে থাকা অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য জীবনের শেষ দিনগুলো কষ্টের। এই কষ্ট সাধারণ মানুষের থেকে আরও বেশি। একজন সুস্থ মানুষের দায়িত্ব একজন অটিজমে আক্রান্ত মানুষের পালিয়েটিভ কেয়ার নিশ্চিত করা। কারণ সুস্থ মানুষের ভাবনার জায়গায় স্বচ্ছতা রয়েছে। এটা সুস্থ মানুষের মহত্ব নয়, বরং কর্তব্য।
লেখক: চিকিৎসক, কাউন্সেলর সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশ এবং সদস্যসচিব, প্যালিয়েটিভ কেয়ার সোসাইটি অব বাংলাদেশ।
আজ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। বছর ঘুরে ২রা এপ্রিল আসে, আবার চলে যায়। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদেরকে নিয়ে আমরা আলোচনা করি, কিন্তু একজন নিরাময় অযোগ্য ও জীবন সীমিত রোগে আক্রান্ত অটিস্টিক ব্যক্তির ব্যাপারে আমরা আসলে কতটুকু কাজ করি?
জীবনের শেষ দিনগুলোতে কেমন যত্ন পান একজন অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তি? যদি প্যালিয়েটিভ কেয়ার প্রয়োজন হয় তখন কিভাবে এই নিরাময় অযোগ্য জীবনসীমিত রোগে আক্রান্ত মানুষটির অটিজমকে অতিক্রম করে তাকে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক সেবা দেয়া যায় তা নিয়ে বাস্তবিক অর্থে ভাবা দরকার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতি ১০০ জন শিশুর মধ্যে ১জন শিশু অটিজমে আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বৈশ্বিক চালচিত্রে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১জন মানুষ অটিজম স্পেট্রাম ডিসঅর্ডারের মধ্যে পড়ছেন। আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়েট্রিক্স এর বরাত দিয়ে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৩৬ জনের মধ্যে ১ জন শিশু অটিজমে আক্রান্ত। আরো দুশ্চিন্তার কথা হলো, অটিজমের ব্যাপকতা ২০০০ সালের পর থেকে ১৭৮% বেড়ে গেছে। ছেলেদের আক্রান্ত হবার হার মেয়েদের থেকে চার গুণ বেশি। এদের মধ্যে প্রায় ৪০% কথা বলতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রে একজন স্বাভাবিক শিশু থেকে একজন অটিস্টিক শিশুর জন্য ৪.১ থেকে ৬.২ গুণ বেশি খরচ করতে হয়।
অটিজমে আক্রান্তদের প্যালিয়েটিভ কেয়ার
১. এ ধরনের ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা কঠিন। কিন্তু তারপরও মনে রাখতে হবে যে তাদেরও কিছুটা হলেও ভাবনার জায়গায় দক্ষতা রয়েছে। কাজেই তার জীবনের যত্নের ব্যাকরণ অন্তিম মুহূর্তে কেমন হবে, তা নিয়ে ভাবতে হবে। সাধারণত চিকিৎসক বা পরিবার এককভাবে সেই দায়িত্ব নেন। তবে শুধুমাত্র চিকিৎসক বা পরিবার এককভাবে সিদ্ধান্ত নিতে নৈতিকভাবে সক্ষম নন। আক্রান্ত ব্যক্তি মতামতও কিন্তু জরুরি। আমরা ভুলে যাই এই মানুষটিরও ইচ্ছে, অনিচ্ছে রয়েছে। ফলে তার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হলে তার ইতিবাচক মনোভাবকেও গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ দিনশেষে সেবা তাঁর জন্য।
২. অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তির যত্নে স্বাস্থ্যকর্মী এবং সমাজের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যাঁরা পরিবারকে সাহায্য করছেন তাঁদের অংশীদারিত্ব প্রয়োজন। কারণ পরিবার একটা পর্যায়ে যত্ন নিতে নিতে ক্লান্ত হয়ে যান। তখন আশপাশকে সহায়তার প্রয়োজন পড়ে।
৩. যাঁরা অটিজমের আক্রান্ত এবং ভাষাগত জায়গায় যোগাযোগ দক্ষতা কম, তাঁদের বেশি সময় দিয়ে কোন ধরনের যত্ন তাদের সব থেকে বেশি প্রয়োজন সেটা খুঁজে বের করা জরুরি।কী কী শারীরিক উপসর্গের কারণে জীবনের অন্তিম সমযয়ে তাঁদের কষ্ট হচ্ছে; সেটা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, কোষ্ঠকাঠিন্য নাকি শয্যাক্ষত সেটা খুঁজে দেখা জরুরি।
৪. একজন অটিজমে আক্রান্ত মানুষকে সাহায্য করতে গেলে মনে রাখতে হবে তার ভাবনার ধরন এবং আপনার ভাবনার ধরন এবং পরিকল্পনা ভিন্নতর হবে। তবে এটাই স্বাভাবিক। কাজেই নিজের ভাবনা তার ওপর চাপিয়ে দেবেন না। মনে রাখতে হবে আপনি যেভাবে পৃথিবীকে বুঝছেন তা থেকে অটিজমে আক্রান্ত মানুষটির অভিজ্ঞতায় পৃথিবী অন্যরকম। আপনার পৃথিবীকে তিনি চেনেন না, তাঁর পরিচিত পৃথিবীকে আপনি চেনেন না। কাজেই বুঝতে চেষ্টা করুন তাঁরা কিভাবে নতুন তথ্য নিজেদের মধ্যে গ্রহণ করেন। এখানে সময় লাগে। বিরক্ত হওয়া যাবেনা। সেই সাথে এটাও বোঝার চেষ্টা করুন যে তাদের জীবনে কোন জিনিসটা সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সেই মানুষটি যেভাবে বুঝতে পারেন সেই ভাবে তাকে তথ্যগুলো দিন। তিনি যেভাবে মতামত দিতে পারেন, সেভাবেই তাকে মতামত দিতে আগ্রহী করে তোলা আপনার কর্তব্য। কোন কোন তথ্যগুলো তাকে আগে দেবেন এবং কোন কোন তথ্যগুলো তাকে পরে দেবেন সেটা নিয়েও ভেবে দেখা জরুরি।
৫. জীবনের শেষ দিনগুলোতে একজন অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তি কিছুটা হলেও যেন কোন কোন অভিজ্ঞতা গুলো তাদের জীবনকে অর্থবহ করে তুলেছে সেগুলোর প্রতিফলন করতে পারে সেজন্য আপনার সহায়তা প্রয়োজন। হতে পারে আপনি তাকে ছবি বা ভিডিও দেখালেন, কিংবা কোনো গান শোনালেন সেই স্মৃতির সাথে সম্পৃক্ত। কখনো কোনো কোনো গন্ধ বা স্পর্শ অনুভূতি পুরনো সেই দিনের কথা তাকে হয়তো মনে করিয়ে দেয় যেটা তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
একজন নিরাময় অযোগ্য ও জীবন সীমিত রোগে ভুগতে থাকা অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য জীবনের শেষ দিনগুলো কষ্টের। এই কষ্ট সাধারণ মানুষের থেকে আরও বেশি। একজন সুস্থ মানুষের দায়িত্ব একজন অটিজমে আক্রান্ত মানুষের পালিয়েটিভ কেয়ার নিশ্চিত করা। কারণ সুস্থ মানুষের ভাবনার জায়গায় স্বচ্ছতা রয়েছে। এটা সুস্থ মানুষের মহত্ব নয়, বরং কর্তব্য।
লেখক: চিকিৎসক, কাউন্সেলর সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশ এবং সদস্যসচিব, প্যালিয়েটিভ কেয়ার সোসাইটি অব বাংলাদেশ।
সুস্থভাবে জীবনযাপন করার জন্য দেহের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে হয়। সাধারণত পুষ্টির কথা ভাবলে মনে করি সবটুকুই আমার খাদ্য থেকেই অর্জন করি। তবে এই ধারণাটি ভুল বললেন বিজ্ঞানীরা। নতুন গবেষণায় বলা যায়, মানুষ কিছু পুষ্টি বায়ু থেকেও শোষণ করতে পারে!
৩ দিন আগেবিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন। হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনির ক্ষতি এবং দৃষ্টি শক্তিসহ বেশ কিছু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার প্রধান ঝুঁকির কারণ এটি। এই ধরনের ঝুঁকি কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ
৪ দিন আগেডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১ হাজার ৩৮৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে আজ রোববার পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলো ৭৯ হাজার ৯৮৪ জন। মারা গেছে আরও আটজন।
৫ দিন আগেএমন সময়ে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো, যখন ইংল্যান্ডে একটি লক্ষ্যভিত্তিক ফুসফুস স্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে সম্ভাব্য ৪০ শতাংশ ব্যক্তিকে স্ক্রিনিং করা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সবাইকে এর আওতায় আনা।
৬ দিন আগে