আঙুল ফোটালে শব্দ হয় কেন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২৪, ২০: ১৭

অনেকেরই আঙুল ফোটানোর অভ্যাস আছে। আঙুল ফোটানোর সময় অনেকের ক্ষেত্রে বেশ জোরে শব্দ হয়। এই আওয়াজের প্রতি অনেকে আকৃষ্ট হয়ে  বারবার এই কাজ করে থাকেন; বিশেষ করে কম বয়সী ছেলে–মেয়েরা। আঙুল ছাড়াও কনুই, হাঁটু ও গোড়ালি ফুটলেও এমন শব্দ হয়। 

তবে আঙুল ফোটানো সম্পর্কিত দুটি প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মনে ঘুরপাক খায়। একটি হলো—‘আঙুল ফোটালে শব্দ হয় কেন’ ও ‘আঙুল ফোটালে অস্থির ক্ষতজনিত রোগ আর্থরাইটিস বা বাত হয় কিনা!’ 

প্রথমে আঙুল ফোটালে এই ধরনের শব্দ কেন হয় তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা জানা যাক। আঙুলের অস্থিসন্ধি বা গাঁট ‘সাইনোভিয়াল ফ্লুইড’ নামে ঘন ও স্বচ্ছ তরল দিয়ে পূর্ণ থাকে। এই তরল লুব্রিকেন্ট বা পিচ্ছিলকারক হিসেবে কাজ করে। আঙুল ফোটানোর সময় হাড়ের সংযোগস্থলের ফাঁক বেড়ে যায় বা শূন্যস্থান তৈরি হয়। এই শূন্যস্থান পূরণে তখন সাইনোভিয়াল ফ্লুইডে গ্যাসের (অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইড) বুদ্‌বুদ তৈরি হয়। আর বুদবুদগুলো ফাটলেই শব্দ হয়। 

এখন দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর জানা যাক: আঙুল ফোটানোর সঙ্গে আর্থরাইটিস বা বাতের সম্পর্ক গবেষণায় খুঁজে পাওয়া যায় না। আর্থরাইটিস হওয়ার ঝুঁকির প্রধান কারণগুলো হলো—পারিবারিক ইতিহাস, বয়স, লিঙ্গ, স্থূলতা, হাড়ে আঘাত পাওয়া। এ ছাড়া ধূমপানের কারণেও আর্থরাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। 

যারা আর্থরাইটিস আক্রান্ত তাঁদের হাড়ের সংযোগস্থলে মাঝে মাঝে শব্দ হতে পারে। এটি মূলত তাঁদের কার্টিলেজ (হাড়ের পাতলা স্তর) ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে হয়। তবে এই ধরনের শব্দই আর্থরাইটিসের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ নয়।

বাতের সঙ্গে আঙুল ফোটানোর সম্পর্ক জানার জন্য দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসক ডোনাল্ড আনগার। তিনি প্রায় ৫০ বছর ধরে প্রতিদিন বাম হাতের আঙুলগুলো দুইবার ফোটাতেন এবং অপর হাতের আঙুলগুলো ফোটাতেন না। এরপরও তাঁর দুই হাতের আঙুলে কোনো পরিবর্তন দেখতে পাননি। 

তবে আঙুল ফোটানো ভালো অভ্যাস নয়। আঙুল ফোটালে শরীরের তেমন কোনো ক্ষতি হয় না। তবে অতিরিক্ত আঙুল ফোটালে অতিরিক্ত চাপের কারণে হাড়ের সমস্যা হতে পারে বা হাড়ের স্থানচ্যুতি ঘটতে পারে। 

আঙুল ফোটালে লিগামেন্টের ক্ষতি হওয়ার মতো ঘটনাও কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়। তবে এটি বিরল।

এ ছাড়া ঘাড় ফোটানোও পরিহার করা উচিত। মানবদেহের এই অংশে গুরুত্বপূর্ণ রক্তনালি রয়েছে। ঘাড় ফোটালে ঘাড়ে স্থায়ী ব্যথা, ঘাড়ের রগে বড় ধরনের সমস্যা, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। 

তথ্যসূত্র: বিবিসি সায়েন্স ফোকাস ও বায়োকেমিকস ইন দ্য ওয়ার্ল্ড

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত