অনলাইন ডেস্ক
মহামারি করোনার প্রভাবে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর আশঙ্কাজনক প্রভাব ফেলেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের প্রতি চারজন তরুণের একজন উচ্চতর বিষণ্নতা এবং পাঁচজনের একজন উচ্চতর উদ্বেগের লক্ষণে ভুগছে। মেডিকেল জার্নাল জ্যামা পেডিয়াট্রিক্স-এ প্রকাশিত ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণার বরাত দিয়ে সায়েন্স ডেইলির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু ও তরুণদের নিয়ে করা ২৯টি গবেষণার তথ্যের মেটা-বিশ্লেষণ করে এ ফল পেয়েছেন ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। যার মধ্যে পূর্ব এশিয়া থেকে ১৬ টি, ইউরোপ থেকে চারটি, উত্তর আমেরিকা থেকে ছয়টি, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা থেকে দুটি এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে একটি গবেষণা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে বিশ্বের ৮০ হাজার ৮৭৯ জন তরুণের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য উঠে এসেছে। এ বিষদ গবেষণা বলছে, মহামারি শুরুর প্রথম দিকের তুলনায় শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বিষণ্নতা এবং উদ্বেগের লক্ষণ দ্বিগুণ হয়েছে। বিশেষভাবে কিশোরী এবং মেয়েরা সর্বোচ্চ স্তরের বিষণ্নতা এবং উদ্বেগের সম্মুখীন হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির পোস্ট ডক্টরাল সহযোগী, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট এবং গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক ড. নিকোল রেসিন বলেন, সময় গড়ানোর সঙ্গে এই লক্ষণগুলি আরও জটিল হয়ে উঠছে; যা আশঙ্কাজনক।
গবেষণাপত্রের সহ-লেখক, ইউক্যালগারি ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট এবং কানাডা রিসার্চ চেয়ার অব চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট ড. শেরি মদিগান বলেন, সীমাবদ্ধতার সঙ্গে বিষণ্নতা এবং উদ্বেগের সম্পর্ক রয়েছে। বিধিনিষেধ আরোপ করা হলে এসব সমস্যার হার বেড়ে যায়। সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন, বন্ধুদের থেকে দূরে থাকা, স্কুলের রুটিন এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়া কমে যাওয়াটা বাচ্চাদের জন্য সত্যিই কঠিন প্রমাণিত হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
করোনা শুরুর পর থেকে প্রায় দেড় বছর তরুণদের জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য কঠিন সময় কাটছে। এর পরে কিছু কিছু দেশে তরুণেরা ক্লাসে ফিরলেও অভ্যস্ত জীবন থেকে বেড়িয়ে আসাটা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে রেসিন বলেন, 'একবার আপনি কৈশোরে প্রবেশ করলে আপনি আপনার পরিবারের সদস্যদের থেকে আলাদা হতে শুরু করেন এবং আপনার সমবয়সী-বন্ধু আপনার সামাজিক সহায়তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে উঠতে পারে। করোনায় সেই সহায়তা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছিল, এবং কিছু ক্ষেত্রে মহামারি চলাকালীন সম্পূর্ণ অনুপস্থিত ছিল।
বিশেষ করে বয়স্ক কিশোররা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট গুলি যেমন ক্লাস, খেলাধুলার ইভেন্ট এবং বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম থেকে দূরে ছিল। বুঝতে-না বুঝতেই অনেকের স্নাতক হয়ে গেছে, তাঁরা কখনই তাঁদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ফেরার পথে শিক্ষক বা বন্ধুদের বিদায় জানাতে পারবে না। এভাবে অনেকটা বন্ধুহীন নতুন কিছুর দিকে এগিয়ে যাওয়ার সমতুল্য এবং দুঃখজনক বলে মনে করেন রেসিন।
এরই মধ্যে কিছু দেশে টিকাকরণ শেষের দিকে, বিদায় নিতে শুরু করেছে করোনা মহামারি। এই সুযোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও খুলতে শুরু করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে—আমাদের শিশু এবং কিশোর-কিশোরীরা কীভাবে চলবে? তাদের কি এই মানসিক সমস্যাগুলো বয়ে বেড়াতে হবে, নাকি মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে? কেউ কেউ চাপমুক্ত হলেও কিছু তরুণের মাঝেও যদি বিষণ্নতা এবং উদ্বেগের বোঝা থেকে যায় তাঁদের ভবিষ্যৎ কেমন হবে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানা নেই খোদ গবেষকদেরও। তবে পথটি যে বড় চ্যালেঞ্জিং হবে সে কথা বলাই যায়।
তাই যুবকদের মানসিক স্বাস্থ্যে ক্রমবর্ধমান এসব লক্ষণকে অগ্রাহ্য বা অবমূল্যায়ন করা উচিত নয় বলে সতর্ক করেছেন গবেষক ম্যাডিগান। শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে পরামর্শ তাঁর।
ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ গবেষণায় সুপারিশ করা হয়েছে, এখন শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা দেওয়া উচিত। মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাবকে কমাতে, তরুণদের দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ থেকে বাঁচাতে এখন পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনাকে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য মহামারি শেষ হওয়া পর্যন্ত নয়, অবিলম্বে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:
মহামারি করোনার প্রভাবে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর আশঙ্কাজনক প্রভাব ফেলেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের প্রতি চারজন তরুণের একজন উচ্চতর বিষণ্নতা এবং পাঁচজনের একজন উচ্চতর উদ্বেগের লক্ষণে ভুগছে। মেডিকেল জার্নাল জ্যামা পেডিয়াট্রিক্স-এ প্রকাশিত ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণার বরাত দিয়ে সায়েন্স ডেইলির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু ও তরুণদের নিয়ে করা ২৯টি গবেষণার তথ্যের মেটা-বিশ্লেষণ করে এ ফল পেয়েছেন ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। যার মধ্যে পূর্ব এশিয়া থেকে ১৬ টি, ইউরোপ থেকে চারটি, উত্তর আমেরিকা থেকে ছয়টি, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা থেকে দুটি এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে একটি গবেষণা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে বিশ্বের ৮০ হাজার ৮৭৯ জন তরুণের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য উঠে এসেছে। এ বিষদ গবেষণা বলছে, মহামারি শুরুর প্রথম দিকের তুলনায় শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বিষণ্নতা এবং উদ্বেগের লক্ষণ দ্বিগুণ হয়েছে। বিশেষভাবে কিশোরী এবং মেয়েরা সর্বোচ্চ স্তরের বিষণ্নতা এবং উদ্বেগের সম্মুখীন হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির পোস্ট ডক্টরাল সহযোগী, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট এবং গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক ড. নিকোল রেসিন বলেন, সময় গড়ানোর সঙ্গে এই লক্ষণগুলি আরও জটিল হয়ে উঠছে; যা আশঙ্কাজনক।
গবেষণাপত্রের সহ-লেখক, ইউক্যালগারি ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট এবং কানাডা রিসার্চ চেয়ার অব চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট ড. শেরি মদিগান বলেন, সীমাবদ্ধতার সঙ্গে বিষণ্নতা এবং উদ্বেগের সম্পর্ক রয়েছে। বিধিনিষেধ আরোপ করা হলে এসব সমস্যার হার বেড়ে যায়। সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন, বন্ধুদের থেকে দূরে থাকা, স্কুলের রুটিন এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়া কমে যাওয়াটা বাচ্চাদের জন্য সত্যিই কঠিন প্রমাণিত হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
করোনা শুরুর পর থেকে প্রায় দেড় বছর তরুণদের জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য কঠিন সময় কাটছে। এর পরে কিছু কিছু দেশে তরুণেরা ক্লাসে ফিরলেও অভ্যস্ত জীবন থেকে বেড়িয়ে আসাটা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে রেসিন বলেন, 'একবার আপনি কৈশোরে প্রবেশ করলে আপনি আপনার পরিবারের সদস্যদের থেকে আলাদা হতে শুরু করেন এবং আপনার সমবয়সী-বন্ধু আপনার সামাজিক সহায়তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে উঠতে পারে। করোনায় সেই সহায়তা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছিল, এবং কিছু ক্ষেত্রে মহামারি চলাকালীন সম্পূর্ণ অনুপস্থিত ছিল।
বিশেষ করে বয়স্ক কিশোররা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট গুলি যেমন ক্লাস, খেলাধুলার ইভেন্ট এবং বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম থেকে দূরে ছিল। বুঝতে-না বুঝতেই অনেকের স্নাতক হয়ে গেছে, তাঁরা কখনই তাঁদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ফেরার পথে শিক্ষক বা বন্ধুদের বিদায় জানাতে পারবে না। এভাবে অনেকটা বন্ধুহীন নতুন কিছুর দিকে এগিয়ে যাওয়ার সমতুল্য এবং দুঃখজনক বলে মনে করেন রেসিন।
এরই মধ্যে কিছু দেশে টিকাকরণ শেষের দিকে, বিদায় নিতে শুরু করেছে করোনা মহামারি। এই সুযোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও খুলতে শুরু করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে—আমাদের শিশু এবং কিশোর-কিশোরীরা কীভাবে চলবে? তাদের কি এই মানসিক সমস্যাগুলো বয়ে বেড়াতে হবে, নাকি মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে? কেউ কেউ চাপমুক্ত হলেও কিছু তরুণের মাঝেও যদি বিষণ্নতা এবং উদ্বেগের বোঝা থেকে যায় তাঁদের ভবিষ্যৎ কেমন হবে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানা নেই খোদ গবেষকদেরও। তবে পথটি যে বড় চ্যালেঞ্জিং হবে সে কথা বলাই যায়।
তাই যুবকদের মানসিক স্বাস্থ্যে ক্রমবর্ধমান এসব লক্ষণকে অগ্রাহ্য বা অবমূল্যায়ন করা উচিত নয় বলে সতর্ক করেছেন গবেষক ম্যাডিগান। শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে পরামর্শ তাঁর।
ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ গবেষণায় সুপারিশ করা হয়েছে, এখন শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা দেওয়া উচিত। মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাবকে কমাতে, তরুণদের দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ থেকে বাঁচাতে এখন পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনাকে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য মহামারি শেষ হওয়া পর্যন্ত নয়, অবিলম্বে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:
সুস্থভাবে জীবনযাপন করার জন্য দেহের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে হয়। সাধারণত পুষ্টির কথা ভাবলে মনে করি সবটুকুই আমার খাদ্য থেকেই অর্জন করি। তবে এই ধারণাটি ভুল বললেন বিজ্ঞানীরা। নতুন গবেষণায় বলা যায়, মানুষ কিছু পুষ্টি বায়ু থেকেও শোষণ করতে পারে!
৩ দিন আগেবিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন। হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনির ক্ষতি এবং দৃষ্টি শক্তিসহ বেশ কিছু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার প্রধান ঝুঁকির কারণ এটি। এই ধরনের ঝুঁকি কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ
৪ দিন আগেডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১ হাজার ৩৮৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে আজ রোববার পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলো ৭৯ হাজার ৯৮৪ জন। মারা গেছে আরও আটজন।
৫ দিন আগেএমন সময়ে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো, যখন ইংল্যান্ডে একটি লক্ষ্যভিত্তিক ফুসফুস স্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে সম্ভাব্য ৪০ শতাংশ ব্যক্তিকে স্ক্রিনিং করা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সবাইকে এর আওতায় আনা।
৬ দিন আগে